ডেস্ক রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সহায়তা করতে চীনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
চীনে প্রথম দিনের সফরের ওপর আয়োজিত এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে তাঁকে উদ্ধৃত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন ‘রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে সহায়তা করুন।’
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান ওয়াং হুনিংয়ের নেতৃত্বে চীনা পার্টির একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শাখা চীনা পিপলস পলিটিক্যাল কনসালটেটিভ কনফারেন্স (সিপিপিসিসি)-এর উচ্চ-পর্যায়ের একটি কমিটির আজ সকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর অবস্থানস্থলে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই সহায়তা কামনা করেন।
বৈঠকে দুদেশের বিভিন্ন আঞ্চলিক ও দ্বিপাক্ষিক বিষয়-যার মধ্যে রয়েছে রোহিঙ্গা, বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য ব্যবধান কমানো, অর্থপূর্ণভাবে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর উদযাপন, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়ানোর ব্যবস্থা এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি করার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাড়ে ছয় বছর ধরে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এবং তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের কোনো উদ্যোগ এখনো নেওয়া হয়নি।
ড. হাছান বলেন, বৈঠকে এই ইস্যুটি সবচেয়ে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করা হয়।
সিপিপিসিসি চেয়ারম্যান বলেন, তারা বিষয়টি নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে এই ব্যাপারে সহায়ক ভূমিকা পালন করবেন।
তিনি বলেন, আমরা মিয়ানমারদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু করার জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নেব।
ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব মো. নাঈমুল ইসলাম খান এবং বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস)-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চীন থেকে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানী করেছে অথচ রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা খুবই কম।
তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চীনকে বাংলাদেশ থেকে আমদানী বাড়াতে হবে।
তিনি বলেন, চীন বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, চামড়াজাত পণ্য, পাটজাত পণ্য, শাকসবজি ও আম আমদানী করতে পারে।
অন্যদিকে সিপিপিসিসি নেতারা বলেছেন, তারা বাংলাদেশ থেকে মানসম্পন্ন পণ্য আমদানীর ব্যবস্থা নেবেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, তারা দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্কের বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এবং সম্পর্ক আরও বাড়ানোর আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও চীনের সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রচেষ্টাতেই এটি গভীরে প্রোথিত হয়েছে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ১৯৫২ ও ১৯৫৭ সালে চীন সফর করেন এবং তিনি নিজে ষষ্ঠবারের মত চীন সফর করছেন।
পদ্মা সেতু, বঙ্গবন্ধু টানেল এবং বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র (বিআইসিসি) সহ বেশকিছু আইকনিক প্রকল্প নির্মাণে সহায়তা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী চীন সরকারকে ধন্যবাদ জানান।
বৈঠকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন তিনি তাঁর দল থেকে চীনে একটি উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠাবেন।
তিনি চীনা কমিউনিস্ট পার্টিকেও বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, মোবাইল : ০১৬৪৩৫৬৫০৮৭, ০১৭১১৪৪৭৫২২, অফিস : ৪/এ, প্রধান সড়ক, আটি মডেল সোসাইটি, আটি, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১২, ইমেইল : somoyerbuletin@gmail.com
© All rights reserved © SomoyerBulletin