
স্টাফ রিপোর্টার: সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, আমাদের দেশে আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে গৃহকর্মীদের অধিকার সুরক্ষিত হচ্ছে না। শিক্ষায় পশ্চাদপদের কারণে গৃহকর্মীরা তাদের কর্মক্ষেত্রে নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হন। তিনি বলেন, বিবিএস জরিপ ২০২২ অনুযায়ী বাংলাদেশে গৃহকর্মীদের সংখ্যা প্রায় ২৫ লক্ষ। এর মধ্যে ৯০% নারী, এই ৯০% নারীর মধ্যে ৮০% শিশু রয়েছে, যাদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নেই। ১৮ বছরের নিচে প্রতিটি শিশুকে স্কুলে বাধ্যতামূলকভাবে পাঠাতে হবে, আরবি শিক্ষার পাশাপাশি জেনারেল শিক্ষাও দিতে হবে, যাতে তারা শিক্ষিত হয়ে উঠতে পারে এবং পরবর্তীতে ট্রেনিং নিয়ে দেশের ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে ও বিদেশেও বেশি বেতনের রোজগার করার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারবে হবে, ফলে তারা নিজেকে এবং পরিবারকে স্বাবলম্বী করে তুলতে পারবে।
তিনি আজ ঢাকায় সিরডাপ মিলনায়তনে গণস্বাক্ষরতা অভিযান কর্তৃক আয়োজিত গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যে নীতি সংলাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও জীবনমান উন্নয়নে নীতি সংলাপ অনুষ্ঠানে গণস্বাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরীর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের কমিশন প্রধান ও নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভিন হক, এনএসডিসির সাবেক সিইও , বিশ্বব্যাংকের পরামর্শক এবিএম খোরশেদ আলম, অক্সফাম ইন বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাহমুদা সুলতানা, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, গৃহশ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠা নেটওয়ার্কের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়কারী আবুল হোসাইন এবং গণস্বাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক তপন কুমার দাশ উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা বলেন, অবরুদ্ধ গৃহশ্রমিকদের মুক্তির যে গৃহশ্রমিক কল্যাণ নীতি ২০১৫ যথাযথ বাস্তবায়নের উদ্যোগ না নেওয়ায় গৃহশ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত। তিনি বলেন, পেশা হিসেবে গৃহকর্মের কোন সামাজিক মর্যাদা নেই। বেশিরভাগ গৃহকর্মী এবং নিয়োগকারী গৃহকর্মীর সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫ সম্পর্কে অবগত নয়। গৃহকর্মীরা শ্রমিক হিসেবে শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্ত নয় বিধায় গৃহকর্মীদের অধিকার সুরক্ষিত হচ্ছে না। তিনি বলেন, বড় পরিসরে বসার আগে প্রান্তিক পর্যায়ে থেকে গৃহশ্রমিকদের কল্যাণে আজকের নীতি নির্ধারণী সংলাপ নীতি কল্যাণমূলক কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর পাশাপাশি নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলোকে নিয়ে কাজ করতে হবে। গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ও জীবনমান উন্নয়নে নীতি সংলাপের আয়োজন নাগরিক সমাজের মধ্যে অক্সফাম ইন বাংলাদেশের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। তিনি এই মহতী উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং এই সংলাপের সাথে একতাবদ্ধ প্রকাশ করেন।