প্রিন্ট এর তারিখঃ নভেম্বর ১৩, ২০২৫, ২:২০ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ নভেম্বর ১২, ২০২৫, ৪:৩৪ পি.এম

মোঃশামীম আহমদ : সুনামগঞ্জ-১ (ধর্মপাশা–মধ্যনগর–জামালগঞ্জ–তাহিরপুর) আসনে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মনোনীত এমপি পদপ্রার্থী আনিসুল হককে বরণ করে নেন ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের শত শত নেতাকর্মী।
বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার প্রধান প্রধান সড়কজুড়ে চলে বর্ণাঢ্য মোটরশোভাযাত্রা ও বরণ উৎসব। সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা মিছিল, মোটরসাইকেল ও পিকআপযোগে এসে জড়ো হন উপজেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে। চারপাশে উড়ছে দলীয় পতাকা, বাজছে স্লোগানের ঢেউ— “তারেক রহমানের সৈনিক এক হও, ধানের শীষের জয় হোক।”
স্থানীয় হাওরপাড়ের গ্রামগুলো থেকেও নানা বয়সী কর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে যোগ দেন শোভাযাত্রায়। উপজেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাদের নেতৃত্বে বর্ণাঢ্য মোটরশোভাযাত্রাটি উপজেলা সদর থেকে শুরু হয়ে মধ্যনগর পর্যন্ত গিয়ে পুনরায় ধর্মপাশা প্রধান সড়ক হয়ে মধ্যবাজারে গিয়ে শেষ হয়।
পথে পথে মানুষ ফুল ছিটিয়ে ও স্লোগানে মুখর করে তোলে আনিসুল হককে বরণের এ উৎসব। উপজেলা বিএনপির নেতারা ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে বরণ করেন। মুহূর্তেই এলাকা উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। তরুণদের হাতে দেখা যায় প্ল্যাকার্ড— “হাওরের গর্ব আনিসুল হক”, “পরিবর্তনের হাওয়া বইছে।”
বরণোত্তর সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জনাব আনিসুল হক বলেন, “আমি হাওরবাসীর প্রিয়ভূমি থেকে এসেছি, আপনাদের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হতে চাই। ধানের শীষ কেবল একটি প্রতীক নয়— এটি জনগণের অধিকার, এটি হাওরবাসীর প্রাণের দাবি। আমি রাজনীতি করি জনগণের জন্য, ক্ষমতার জন্য নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আপনাদের ভালোবাসাই আমার শক্তি। বিএনপি জনগণের দল— এই দল কখনও আপোষ করে না গণতন্ত্র ও ন্যায়ের প্রশ্নে। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, হাওরের প্রতিটি কণ্ঠের প্রতিনিধিত্ব করব সংসদে।”
বক্তব্য শেষে আনিসুল হককে ঘিরে নেতাকর্মীরা স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠেন—
“দুর্দিনের আনিস ভাই, আমরা তোমায় ভুলি নাই”,
“এই সেই মানি না, আনিস ছাড়া বুঝি না”,
“ধান ছাড়া বুঝি না”,
“আনিস তুমি আলো, ঘরে ঘরে জ্বালো”—
এমন অসংখ্য স্লোগানে চারপাশ প্রকম্পিত হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক, যুগ্ম আহ্বায়কসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা। পাশাপাশি যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের হাজারো কর্মী অংশ নেন।
নেতাকর্মীদের অনেকে বলেন, আনিসুল হক শুধু দলের প্রার্থী নন, তিনি হাওরাঞ্চলের মানুষের একান্ত আত্মীয় ও আশার প্রতীক। একজন প্রবীণ নেতা বলেন, “এই জনপদে আমরা বহুদিন পর এমন ঐক্য দেখছি। আনিসুল হক মানুষকে একত্র করেছেন, দলকে নতুন উদ্যমে জাগিয়ে তুলেছেন।”
দিনব্যাপী এ আয়োজনকে ঘিরে ধর্মপাশা উপজেলা পরিণত হয় উৎসবমুখর জনপদে। রাস্তায় রাস্তায় মানুষের ভিড়, শিশু-কিশোরদের কৌতূহল, গ্রাম থেকে আগত কৃষক-শ্রমিকের উচ্ছ্বাস— যেন নির্বাচনী উৎসবের আগাম বার্তা।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আনিসুল হকের এ আগমন বিএনপির মাঠপর্যায়ে নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছে। দীর্ঘদিন পর ধর্মপাশায় বিএনপির এমন ঐক্যবদ্ধ প্রদর্শন স্থানীয় রাজনীতিতে ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।
দিনশেষে সূর্যাস্তের আলোয় যখন শোভাযাত্রা শেষ হয়, তখনও কর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন— “আমরা হাওরবাসী, আনিসুল হকের পাশে আছি।”