ঢাকা ০২:৪০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জুলাই শহিদদের প্রেরণা অনুসরণ করলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ সম্ভব : শ্রাবণ বিদ্রোহের প্রিমিয়ার শো-তে তথ্য উপদেষ্টা Logo আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের তিন সদস্য গ্রেফতার Logo সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড জনাব মোঃ আবদুর রহমান খান, এফসিএমএ কাস্টমস হাউস, ঢাকা পরিদর্শন করেন Logo মনিপুরে চাঁদাবাজির ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে মিরপুর মডেল থানা পুলিশ Logo মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে জোর দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা Logo শহীদ শাহারিয়ার খান আনাস সড়ক” এবং “শহীদ জুনায়েদ চত্বর” এর শুভ উদ্বোধন করেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা Logo সাভারে ১১টি অবৈধ বালু বিক্রেতার বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান: সাড়ে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা আদায় Logo ক্লাইমেট চেইঞ্জ ট্রাস্টকে শক্তিশালী করতে ১০বছর মেয়াদি স্ট্রাটেজিক প্ল্যান প্রণয়ন করা হবে। -পরিবেশ উপদেষ্টা Logo হেলিকপ্টার থেকে ছোঁড়া গুলিতে শহীদ সুমাইয়ার পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশীদ Logo কালিগঞ্জের বাঁশতলা বাজারে ৩১দফা বাস্তবায়নে লিফলেট বিতরণে কাজী আলাউদ্দিন

ফ্যাসিস্টের মায়া কাটেনি বগুড়া খাদ্য বিভাগের

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:২১:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৫৮০ বার পড়া হয়েছে

পতিত শেখ হাসিনাকে যেনো ভুলতেই পারছে না বগুড়া খাদ্য বিভাগ। এই নামেই লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার কৌশল এখনো সচল রেখেছে অসাধু কর্মকর্তারা। এতে সাধারণ মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শুরু হয়েছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। তবে এসবকে কোন পাত্তা না দিয়ে নিজেদের মতো করে সব কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। অর্থাৎ ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ-ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ এই শিরোনামে অসংখ্যা সিলযুক্ত বস্তা রয়েছে বগুড়ার সরকারি গোডাউনগুলোতে। এসব বস্তার চাল প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ডিলারের মাধ্যমে বিতরণের কাজ চলমান রয়েছে। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের ধারণা, শেখ হাসিনার চালই এখনো পাচ্ছে তারা। তবে এসবে কোনও মাথা ব্যথা নেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। কারণ কর্মকর্তারা বিভিন্ন স্থানে চলমান ওমএএস-এর ডিলার পয়েন্টগুলোও উদ্বোধনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এই সব বস্তা দিয়েই। আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ অর্থাৎ অল্প দিনেই অগাধ কালো টাকার মালিক বনে যাওয়ার এক ভয়ঙ্কর ফন্দি নাম খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী নামের এই লুটপাটেরপ প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় অসহায় নামের যাদেরকে রাখা হয়েছে তাদের বেশিরভাগ ছিল আওয়ামী দলীয় স্বাবলম্বী ব্যক্তিবর্গ।

এ কারণে কর্মসূচির বিতরণকৃত চাল দলীয় লোকজন কখনোই উঠায়নি। যার কারণে বস্তাবন্দী চাল সরকারী খাদ্যগুদাম থেকে ডিলার হয়ে ফরিয়া ব্যবাসয়ীদের মাধ্যমে আবারো চাতাল মালিক হয়ে সরকারী গোডাউনেই যায়। এতে করে বছরের পর বছর ঘুরতে ঘুরতে একই চাল। এতোটাই নষ্ট হয়ে যায় যে, দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করে। যার কারণে অসহায় গরিব মানুষগুলোও এই পঁচা চাল আর উঠায়না। তখন এই সিন্ডিকেটের কাছে এক ধরনের জিম্মি হয়ে নাম মাত্র কিছু টাকা নিতে বাধ্য হয় গরিব মানুষগুলো। আর এই সুযোগে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় সিন্ডিকেট। এমনকি যখন চাল উঠানোর মতো লোক পাওয়া যায়না তখন শুধু কাগজে কলমেই চাল উঠানো ও বিতরণ দেখানো হয়। কিন্তু বাস্তবে এসব চাল গোডাউনেই থেকে যায়। আর এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে জেলা-উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা, খাদ্য পরিদর্শক তথা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও চাতাল মালিকরা। মূলত এইসব বস্তা শেষ হয়ে গেলে লুটপাট করার কৌশলটাও নষ্ট হয়ে যাবে। যার কারণে ঘুরেফিরে এই বস্তাই ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন তথ্যই উঠে আসে কয়েক দিনের অনুসন্ধানে।

এছাড়া চলতি বছর নতুন চাল কেনার নামেও শুধু বস্তা পরিবর্তন করে এসব হাতছাড়া চাল কেনার অভিযোগ রয়েছে এই দপ্তরের বিরুদ্ধে। অনেকেই বলেন, অর্ধেকের বেশি পুরাতন চাল নতুন বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আগামি দুই মাসের মধ্যেই এসব বস্তা শেষ হয়ে যাবে। তারা আরো বলেন, বিতরণের সময় আমরা বস্তার উপর শেখ হাসিনার নাম মুছে দিচ্ছি। কিন্তু সরেজমিনে কোন বস্তাতেই মুছে ফেলার চিহ্ন পাওয়া যায়নি। উপজেলা খাদ্য পরিদর্শকদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আমরা বস্তার লেখা মুছে দিচ্ছি সেই সাথে বিলি বিতরণের একটি সিল দিচ্ছি। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায় বিলি বিতরণের সিল একেবারেই অস্পষ্ট অর্থাৎ কিছুই বুঝা যায়না। এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, আগের বস্তাগুলো প্রায় শেষ। আগামী দেড় দুই মাসের মধ্যেই পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, আমরা কালি দিয়ে ওই লেখাগুলো মুছে দিচ্ছি। বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা আক্ষেপ করে বলেন, এখনো এইসব বস্তা আছে! আমি এখুনি খাদ্য কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলছি।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই শহিদদের প্রেরণা অনুসরণ করলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বিনির্মাণ সম্ভব : শ্রাবণ বিদ্রোহের প্রিমিয়ার শো-তে তথ্য উপদেষ্টা

ফ্যাসিস্টের মায়া কাটেনি বগুড়া খাদ্য বিভাগের

আপডেট সময় ১২:২১:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পতিত শেখ হাসিনাকে যেনো ভুলতেই পারছে না বগুড়া খাদ্য বিভাগ। এই নামেই লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার কৌশল এখনো সচল রেখেছে অসাধু কর্মকর্তারা। এতে সাধারণ মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শুরু হয়েছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। তবে এসবকে কোন পাত্তা না দিয়ে নিজেদের মতো করে সব কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। অর্থাৎ ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ-ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ এই শিরোনামে অসংখ্যা সিলযুক্ত বস্তা রয়েছে বগুড়ার সরকারি গোডাউনগুলোতে। এসব বস্তার চাল প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ডিলারের মাধ্যমে বিতরণের কাজ চলমান রয়েছে। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের ধারণা, শেখ হাসিনার চালই এখনো পাচ্ছে তারা। তবে এসবে কোনও মাথা ব্যথা নেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। কারণ কর্মকর্তারা বিভিন্ন স্থানে চলমান ওমএএস-এর ডিলার পয়েন্টগুলোও উদ্বোধনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এই সব বস্তা দিয়েই। আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ অর্থাৎ অল্প দিনেই অগাধ কালো টাকার মালিক বনে যাওয়ার এক ভয়ঙ্কর ফন্দি নাম খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী নামের এই লুটপাটেরপ প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় অসহায় নামের যাদেরকে রাখা হয়েছে তাদের বেশিরভাগ ছিল আওয়ামী দলীয় স্বাবলম্বী ব্যক্তিবর্গ।

এ কারণে কর্মসূচির বিতরণকৃত চাল দলীয় লোকজন কখনোই উঠায়নি। যার কারণে বস্তাবন্দী চাল সরকারী খাদ্যগুদাম থেকে ডিলার হয়ে ফরিয়া ব্যবাসয়ীদের মাধ্যমে আবারো চাতাল মালিক হয়ে সরকারী গোডাউনেই যায়। এতে করে বছরের পর বছর ঘুরতে ঘুরতে একই চাল। এতোটাই নষ্ট হয়ে যায় যে, দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করে। যার কারণে অসহায় গরিব মানুষগুলোও এই পঁচা চাল আর উঠায়না। তখন এই সিন্ডিকেটের কাছে এক ধরনের জিম্মি হয়ে নাম মাত্র কিছু টাকা নিতে বাধ্য হয় গরিব মানুষগুলো। আর এই সুযোগে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় সিন্ডিকেট। এমনকি যখন চাল উঠানোর মতো লোক পাওয়া যায়না তখন শুধু কাগজে কলমেই চাল উঠানো ও বিতরণ দেখানো হয়। কিন্তু বাস্তবে এসব চাল গোডাউনেই থেকে যায়। আর এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে জেলা-উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা, খাদ্য পরিদর্শক তথা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও চাতাল মালিকরা। মূলত এইসব বস্তা শেষ হয়ে গেলে লুটপাট করার কৌশলটাও নষ্ট হয়ে যাবে। যার কারণে ঘুরেফিরে এই বস্তাই ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন তথ্যই উঠে আসে কয়েক দিনের অনুসন্ধানে।

এছাড়া চলতি বছর নতুন চাল কেনার নামেও শুধু বস্তা পরিবর্তন করে এসব হাতছাড়া চাল কেনার অভিযোগ রয়েছে এই দপ্তরের বিরুদ্ধে। অনেকেই বলেন, অর্ধেকের বেশি পুরাতন চাল নতুন বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আগামি দুই মাসের মধ্যেই এসব বস্তা শেষ হয়ে যাবে। তারা আরো বলেন, বিতরণের সময় আমরা বস্তার উপর শেখ হাসিনার নাম মুছে দিচ্ছি। কিন্তু সরেজমিনে কোন বস্তাতেই মুছে ফেলার চিহ্ন পাওয়া যায়নি। উপজেলা খাদ্য পরিদর্শকদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আমরা বস্তার লেখা মুছে দিচ্ছি সেই সাথে বিলি বিতরণের একটি সিল দিচ্ছি। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায় বিলি বিতরণের সিল একেবারেই অস্পষ্ট অর্থাৎ কিছুই বুঝা যায়না। এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, আগের বস্তাগুলো প্রায় শেষ। আগামী দেড় দুই মাসের মধ্যেই পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, আমরা কালি দিয়ে ওই লেখাগুলো মুছে দিচ্ছি। বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা আক্ষেপ করে বলেন, এখনো এইসব বস্তা আছে! আমি এখুনি খাদ্য কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলছি।