ঢাকা ০১:৪৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৩ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জনগণের নিকট দায়বদ্ধতা না থাকলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অর্থহীন : তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা Logo ঈদযাত্রা নিরাপদ, নির্বিঘ্ন ও স্বস্তিদায়ক করতে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে- মোঃ এহছানুল হক Logo বিশেষ অভিযানে ছিনতাইকারী, মাদক কারবারিসহ ৭১ জনকে গ্রেফতার Logo তিন পেশাদার ছিনতাইকারী ও মাদক কারবারিকে দেশীয় অস্ত্র ও মাদকসহ গ্রেফতার Logo নওগাঁয় ১১৯ কেজি গাঁজাসহ ৬ মাদক কারবারি গ্রেফতার Logo সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে বিএনপি Logo এনসিপির নতুন কর্মসূচি ঘোষণা Logo প্রধান উপদেষ্টার কাছে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর Logo ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে নওগাঁয় শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ Logo গণহত্যার বছর না ঘুরতেই আ. লীগকে ফেরানোর খায়েশ বিপজ্জনক: আসিফ মাহমুদ

কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা অর্জনই প্রকৃত অর্থে গুণগত শিক্ষা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৬:২৬:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪
  • ৫৭৫ বার পড়া হয়েছে
 ইসরাত জাহান: জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এ বলা হয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি সাধনের জন্য শিক্ষাকে সৃজনশীল ও প্রয়োগিক করে তুলতে হবে। শিক্ষার্থীদেরকে শ্রমের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও আগ্রহী এবং শিক্ষার বিভিন্নস্তরে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বৃত্তিমূলক শিক্ষায় দক্ষতা অর্জনে সামর্থ্য করে তুলতে হবে। এ জন্যে প্রয়োজন শিক্ষার সর্বস্তরে গুণগত পরিবর্তন সাধন করা।

গুণগত শিক্ষা এমন একটি পরিকল্পিত শিক্ষা ব্যবস্থা যার উদ্দেশ্য হলো সামগ্রিকভাবে শিক্ষার্থীকে সাহায্য করা যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্ণ সম্ভাবনার বিকাশ ঘটিয়ে সমাজে একজন পূর্ণাঙ্গ ও উৎপাদনশীল নাগরিক হয়ে ওঠে। তাই শিক্ষায় এমন ব্যবস্থা করতে হবে যেন প্রতিটি শিশু স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায় এবং স্কুলের লব্ধ জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতের জন্য উৎপাদনশীল নাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে পারে। যেখানে প্রতিটি শিশুর বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদের যোগান থাকবে। প্রতিটি শিশু একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণ করবে, উন্নত জীবনের চর্চা করবে। শিখন পরিবেশ হবে ভীতিহীন। শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে শিখন-শেখানো কাজে অংশগ্রহণ করবে ও উচ্চতর শিক্ষার জন্য প্রস্তুত হবে। প্রতিটি শিক্ষার্থী বিদ্যালয় ও বৃহত্তর সমাজের কাজে সম্পৃক্ত হতে শিখবে। যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষকের সংস্পর্শে শিক্ষার্থীরা আত্মবিকাশের সুযোগ পাবে। তারা কর্মজীবনের জন্য তৈরি হবে এবং বৈশ্বিক পরিবেশে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হবে।
গুণগত শিক্ষা হবে একীভূত ,যেখানে সকল ধরনের শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীর সাথে অতি মেধাবী, ক্ষীণ বুদ্ধি, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী, পথশিশু, শ্রমজীবী শিশু, দলিত জনগোষ্ঠী যেমন পড়তে পারবে তেমনি বিভিন্ন জাতি, বর্ণ, ভাষা, সংস্কৃতির মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিখন পরিচালিত হবে।
যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের পর্যাপ্ততা, যুগোপযোগী শিক্ষাক্রম প্রণয়ন, মানসম্মত শিখন সামগ্রী ব্যবহার, শিখন-শেখানো পদ্ধতির ও কৌশলের কার্যকর ব্যবহার, নিরাপদ ও সহযোগিতামূলক শিখন পরিবেশ, উপযুক্ত মূল্যায়ন ব্যবস্থা, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তার ও কর্মচারীর সুসম্পর্ক, ছাত্রছাত্রীদের জন্যে পর্যাপ্ত বৃত্তির ব্যবস্থা, অহিংসামূলক পরিবেশ, শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ, এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত সুবিধা থাকলেই নিশ্চিত হবে গুণগত ও মান সম্পন্ন শিক্ষা।
এ জন্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়ও শিক্ষকদের সামনের সারিতে রাখা প্রয়োজন। যারা রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা শিক্ষকদের হাতে তৈরি। শিক্ষককে সম্মান ও মর্যাদা দিলে রাষ্ট্র কিছু হারাবে না, বরং তাদের সম্মান দিয়ে রাষ্ট্র সম্মানিত হবে। একেকজন শিক্ষক রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। তাদের মাধ্যমে একটি রাষ্ট্রের পরিবর্তন যত দ্রুত ঘটানো সম্ভব, তেমনটি অন্য কোনোভাবে সম্ভব নয়। শিক্ষকরা নিজেরা যেমন নিজের সীমাবদ্ধতা কাটাতে চেষ্টা করবেন; তেমনি রাষ্ট্রও শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদার আসনে নিয়ে যাবে এ প্রত্যাশাটুকু শিক্ষক হিসেবে করতে চাই।
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জনগণের নিকট দায়বদ্ধতা না থাকলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা অর্থহীন : তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা

কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা অর্জনই প্রকৃত অর্থে গুণগত শিক্ষা

আপডেট সময় ০৬:২৬:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪
 ইসরাত জাহান: জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এ বলা হয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি সাধনের জন্য শিক্ষাকে সৃজনশীল ও প্রয়োগিক করে তুলতে হবে। শিক্ষার্থীদেরকে শ্রমের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও আগ্রহী এবং শিক্ষার বিভিন্নস্তরে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বৃত্তিমূলক শিক্ষায় দক্ষতা অর্জনে সামর্থ্য করে তুলতে হবে। এ জন্যে প্রয়োজন শিক্ষার সর্বস্তরে গুণগত পরিবর্তন সাধন করা।

গুণগত শিক্ষা এমন একটি পরিকল্পিত শিক্ষা ব্যবস্থা যার উদ্দেশ্য হলো সামগ্রিকভাবে শিক্ষার্থীকে সাহায্য করা যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্ণ সম্ভাবনার বিকাশ ঘটিয়ে সমাজে একজন পূর্ণাঙ্গ ও উৎপাদনশীল নাগরিক হয়ে ওঠে। তাই শিক্ষায় এমন ব্যবস্থা করতে হবে যেন প্রতিটি শিশু স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায় এবং স্কুলের লব্ধ জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতের জন্য উৎপাদনশীল নাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে পারে। যেখানে প্রতিটি শিশুর বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদের যোগান থাকবে। প্রতিটি শিশু একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণ করবে, উন্নত জীবনের চর্চা করবে। শিখন পরিবেশ হবে ভীতিহীন। শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে শিখন-শেখানো কাজে অংশগ্রহণ করবে ও উচ্চতর শিক্ষার জন্য প্রস্তুত হবে। প্রতিটি শিক্ষার্থী বিদ্যালয় ও বৃহত্তর সমাজের কাজে সম্পৃক্ত হতে শিখবে। যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষকের সংস্পর্শে শিক্ষার্থীরা আত্মবিকাশের সুযোগ পাবে। তারা কর্মজীবনের জন্য তৈরি হবে এবং বৈশ্বিক পরিবেশে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হবে।
গুণগত শিক্ষা হবে একীভূত ,যেখানে সকল ধরনের শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীর সাথে অতি মেধাবী, ক্ষীণ বুদ্ধি, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী, পথশিশু, শ্রমজীবী শিশু, দলিত জনগোষ্ঠী যেমন পড়তে পারবে তেমনি বিভিন্ন জাতি, বর্ণ, ভাষা, সংস্কৃতির মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিখন পরিচালিত হবে।
যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের পর্যাপ্ততা, যুগোপযোগী শিক্ষাক্রম প্রণয়ন, মানসম্মত শিখন সামগ্রী ব্যবহার, শিখন-শেখানো পদ্ধতির ও কৌশলের কার্যকর ব্যবহার, নিরাপদ ও সহযোগিতামূলক শিখন পরিবেশ, উপযুক্ত মূল্যায়ন ব্যবস্থা, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তার ও কর্মচারীর সুসম্পর্ক, ছাত্রছাত্রীদের জন্যে পর্যাপ্ত বৃত্তির ব্যবস্থা, অহিংসামূলক পরিবেশ, শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ, এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত সুবিধা থাকলেই নিশ্চিত হবে গুণগত ও মান সম্পন্ন শিক্ষা।
এ জন্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়ও শিক্ষকদের সামনের সারিতে রাখা প্রয়োজন। যারা রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা শিক্ষকদের হাতে তৈরি। শিক্ষককে সম্মান ও মর্যাদা দিলে রাষ্ট্র কিছু হারাবে না, বরং তাদের সম্মান দিয়ে রাষ্ট্র সম্মানিত হবে। একেকজন শিক্ষক রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। তাদের মাধ্যমে একটি রাষ্ট্রের পরিবর্তন যত দ্রুত ঘটানো সম্ভব, তেমনটি অন্য কোনোভাবে সম্ভব নয়। শিক্ষকরা নিজেরা যেমন নিজের সীমাবদ্ধতা কাটাতে চেষ্টা করবেন; তেমনি রাষ্ট্রও শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদার আসনে নিয়ে যাবে এ প্রত্যাশাটুকু শিক্ষক হিসেবে করতে চাই।