আলী আহসান রবি
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেছেন, কর্মক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা ও সামাজিক সুরক্ষার মূল ভিত্তি হলো মাতৃত্ব সুরক্ষা। বাংলাদেশে মাতৃত্বকালীন সুবিধার আইনি কাঠামো থাকলেও বাস্তবায়নে বেশ কিছু ঘাটতি রয়েছে।
আজ ঢাকার একটি হোটেলে "বাংলাদেশে মাতৃত্বকালীন বীমা প্রকল্পের রোডম্যাপ তৈরি" শীর্ষক দুই দিনব্যাপী কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এই কর্মশালার উদ্দেশ্য হলো মাতৃত্বকালীন সুরক্ষা নিশ্চিত করতে আন্তর্জাতিক শ্রম মানদণ্ডের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ একটি রোডম্যাপ প্রণয়ন করা। শ্রম সচিব জানান, কর্মশালায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারদের সাথে আলোচনার মাধ্যমে মাতৃত্বকালীন বীমা চালুর জন্য একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হবে।
শ্রম সচিব আরও উল্লেখ করেন, মাতৃত্বকালীন বীমা প্রবর্তনের মাধ্যমে নারী শ্রমিকদের সুরক্ষা দেওয়া এবং কর্মক্ষেত্রে তাদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে। এই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা মাতৃত্বকালীন সুবিধার বর্তমান অবস্থা বিশ্লেষণ করে একটি টেকসই রোডম্যাপ প্রণয়নে মতামত দেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে আরএমজি ও অন্যান্য খাতে কর্মরত নারী শ্রমিকদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি ও স্বাস্থ্যসুবিধা নিশ্চিত করতে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কর্মশালার সুপারিশমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে মাতৃত্ব সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে বলে আশা প্রকাশ করা হয়।
এছাড়াও রাজধানীর অপর একটি হোটেলে বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন কর্তৃক আয়োজিত ‘‘শিশুশ্রম মুক্ত বাংলাদেশ গঠনে আমাদের অঙ্গিকার‘‘ বিষয়ক এক সংলাপে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শ্রম সচিব বলেন, শিশুশ্রম শুধু শিশুর ভবিষ্যৎই নষ্ট করে না, পুরো জাতির টেকসই উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে।" বাংলাদেশে এখনও ১৭ লক্ষ শিশু শ্রমিক রয়েছে, যাদের মধ্যে ১২ লক্ষ ঝুঁকিপূর্ণ কাজে নিয়োজিত—এটি জাতীয় অগ্রগতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।" বাংলাদেশ ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকস (বিবিএস)-২০২২-এর তথ্য উল্লেখ করে শ্রম সচিব বলেন, "যে বয়সে শিশুদের স্কুলে থাকার কথা, সেখানে তারা লেদ মেশিন, হোটেল কিংবা গ্যারেজে কাজ করছে। দারিদ্র্য ও অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবই এটির মূল কারণ।" তিনি সরকারি-বেসরকারি সমন্বয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার ওপর জোর দেন। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে শিশুশ্রম নিরসনে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এ বিষয়ে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, স্থানীয় প্রশাসন এবং সুশীল সমাজের সাথে সমন্বিত উদ্যোগ জোরদার করা হবে বলেও জানান তিনি। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-৮.৭ অর্জনে শিশুশ্রম নির্মূলকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে শ্রম সচিব বলেন, "শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের শিক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।"
কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, শ্রম বিভাগ, কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ শ্রম কল্যাণ ফাউন্ডেশন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি, নিয়োগকর্তা সংগঠন, শ্রমিক নেতা, গবেষক এবং আইএলও সহ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিবৃন্দ।
সম্পাদক : মোঃ কবির নেওয়াজ রাজ, মোবাইল : ০১৬৪৩৫৬৫০৮৭, ০১৭১১৪৪৭৫২২, অফিস : ৪/এ, প্রধান সড়ক, আটি মডেল সোসাইটি, আটি, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা-১৩১২, ইমেইল : somoyerbuletin@gmail.com
© All rights reserved © SomoyerBulletin