মো: খলিলুর রহমান, বাউফল (পটুয়াখালী ) : পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের সুলতানাবাদ ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মাও.মোশারেফ হোসেনের বিরুদ্ধে গোপনে ও বিধিবর্হিভূতভাবে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের অনুমতিক্রমে রেজিষ্টার (রুটিন দায়িত্ব) প্রফেসর মোহাম্মদ মাহবুব হাসান স্বাক্ষরিত এক চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। চিঠিতে বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে এ বিষয়ে তদন্ত পূর্বক মতামতসহ প্রতিবেদন পাঠানোর কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর আগে গত ২রা জুন মাও. মো. শাহাবুদ্দিন আল মামুন নামে ওই মাদ্রাসার এক অভিভাবক সদস্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে ওই অভিযোগ দাখিল করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিধি মোতাবেক নতুন কমিটি গঠনের জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কর্তৃক অনুমোদিত নির্বাচনী তফসিল, ভোটার তালিকা নোটিশ বোর্ডে টাঙিয়ে শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে অভিভাবকদের জানানোর কথা থাকলেও তা না করে সব কিছু গোপন করে ও বিধিবর্হিভূতভাবে নিজের পছন্দের লোকজন নিয়ে পকেট কমিটি গঠন করেন মাদরাসার সুপার মাও. মোশারেফ হোসেন। যার অনুমোদনের জন্য মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পরিচালাকের কাছে পাঠানো হয়েছে।
ওই মাদ্রাসার স্থায়ী দাতা সদস্য মো. আলতাফ হোসেন বলেন,‘আমি স্থায়ী দাতা সদস্য ও ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি। নতুন কমিটি গঠনের বিষয়ে সুপার আমাকে কিছুই জানায়নি। তিনি গোপনে একটি পকেট কমিটি গঠন করেছেন। বিধি অনুযায়ী কোন ব্যক্তি দুইটির অধিক বেসরকারি মাদ্রাসায় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হতে পারবেন না। তার পরেও বিধি ভেঙে তাকে সভাপতি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে এ.কে.এম জহিরুল হক দুইটি মাদ্রাসার সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। মাদ্রাসা দুইটি হলো-বাউফল উপজেলার ধানদী কামিল মাদরাসা ও নারায়নগঞ্জ সদর উপজেলার ভূইঘর দারুচ্ছুন্নাহ ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা। এমন অবৈধ কমিটি অনুমোদনের জন্য শিক্ষা বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। আমিসহ একাধিক সদস্য পৃথকভাবে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও রেজিষ্ট্রারের কাছে আবেদন করেছি, যাতে ওই অবৈধ কমিটি অনুমোদন না দেয়া হয়।
মো. আ. রউফ নামে এক অভিভাবক বলেন,‘ আমার মেয়ে ওই মাদ্রাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। সুপার মোশারেফ আমাকে সভাপতি এ.কে.এম জহিরুল হক সাহেবের বরাত দিয়ে মাদারাসায় খবর দিয়ে নেন। তখন তিনি ২/৩টা কাগজে আমার স্বাক্ষর নেন। স্বাক্ষর কেনো নেয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি (সুপার) বলেন,‘ সভাপতি আপনাকে সবকিছু বলবে।’ পরে জানতে পারলাম গোপনে পকেট কমিটি গঠন করার জন্য আমাকে অভিভাবক সদস্য করা হয়েছে। আমি অবৈধ কমিটির সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি পেতে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছি।
অভিযোগকারী মাও.শাহাবুদ্দিন বলেন, ২০১৪-১৫ সালের অনির্বাচিত কমিটির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা চলমান থাকার পরেও গোপনে করা পকেট কমিটি দিয়েই মাদারাসা পরিচালনা করে আসছেন সুপার। মাদ্রাসায় জবাবদিহিতা না থাকায় সুপার তার মনগড়াভাবে মাদ্রাসা পরিচালনা করছেন।
সুলাতানাবদ ইসলামিয়া মাদ্রাসার সুপার মো. মোসারেফ হোসেন বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার পরে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ ব্যাপারে বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বশির গাজী বলেন, আজ (সোমবার, ১৯ই আগষ্ট) তদন্তের জন্য মাদ্রাসায় যাব। তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, মোবাইল : ০১৬৪৩৫৬৫০৮৭, ০১৭১১৪৪৭৫২২, অফিস : ৪/এ, প্রধান সড়ক, আটি মডেল সোসাইটি, আটি, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১২, ইমেইল : somoyerbuletin@gmail.com
© All rights reserved © SomoyerBulletin