ঢাকা ১১:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo রাজধানীর ধোলাইপাড়ে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের তিন সদস্য গ্রেফতার Logo ভারতীয় গণমাধ্যম Northeast News-এর মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিক্রিয়া Logo দেশের ১৮ কোটি মানুষেরই পরিবেশ সচেতন হওয়া জরুরি- উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান Logo মধ্যরাতে ছুটে এলেন সারজিস, বৈষম্যবিরোধী দুই নেতাকে সেনাবাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদ Logo নীলডুমুর ব্যাটালিয়নের অধিনস্থ ছুটিপুর বিওপির উদ্বোধন Logo জর্ডানে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও আলোচনা Logo মহিষখলা কোরবানির হাটে বৃষ্টি উপেক্ষা করে জমজমাট Logo বাণিজ্য উপদেষ্টার সাথে চীনের বাণিজ্যমন্ত্রীর বৈঠক : দুই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর Logo জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট-এর পরিস্থিতি বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য Logo পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জনগণের সাথে আরও নিবিড় সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে—– উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

কালিগঞ্জে মৎস্যঘের পরিদর্শন ও চাষীদের সাথে মতবিনিময় করলেন ইউএনও অনুজা মন্ডল

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:০৪:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫
  • ৫৫২ বার পড়া হয়েছে

 

হাফিজুর রহমান শিমুলঃ সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে বাগদা চিংড়িতে মড়ক দেখা দিয়েছে। কোন কিছু বুঝে উঠার আগে প্রায়ই ঘেরে বাগদা চিংড়ী মারা যাচ্ছে। চাষীরা প্রতিকার করার কোন সময় পাচ্ছেনা আবার কোন ঔষধেও কাজ হচ্ছেনা, মাছ মরে পঁচে যাচ্ছে। ঠিক এমন সময়ে উপজেলার শ্রীকলা, তুলাকাটি ও দক্ষিন শ্রীপুর এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যঘের পরিদর্শন ও মৎস্য চাষিদের সাথে মতবিনিময় করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডল। সোমবার (৭ এপ্রিল-২৫) বেলা ১২ টায় শ্রীকলা যুব উন্নয়ন সোসাইটির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন পরিকল্পনা মাফিক ঘের পরিচর্যা থেকে শুরু করে মৎস্যচাষ করলে চাষিরা কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এখানে দেখা যাচ্ছে একটি ঘেরে মাছ মরছে, সেই ঘেরের পানি ও দুর্গন্ধ ছড়ানো মাছসহ নালা বা খালে ফেলছি। ঐ বিষক্ত ও জীবানুযুক্ত পানি আমরা অন্যান্য মৎস্যঘেরে উঠাচ্ছি। ফলে নতুন নতুন ঘেরে আক্রান্ত হয়ে চাষীরা সর্বশান্ত হচ্ছে। এজন্যে আমাদের সচেতন হতে হবে এবং প্রশিক্ষণ গ্রহন করতে হবে। আমি খুব দ্রুত মৎস্যচাষীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। মতবিনিময় কালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সিনিঃ মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ তৌকির আহমেদ, কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম হাফিজুর রহমান শিমুল, সিনিঃ সদস্য ইশারাত আলীসহ অর্ধশত মৎস্য চাষী ও সূধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। জানাগেছে, কালিগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের অধিকাংশ বিলে বাগদা ঘেরে মৌসুমের শুরুতে চিংড়ী মাছে মড়কের ফলে উপজেলায় বাগদা চাষীদের মারাত্বক লোকসানের মুখে ফেলেছে। চাষীরা চরম হতাশ এবং ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।উপজেলা মৎস্য অফিসে জানাগেছে, প্রায় ১৫ হাজার ঘেরের আয়তন ১৬”শ হেক্টর। এবছরে সাড়ে ৬ হাজার মেট্রিক টন চিংড়ী মাছ উৎপাদন হওয়ার কথা। সে হিসেবে হেক্টর প্রতি ৪’শ কেজি বাগদা উদপাদন লক্ষ্যমাত্রা চাষীদের। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে বড় ধরনের ধাক্কা খেলো বাগদা চাষীরা।
উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের বেড়াখালী গ্রামের বাগদা চিংড়ী চাষী শাহাদাৎ হোসেন, নয়ন, নূরুল আমিন, ফকরুল ইসলাম, মীর শাহ উদ্দীন, আনারুল ইসলাম, মুকুল শাহাজীসহ আরও অনেক বাগদা চাষীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে যে, সবে কেজিতে ৬০টি সাইজ বাগদা হয়েছে। তার মধ্যে হটাৎ মাছ মরা শুরু হয়েছে। আমরা চরম ক্ষতিগ্রস্থ। আমরা অধিকাংশ চাষী সমিতির লোন নিয়ে বাগদা চিংড়ী চাষ করেছি। এখন আমাদের মাথায় হাত উঠে গেছে, চোখে শষ্যর ফুল দেখছি। শ্রীকলা গ্রামের চিংড়ি চাষী শরিফুল ইসলাম বলেন সমিতির লোন নিয়ে মাছ চাষ করেছি। প্রতি গোনে গোনে মাছ ছেড়েছি। দুই কোটার মাছ মারা গেছে, মাছ পঁচে গেছে। একই গ্রামের চিংড়ী চাষী রাজিউন আহম্মেদ বলেন আমার তিনটি ঘের মিলে ১৪ বিঘা। আমি ১ লক্ষ ২০ হাজার বাগদা রেনু ছেড়েছি। কিন্তু তার অধিকাংশ মারা গেছে।আশপাশে ছোট বড় সব ঘেরের নিদারুন করুণ অবস্থা। পাশের ঘেরের মনিরুল ইসলাম, কাজী হালিম, হাসানুর, ইউসুফ, মোমিনসহ এলাকার সকল মৎস্য চাষীর ঘেরে বাগদা মড়ক লেগেছে। এর মধ্যে কেউ কেউ ঘের শুকিয়ে নতুন করে চিংড়ী চাষের উপযোগী করার চেষ্টা করছে।ইতোমধ্য বাগদা চাষীদের জমির হারি, পোনা ও খাবারের টাকা ব্যয় হয়ে গেছে। এই পুঁজি ফেরার কোন উপায় নেই। তার পরেও দায় শোধ করতে হবে। এখন আপনারাই বলুন আগে বাগদা চাষ করবো নাকি দায় পরিশোধ করবো। এমনই নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে কালিগঞ্জ উপজেলার বাগদা চিংড়ী চাষীরা দিন পার করছে।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

রাজধানীর ধোলাইপাড়ে ঝটিকা মিছিলে অংশগ্রহণকারী আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের তিন সদস্য গ্রেফতার

কালিগঞ্জে মৎস্যঘের পরিদর্শন ও চাষীদের সাথে মতবিনিময় করলেন ইউএনও অনুজা মন্ডল

আপডেট সময় ১২:০৪:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

 

হাফিজুর রহমান শিমুলঃ সাতক্ষীরার কালিগঞ্জে বাগদা চিংড়িতে মড়ক দেখা দিয়েছে। কোন কিছু বুঝে উঠার আগে প্রায়ই ঘেরে বাগদা চিংড়ী মারা যাচ্ছে। চাষীরা প্রতিকার করার কোন সময় পাচ্ছেনা আবার কোন ঔষধেও কাজ হচ্ছেনা, মাছ মরে পঁচে যাচ্ছে। ঠিক এমন সময়ে উপজেলার শ্রীকলা, তুলাকাটি ও দক্ষিন শ্রীপুর এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যঘের পরিদর্শন ও মৎস্য চাষিদের সাথে মতবিনিময় করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডল। সোমবার (৭ এপ্রিল-২৫) বেলা ১২ টায় শ্রীকলা যুব উন্নয়ন সোসাইটির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন পরিকল্পনা মাফিক ঘের পরিচর্যা থেকে শুরু করে মৎস্যচাষ করলে চাষিরা কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এখানে দেখা যাচ্ছে একটি ঘেরে মাছ মরছে, সেই ঘেরের পানি ও দুর্গন্ধ ছড়ানো মাছসহ নালা বা খালে ফেলছি। ঐ বিষক্ত ও জীবানুযুক্ত পানি আমরা অন্যান্য মৎস্যঘেরে উঠাচ্ছি। ফলে নতুন নতুন ঘেরে আক্রান্ত হয়ে চাষীরা সর্বশান্ত হচ্ছে। এজন্যে আমাদের সচেতন হতে হবে এবং প্রশিক্ষণ গ্রহন করতে হবে। আমি খুব দ্রুত মৎস্যচাষীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। মতবিনিময় কালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সিনিঃ মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ তৌকির আহমেদ, কালিগঞ্জ প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম হাফিজুর রহমান শিমুল, সিনিঃ সদস্য ইশারাত আলীসহ অর্ধশত মৎস্য চাষী ও সূধীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। জানাগেছে, কালিগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের অধিকাংশ বিলে বাগদা ঘেরে মৌসুমের শুরুতে চিংড়ী মাছে মড়কের ফলে উপজেলায় বাগদা চাষীদের মারাত্বক লোকসানের মুখে ফেলেছে। চাষীরা চরম হতাশ এবং ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।উপজেলা মৎস্য অফিসে জানাগেছে, প্রায় ১৫ হাজার ঘেরের আয়তন ১৬”শ হেক্টর। এবছরে সাড়ে ৬ হাজার মেট্রিক টন চিংড়ী মাছ উৎপাদন হওয়ার কথা। সে হিসেবে হেক্টর প্রতি ৪’শ কেজি বাগদা উদপাদন লক্ষ্যমাত্রা চাষীদের। কিন্তু মৌসুমের শুরুতে বড় ধরনের ধাক্কা খেলো বাগদা চাষীরা।
উপজেলার দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়নের বেড়াখালী গ্রামের বাগদা চিংড়ী চাষী শাহাদাৎ হোসেন, নয়ন, নূরুল আমিন, ফকরুল ইসলাম, মীর শাহ উদ্দীন, আনারুল ইসলাম, মুকুল শাহাজীসহ আরও অনেক বাগদা চাষীদের সাথে কথা বলে জানাগেছে যে, সবে কেজিতে ৬০টি সাইজ বাগদা হয়েছে। তার মধ্যে হটাৎ মাছ মরা শুরু হয়েছে। আমরা চরম ক্ষতিগ্রস্থ। আমরা অধিকাংশ চাষী সমিতির লোন নিয়ে বাগদা চিংড়ী চাষ করেছি। এখন আমাদের মাথায় হাত উঠে গেছে, চোখে শষ্যর ফুল দেখছি। শ্রীকলা গ্রামের চিংড়ি চাষী শরিফুল ইসলাম বলেন সমিতির লোন নিয়ে মাছ চাষ করেছি। প্রতি গোনে গোনে মাছ ছেড়েছি। দুই কোটার মাছ মারা গেছে, মাছ পঁচে গেছে। একই গ্রামের চিংড়ী চাষী রাজিউন আহম্মেদ বলেন আমার তিনটি ঘের মিলে ১৪ বিঘা। আমি ১ লক্ষ ২০ হাজার বাগদা রেনু ছেড়েছি। কিন্তু তার অধিকাংশ মারা গেছে।আশপাশে ছোট বড় সব ঘেরের নিদারুন করুণ অবস্থা। পাশের ঘেরের মনিরুল ইসলাম, কাজী হালিম, হাসানুর, ইউসুফ, মোমিনসহ এলাকার সকল মৎস্য চাষীর ঘেরে বাগদা মড়ক লেগেছে। এর মধ্যে কেউ কেউ ঘের শুকিয়ে নতুন করে চিংড়ী চাষের উপযোগী করার চেষ্টা করছে।ইতোমধ্য বাগদা চাষীদের জমির হারি, পোনা ও খাবারের টাকা ব্যয় হয়ে গেছে। এই পুঁজি ফেরার কোন উপায় নেই। তার পরেও দায় শোধ করতে হবে। এখন আপনারাই বলুন আগে বাগদা চাষ করবো নাকি দায় পরিশোধ করবো। এমনই নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে কালিগঞ্জ উপজেলার বাগদা চিংড়ী চাষীরা দিন পার করছে।