ঢাকা ০৯:৫০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo জুলাই গণঅভ্যুত্থানে লড়াকু একজন নারীকেও তালিকা থেকে বাদ যেতে দেবো না—উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ Logo হবু পুত্রবধূর ভাইরাল নাচের ভিডিও দেখে বিয়ে ভেঙে দিলেন পাত্রের বাবা Logo যশোরে বিজিবির অভিযানে কোটি টাকার স্বর্ণসহ দুই চোরাকারবারি আটক Logo স্বাধীন সাংবাদিকতা রক্ষা করার চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব Logo ডিএমপির নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থায় উদযাপিত হলো উল্টো রথযাত্রার বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা Logo পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষ প্রাকৃতিক খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত, এবং অর্গানিক ফল আমাদের ঐতিহ্যের অংশ —- উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা Logo পটুয়াখালী কলাপাড়ার নীলগঞ্জ মাতব্বর বাড়ি জামে মসজিদের মুয়াজ্জিনের জন্য সর্বপ্রথম মসজিদ কমিটি পেনশন চালু করেছে Logo জানা গেল এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ কবে Logo বিএনপির ১৬ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ Logo কাদিহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে বিদায় অনুষ্ঠান অবসরে গেলেন প্রিয় গণিত শিক্ষক মোঃ হবিবর রহমান

কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা অর্জনই প্রকৃত অর্থে গুণগত শিক্ষা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৬:২৬:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪
  • ৬০০ বার পড়া হয়েছে
 ইসরাত জাহান: জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এ বলা হয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি সাধনের জন্য শিক্ষাকে সৃজনশীল ও প্রয়োগিক করে তুলতে হবে। শিক্ষার্থীদেরকে শ্রমের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও আগ্রহী এবং শিক্ষার বিভিন্নস্তরে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বৃত্তিমূলক শিক্ষায় দক্ষতা অর্জনে সামর্থ্য করে তুলতে হবে। এ জন্যে প্রয়োজন শিক্ষার সর্বস্তরে গুণগত পরিবর্তন সাধন করা।

গুণগত শিক্ষা এমন একটি পরিকল্পিত শিক্ষা ব্যবস্থা যার উদ্দেশ্য হলো সামগ্রিকভাবে শিক্ষার্থীকে সাহায্য করা যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্ণ সম্ভাবনার বিকাশ ঘটিয়ে সমাজে একজন পূর্ণাঙ্গ ও উৎপাদনশীল নাগরিক হয়ে ওঠে। তাই শিক্ষায় এমন ব্যবস্থা করতে হবে যেন প্রতিটি শিশু স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায় এবং স্কুলের লব্ধ জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতের জন্য উৎপাদনশীল নাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে পারে। যেখানে প্রতিটি শিশুর বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদের যোগান থাকবে। প্রতিটি শিশু একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণ করবে, উন্নত জীবনের চর্চা করবে। শিখন পরিবেশ হবে ভীতিহীন। শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে শিখন-শেখানো কাজে অংশগ্রহণ করবে ও উচ্চতর শিক্ষার জন্য প্রস্তুত হবে। প্রতিটি শিক্ষার্থী বিদ্যালয় ও বৃহত্তর সমাজের কাজে সম্পৃক্ত হতে শিখবে। যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষকের সংস্পর্শে শিক্ষার্থীরা আত্মবিকাশের সুযোগ পাবে। তারা কর্মজীবনের জন্য তৈরি হবে এবং বৈশ্বিক পরিবেশে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হবে।
গুণগত শিক্ষা হবে একীভূত ,যেখানে সকল ধরনের শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীর সাথে অতি মেধাবী, ক্ষীণ বুদ্ধি, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী, পথশিশু, শ্রমজীবী শিশু, দলিত জনগোষ্ঠী যেমন পড়তে পারবে তেমনি বিভিন্ন জাতি, বর্ণ, ভাষা, সংস্কৃতির মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিখন পরিচালিত হবে।
যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের পর্যাপ্ততা, যুগোপযোগী শিক্ষাক্রম প্রণয়ন, মানসম্মত শিখন সামগ্রী ব্যবহার, শিখন-শেখানো পদ্ধতির ও কৌশলের কার্যকর ব্যবহার, নিরাপদ ও সহযোগিতামূলক শিখন পরিবেশ, উপযুক্ত মূল্যায়ন ব্যবস্থা, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তার ও কর্মচারীর সুসম্পর্ক, ছাত্রছাত্রীদের জন্যে পর্যাপ্ত বৃত্তির ব্যবস্থা, অহিংসামূলক পরিবেশ, শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ, এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত সুবিধা থাকলেই নিশ্চিত হবে গুণগত ও মান সম্পন্ন শিক্ষা।
এ জন্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়ও শিক্ষকদের সামনের সারিতে রাখা প্রয়োজন। যারা রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা শিক্ষকদের হাতে তৈরি। শিক্ষককে সম্মান ও মর্যাদা দিলে রাষ্ট্র কিছু হারাবে না, বরং তাদের সম্মান দিয়ে রাষ্ট্র সম্মানিত হবে। একেকজন শিক্ষক রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। তাদের মাধ্যমে একটি রাষ্ট্রের পরিবর্তন যত দ্রুত ঘটানো সম্ভব, তেমনটি অন্য কোনোভাবে সম্ভব নয়। শিক্ষকরা নিজেরা যেমন নিজের সীমাবদ্ধতা কাটাতে চেষ্টা করবেন; তেমনি রাষ্ট্রও শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদার আসনে নিয়ে যাবে এ প্রত্যাশাটুকু শিক্ষক হিসেবে করতে চাই।
ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে লড়াকু একজন নারীকেও তালিকা থেকে বাদ যেতে দেবো না—উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ

কর্ম ও জীবনমুখী শিক্ষা অর্জনই প্রকৃত অর্থে গুণগত শিক্ষা

আপডেট সময় ০৬:২৬:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর ২০২৪
 ইসরাত জাহান: জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এ বলা হয়েছে, দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি সাধনের জন্য শিক্ষাকে সৃজনশীল ও প্রয়োগিক করে তুলতে হবে। শিক্ষার্থীদেরকে শ্রমের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও আগ্রহী এবং শিক্ষার বিভিন্নস্তরে কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে বৃত্তিমূলক শিক্ষায় দক্ষতা অর্জনে সামর্থ্য করে তুলতে হবে। এ জন্যে প্রয়োজন শিক্ষার সর্বস্তরে গুণগত পরিবর্তন সাধন করা।

গুণগত শিক্ষা এমন একটি পরিকল্পিত শিক্ষা ব্যবস্থা যার উদ্দেশ্য হলো সামগ্রিকভাবে শিক্ষার্থীকে সাহায্য করা যাতে শিক্ষার্থীরা তাদের পূর্ণ সম্ভাবনার বিকাশ ঘটিয়ে সমাজে একজন পূর্ণাঙ্গ ও উৎপাদনশীল নাগরিক হয়ে ওঠে। তাই শিক্ষায় এমন ব্যবস্থা করতে হবে যেন প্রতিটি শিশু স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায় এবং স্কুলের লব্ধ জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতের জন্য উৎপাদনশীল নাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে পারে। যেখানে প্রতিটি শিশুর বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদের যোগান থাকবে। প্রতিটি শিশু একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণ করবে, উন্নত জীবনের চর্চা করবে। শিখন পরিবেশ হবে ভীতিহীন। শিক্ষার্থীরা সক্রিয়ভাবে শিখন-শেখানো কাজে অংশগ্রহণ করবে ও উচ্চতর শিক্ষার জন্য প্রস্তুত হবে। প্রতিটি শিক্ষার্থী বিদ্যালয় ও বৃহত্তর সমাজের কাজে সম্পৃক্ত হতে শিখবে। যোগ্য ও দক্ষ শিক্ষকের সংস্পর্শে শিক্ষার্থীরা আত্মবিকাশের সুযোগ পাবে। তারা কর্মজীবনের জন্য তৈরি হবে এবং বৈশ্বিক পরিবেশে অংশগ্রহণ করতে সক্ষম হবে।
গুণগত শিক্ষা হবে একীভূত ,যেখানে সকল ধরনের শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণের সুযোগ থাকবে। এখানে সাধারণ শিক্ষার্থীর সাথে অতি মেধাবী, ক্ষীণ বুদ্ধি, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থী, পথশিশু, শ্রমজীবী শিশু, দলিত জনগোষ্ঠী যেমন পড়তে পারবে তেমনি বিভিন্ন জাতি, বর্ণ, ভাষা, সংস্কৃতির মানুষ শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে। সকলের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শিখন পরিচালিত হবে।
যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষকের পর্যাপ্ততা, যুগোপযোগী শিক্ষাক্রম প্রণয়ন, মানসম্মত শিখন সামগ্রী ব্যবহার, শিখন-শেখানো পদ্ধতির ও কৌশলের কার্যকর ব্যবহার, নিরাপদ ও সহযোগিতামূলক শিখন পরিবেশ, উপযুক্ত মূল্যায়ন ব্যবস্থা, প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তার ও কর্মচারীর সুসম্পর্ক, ছাত্রছাত্রীদের জন্যে পর্যাপ্ত বৃত্তির ব্যবস্থা, অহিংসামূলক পরিবেশ, শিক্ষকদের পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ, এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামোগত সুবিধা থাকলেই নিশ্চিত হবে গুণগত ও মান সম্পন্ন শিক্ষা।
এ জন্য রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়ও শিক্ষকদের সামনের সারিতে রাখা প্রয়োজন। যারা রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তারা শিক্ষকদের হাতে তৈরি। শিক্ষককে সম্মান ও মর্যাদা দিলে রাষ্ট্র কিছু হারাবে না, বরং তাদের সম্মান দিয়ে রাষ্ট্র সম্মানিত হবে। একেকজন শিক্ষক রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ। তাদের মাধ্যমে একটি রাষ্ট্রের পরিবর্তন যত দ্রুত ঘটানো সম্ভব, তেমনটি অন্য কোনোভাবে সম্ভব নয়। শিক্ষকরা নিজেরা যেমন নিজের সীমাবদ্ধতা কাটাতে চেষ্টা করবেন; তেমনি রাষ্ট্রও শিক্ষকদের সর্বোচ্চ সম্মান ও মর্যাদার আসনে নিয়ে যাবে এ প্রত্যাশাটুকু শিক্ষক হিসেবে করতে চাই।