ঢাকা ০৫:৪৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo শাকিল ও ফারজানা রুপাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে জাতিসংঘকে সরকারের ব্যাখ্যা Logo জুলাই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ রুপরেখা তৈরি হবে—-আহবায়ক নাহিদ ইসলাম Logo নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ‘তারুণ্যের উৎসব’ চলবে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত Logo ইমপ্লিমেন্টেশন অব এমপ্লয়মেন্ট ইনজুরি স্কিমস (ইআইএস) পাইলট’ শীর্ষক জাতীয় কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo বরাদ্দকৃত সাবেক সচিব, অবসরপ্রাপ্ত বিচারক ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের ১২ (বারো) টি ফ্ল্যাটের বরাদ্দ বাতিল Logo পানি আইন ২০১৩ এর আওতায় হাওরে ট্যুরিজম নিয়ন্ত্রণে শিগগিরই সুরক্ষা আদেশ চূড়ান্ত করা হবে—- উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান Logo লাফার্জ হোলসিম বাংলাদেশ লি. ও জিপিএইচ ইস্পাত কর্তৃক শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে ৩ কোটি ২৪ লক্ষ ২৪ হাজার ৬৫২ টাকার চেক হস্তান্তর Logo পিরোজপুর কাউখালী উপজেলা বিএনপি’র কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে Logo ২ অক্টোবর থেকে সচিবালয়ে নিষিদ্ধ হচ্ছে সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক সামগ্রী।- মন্ত্রিপরিষদ সচিব Logo বৃষ্টি উপেক্ষা করে মহিষখলা পশুর হাটে গরুর ক্রেতা-বিক্রেতা

ফ্যাসিস্টের মায়া কাটেনি বগুড়া খাদ্য বিভাগের

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:২১:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
  • ৫৮১ বার পড়া হয়েছে

পতিত শেখ হাসিনাকে যেনো ভুলতেই পারছে না বগুড়া খাদ্য বিভাগ। এই নামেই লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার কৌশল এখনো সচল রেখেছে অসাধু কর্মকর্তারা। এতে সাধারণ মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শুরু হয়েছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। তবে এসবকে কোন পাত্তা না দিয়ে নিজেদের মতো করে সব কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। অর্থাৎ ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ-ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ এই শিরোনামে অসংখ্যা সিলযুক্ত বস্তা রয়েছে বগুড়ার সরকারি গোডাউনগুলোতে। এসব বস্তার চাল প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ডিলারের মাধ্যমে বিতরণের কাজ চলমান রয়েছে। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের ধারণা, শেখ হাসিনার চালই এখনো পাচ্ছে তারা। তবে এসবে কোনও মাথা ব্যথা নেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। কারণ কর্মকর্তারা বিভিন্ন স্থানে চলমান ওমএএস-এর ডিলার পয়েন্টগুলোও উদ্বোধনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এই সব বস্তা দিয়েই। আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ অর্থাৎ অল্প দিনেই অগাধ কালো টাকার মালিক বনে যাওয়ার এক ভয়ঙ্কর ফন্দি নাম খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী নামের এই লুটপাটেরপ প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় অসহায় নামের যাদেরকে রাখা হয়েছে তাদের বেশিরভাগ ছিল আওয়ামী দলীয় স্বাবলম্বী ব্যক্তিবর্গ।

এ কারণে কর্মসূচির বিতরণকৃত চাল দলীয় লোকজন কখনোই উঠায়নি। যার কারণে বস্তাবন্দী চাল সরকারী খাদ্যগুদাম থেকে ডিলার হয়ে ফরিয়া ব্যবাসয়ীদের মাধ্যমে আবারো চাতাল মালিক হয়ে সরকারী গোডাউনেই যায়। এতে করে বছরের পর বছর ঘুরতে ঘুরতে একই চাল। এতোটাই নষ্ট হয়ে যায় যে, দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করে। যার কারণে অসহায় গরিব মানুষগুলোও এই পঁচা চাল আর উঠায়না। তখন এই সিন্ডিকেটের কাছে এক ধরনের জিম্মি হয়ে নাম মাত্র কিছু টাকা নিতে বাধ্য হয় গরিব মানুষগুলো। আর এই সুযোগে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় সিন্ডিকেট। এমনকি যখন চাল উঠানোর মতো লোক পাওয়া যায়না তখন শুধু কাগজে কলমেই চাল উঠানো ও বিতরণ দেখানো হয়। কিন্তু বাস্তবে এসব চাল গোডাউনেই থেকে যায়। আর এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে জেলা-উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা, খাদ্য পরিদর্শক তথা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও চাতাল মালিকরা। মূলত এইসব বস্তা শেষ হয়ে গেলে লুটপাট করার কৌশলটাও নষ্ট হয়ে যাবে। যার কারণে ঘুরেফিরে এই বস্তাই ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন তথ্যই উঠে আসে কয়েক দিনের অনুসন্ধানে।

এছাড়া চলতি বছর নতুন চাল কেনার নামেও শুধু বস্তা পরিবর্তন করে এসব হাতছাড়া চাল কেনার অভিযোগ রয়েছে এই দপ্তরের বিরুদ্ধে। অনেকেই বলেন, অর্ধেকের বেশি পুরাতন চাল নতুন বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আগামি দুই মাসের মধ্যেই এসব বস্তা শেষ হয়ে যাবে। তারা আরো বলেন, বিতরণের সময় আমরা বস্তার উপর শেখ হাসিনার নাম মুছে দিচ্ছি। কিন্তু সরেজমিনে কোন বস্তাতেই মুছে ফেলার চিহ্ন পাওয়া যায়নি। উপজেলা খাদ্য পরিদর্শকদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আমরা বস্তার লেখা মুছে দিচ্ছি সেই সাথে বিলি বিতরণের একটি সিল দিচ্ছি। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায় বিলি বিতরণের সিল একেবারেই অস্পষ্ট অর্থাৎ কিছুই বুঝা যায়না। এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, আগের বস্তাগুলো প্রায় শেষ। আগামী দেড় দুই মাসের মধ্যেই পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, আমরা কালি দিয়ে ওই লেখাগুলো মুছে দিচ্ছি। বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা আক্ষেপ করে বলেন, এখনো এইসব বস্তা আছে! আমি এখুনি খাদ্য কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলছি।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

শাকিল ও ফারজানা রুপাকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে জাতিসংঘকে সরকারের ব্যাখ্যা

ফ্যাসিস্টের মায়া কাটেনি বগুড়া খাদ্য বিভাগের

আপডেট সময় ১২:২১:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

পতিত শেখ হাসিনাকে যেনো ভুলতেই পারছে না বগুড়া খাদ্য বিভাগ। এই নামেই লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার কৌশল এখনো সচল রেখেছে অসাধু কর্মকর্তারা। এতে সাধারণ মানুষের মনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। শুরু হয়েছে নানা আলোচনা ও সমালোচনা। তবে এসবকে কোন পাত্তা না দিয়ে নিজেদের মতো করে সব কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। অর্থাৎ ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ-ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ এই শিরোনামে অসংখ্যা সিলযুক্ত বস্তা রয়েছে বগুড়ার সরকারি গোডাউনগুলোতে। এসব বস্তার চাল প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ডিলারের মাধ্যমে বিতরণের কাজ চলমান রয়েছে। এ ঘটনায় সাধারণ মানুষের ধারণা, শেখ হাসিনার চালই এখনো পাচ্ছে তারা। তবে এসবে কোনও মাথা ব্যথা নেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের। কারণ কর্মকর্তারা বিভিন্ন স্থানে চলমান ওমএএস-এর ডিলার পয়েন্টগুলোও উদ্বোধনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন এই সব বস্তা দিয়েই। আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ অর্থাৎ অল্প দিনেই অগাধ কালো টাকার মালিক বনে যাওয়ার এক ভয়ঙ্কর ফন্দি নাম খাদ্যবান্ধব কর্মসূচী নামের এই লুটপাটেরপ প্রকল্প। এই প্রকল্পের আওতায় অসহায় নামের যাদেরকে রাখা হয়েছে তাদের বেশিরভাগ ছিল আওয়ামী দলীয় স্বাবলম্বী ব্যক্তিবর্গ।

এ কারণে কর্মসূচির বিতরণকৃত চাল দলীয় লোকজন কখনোই উঠায়নি। যার কারণে বস্তাবন্দী চাল সরকারী খাদ্যগুদাম থেকে ডিলার হয়ে ফরিয়া ব্যবাসয়ীদের মাধ্যমে আবারো চাতাল মালিক হয়ে সরকারী গোডাউনেই যায়। এতে করে বছরের পর বছর ঘুরতে ঘুরতে একই চাল। এতোটাই নষ্ট হয়ে যায় যে, দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করে। যার কারণে অসহায় গরিব মানুষগুলোও এই পঁচা চাল আর উঠায়না। তখন এই সিন্ডিকেটের কাছে এক ধরনের জিম্মি হয়ে নাম মাত্র কিছু টাকা নিতে বাধ্য হয় গরিব মানুষগুলো। আর এই সুযোগে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় সিন্ডিকেট। এমনকি যখন চাল উঠানোর মতো লোক পাওয়া যায়না তখন শুধু কাগজে কলমেই চাল উঠানো ও বিতরণ দেখানো হয়। কিন্তু বাস্তবে এসব চাল গোডাউনেই থেকে যায়। আর এই ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে জেলা-উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা, খাদ্য পরিদর্শক তথা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও চাতাল মালিকরা। মূলত এইসব বস্তা শেষ হয়ে গেলে লুটপাট করার কৌশলটাও নষ্ট হয়ে যাবে। যার কারণে ঘুরেফিরে এই বস্তাই ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন তথ্যই উঠে আসে কয়েক দিনের অনুসন্ধানে।

এছাড়া চলতি বছর নতুন চাল কেনার নামেও শুধু বস্তা পরিবর্তন করে এসব হাতছাড়া চাল কেনার অভিযোগ রয়েছে এই দপ্তরের বিরুদ্ধে। অনেকেই বলেন, অর্ধেকের বেশি পুরাতন চাল নতুন বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আগামি দুই মাসের মধ্যেই এসব বস্তা শেষ হয়ে যাবে। তারা আরো বলেন, বিতরণের সময় আমরা বস্তার উপর শেখ হাসিনার নাম মুছে দিচ্ছি। কিন্তু সরেজমিনে কোন বস্তাতেই মুছে ফেলার চিহ্ন পাওয়া যায়নি। উপজেলা খাদ্য পরিদর্শকদের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আমরা বস্তার লেখা মুছে দিচ্ছি সেই সাথে বিলি বিতরণের একটি সিল দিচ্ছি। কিন্তু সরেজমিনে দেখা যায় বিলি বিতরণের সিল একেবারেই অস্পষ্ট অর্থাৎ কিছুই বুঝা যায়না। এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোঃ রিয়াজুর রহমান রাজু বলেন, আগের বস্তাগুলো প্রায় শেষ। আগামী দেড় দুই মাসের মধ্যেই পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। তিনি আরো বলেন, আমরা কালি দিয়ে ওই লেখাগুলো মুছে দিচ্ছি। বগুড়া জেলা প্রশাসক হোসনা আফরোজা আক্ষেপ করে বলেন, এখনো এইসব বস্তা আছে! আমি এখুনি খাদ্য কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবগত করে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলছি।