কাইয়ুম বাদশাহ
মধ্যনগর (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার ২নং দক্ষিণ বংশীকুন্ডা ইউনিয়নের রংচী গ্রামের ঐতিহাসিক হিজল বাগান আজ বিলীন হওয়ার পথে। প্রায় সাড়ে তিন শতাব্দী আগে টাঙ্গুয়ার হাওরের পশ্চিম তীরে গড়ে ওঠা এই হিজল বন একসময় ছিল গ্রামটির প্রাণ ও প্রকৃতির অবলম্বন।
গ্রামবাসীর ভাষ্যমতে, হিজল গাছ শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই নয়, বর্ষাকালে বন্যার পানির ধাক্কা সামলাত, শুকনো মৌসুমে জমিনের খরা দূর করত, এমনকি এর বাকল ও ফল ঔষধি গুণেও ব্যবহৃত হতো। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অবহেলা, নির্বিচারে গাছ কাটা এবং সঠিক সংরক্ষণ না থাকায় বাগানটি আজ মারাত্মকভাবে বিপন্ন।
গ্রামবাসীরা জানান, একসময় রংচীর হিজল বাগান ছিল বিশাল—অগণিত গাছ দিয়ে আচ্ছাদিত। এখন কেবল অল্প ক’টি গাছই অবশিষ্ট। ২নং বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ দেলোয়ার হোসেন (ভারপ্রাপ্ত) বলেন, “এটি আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ। গ্রামবাসীকে সচেতন হতে হবে, আর প্রশাসনের উচিত এটিকে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নেওয়া।”
পরিবেশবিদরা হিজল বাগান রক্ষায় চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণ, গাছের গোড়া মাটি দিয়ে বাঁধাই, বনাঞ্চলে চাষাবাদ বন্ধ এবং নতুন হিজল চারা রোপণের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করছেন। পাশাপাশি এই বনকে পর্যটন সম্ভাবনা হিসেবে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
স্থানীয় পর্যটনপ্রেমীরা মনে করছেন, রংচী হিজল বাগানে একটি ওয়াচ টাওয়ার নির্মাণ করলে দেশি-বিদেশি ভ্রমণপিপাসুদের আকর্ষণ আরও বাড়বে। হাওরের পানিতে দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যাবে অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য, যা গ্রামীণ অর্থনীতিতেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও “রংচী হিজল বাগান” নিয়ে আগ্রহ বাড়ছে। অনেকেই এটিকে বর্ষার জলে ভাসমান এক “স্বপ্নপুরী” বলে অভিহিত করছেন।
তবে প্রশ্ন রয়ে গেছে—অবহেলায় হারিয়ে যেতে বসা এই ঐতিহ্যবাহী রংচী হিজল বাগান কি নতুন করে প্রাণ ফিরে পাবে?
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, মোবাইল : ০১৬৪৩৫৬৫০৮৭, ০১৭১১৪৪৭৫২২, অফিস : ৪/এ, প্রধান সড়ক, আটি মডেল সোসাইটি, আটি, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১২, ইমেইল : somoyerbuletin@gmail.com
© All rights reserved © SomoyerBulletin