
হাফিজুর রহমান শিমুলঃ কালিগঞ্জের বিষ্ণুপরে প্রায়শ ঘটছে ছোট বড় চুরি ও ডাকাতির মত ঘটনা। আতঙ্কিত জনগন নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। দুবৃত্তরা রয়েছে ধরাছোয়ার বাইরে, দেখবে কে? ভুক্তভোগী, স্থানীয় বাসিন্দা, জনপ্রতিনিধি ও থানা পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামে সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের তাণ্ডবে চরম আতঙ্ক ও মানসিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে স্কুল শিক্ষক মহাদেব কর্মকারের পরিবার। শুক্রবার (৪ জুলাই) দিবাগত রাত আনুমানিক ৩টার দিকে ঘটে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ডাকাতির মত লোমহর্ষক ঘটনা। রাতে হঠাৎ একটি সংঘবদ্ধ ডাকাত দল বাড়ির লোহার গেট ও মূল দরজার তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে। ঘুমন্ত অবস্থায় পরিবারের সদস্যদের উপর লোহার রড ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর চালায় তারা। এতে গুরুতর রক্তাক্ত যখম হন মহাদেব কর্মকার, তার ভাই মধু কর্মকার ও স্ত্রীসহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা।ডাকাতরা পুরো ঘর তছনছ করে প্রায় ১০ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ২০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
স্থানীয়দের সহায়তায় আহতদের দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তারা শারীরিক ও মানসিকভাবে চরম অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের গাফিলতি ও এলাকায় পুলিশের টহলের অভাবেই ডাকাতরা এমন বেপরোয়া হামলা চালাতে পেরেছে। এলাকাবাসী দ্রুত দোষীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে। এই ইউনিয়নে ইতিপূর্বে চাঁচাই দোলন মোল্লার বাড়ি থেকে সাতলক্ষ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট, মুকুন্দপুর গ্রামের মেম্বর ফজলুর রহমান ময়না ও স্কুল শিক্ষক সাইফুল ইসলাম টগরের বাড়ি থেকে নগত সত্তর হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট, আব্দুল মজিদ সানার বাড়ি থেকে তিনলক্ষ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার লুট এবং একই ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডে জয়পত্রকাটি গ্রামের নুরুল হক সরদার বাড়িসহ অসংখ্য বাড়িতে, মৎস্যঘেরে ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চুরি, ডাকাতি করে চলেছে দুর্বৃত্তরা। অভিযোগ পেয়ে তৎক্ষনাত থানা পুলিশ সরেজমিনে এসে ভুক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বাস দিলেও বাস্তবতায় মালামাল উদ্ধার কিংবা আটক হয়নি কেউ। সে কারণেই প্রতিনিয়ত এহেন ঘটনা ঘটেই চলেছে। কালিগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) হারুন অর রশিদ মৃধা বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ, ডিবি পুলিশের টিম ঘটনাস্থলে যায়। তবে স্কুল শিক্ষক মহাদেবের বাড়ির ঘটনাসহ ইতিপূর্বের ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। আমরা ডাকাত দলকে শনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এদিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, ইউপি সদস্য, জনপ্রতিনিধি, গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এই নৃশংস ঘটনার পরপরই শ্রীরামপুর, কোমরপুর, মুকুন্দপুর গ্রামসহ অত্র ইউনিয়নের সর্বত্র চরম আতঙ্ক ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। স্থানীয়রা নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।