
মো: খলিলুর রহমান. বাউফল (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের আওতাধীন মদনপুরা ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া গ্রামে সরকারিভাবে নির্মিত গণমিলনায়তন কেন্দ্রের ইট ও গাছ কেটে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চন্দ্রপাড়া এলাকায় আবদুল খালেক মাতুব্বর বাড়ির সামনে ১৯৮৯ সালে ১৫ শতাংশ জমির ওপর সরকারি অর্থায়নে আধাপাকা একটি টিনশেড ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল। কয়েক বছর বিভিন্ন প্রশিক্ষণও হয়েছে সেখানে। কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কেন্দ্রটিকে ওই বাড়ির এক ব্যক্তি গোয়াল ঘর হিসেবে ব্যবহার করে। একদিকে তদারকির অভাব, অন্যদিকে সংস্কার না হওয়ায় ব্যবহারের অনুপযোগি হয়ে পড়ে কেন্দ্রটি। পরে গণমিলনায়তন কেন্দ্রের ইট ও টিন স্থানীয় প্রভাবশালী মহল খুলে নিয়ে যায় এবং চারটি বিশাল আকৃতির রেইন্ট্রি গাছ কেটে নিয়ে যায়।
স্থানীয় মো. জাহাঙ্গীর হোসেন মৃধা নামে এক ব্যক্তি বলেন, আবদুল মালেক মাতুব্বরের ছেলে মো. জহির মাতুব্বর গণমিলনায়তন কেন্দ্রের ইট ও টিন খুলে নিয়ে গেছেন এবং চারটি রেইন্ট্রি গাছ কেটে নিয়ে গেছেন। ওই চারটি গাছের মূল্য হবে প্রায় এক লক্ষাধিক টাকা। জহির স্থানীয়ভাবে যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। দলীয় সূত্রেজানা গেছে, তিনি ছিলেন মদনপুরা ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি।
এ বিষয়ে জহির মাতুব্বর বলেন,‘কে বা কারা এ কাজ করেছে তা তিনি জানেন না। তবে তিনি ইট ও টিন খুলে নেননি। গাছও কেটে নেননি। একটি মহল ষড়যন্ত্র করে তাঁর নাম বলছে।’
উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রামীন জনগোষ্ঠির দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষে ১৯৮৯ সালে এ উপজেলায় সাতটি গণমিলনায়তন কেন্দ্র নির্মাণ করে। এসব কেন্দ্রগুলো হল- বীরপাশা, বগা, কালিশুরী, মদনপুরা, কালাইয়া ও কেশবপুর। এর মধ্যে কালাইয়া বাজারের গণমিলনায়তন কেন্দ্রে সর্বশেষ ২০০৮ সালে দক্ষতার উন্নয়ন সম্পর্কিত একটি প্রশিক্ষণ হয়। এরপরে আর কোনো কার্যক্রম হয়নি।
সমাজসেবা কার্যালয়ের তথ্যমতে, বীরপাশার গণমিলনায়তন কেন্দ্রের রয়েছে ৪০ শতাংশ জমি, কালিশুরী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বিপরীত পাশে গণমিলনায়তন কেন্দ্রের রয়েছে ১৫ শতাংশ জমি। চন্দ্রপাড়া গণমিলনায়তন কেন্দ্রের রয়েছে ১৫ শতাংশ জমি, মমিনপুর গণমিলনায়তন কেন্দ্রের রয়েছে ৭৪ শতাংশ, বগা মাধ্যমিক বিদ্যালয়-সংলগ্ন গণমিলনায়তন কেন্দ্রের রয়েছে ৩ শতাংশ জমি, কালাইয়া বাজার গণমিলনায়তন কেন্দ্রের রয়েছে ৫ শতাংশ জমি। বাউফল পৌরসভার বাজার রোড এলাকায় গণমিলনায়তন কেন্দ্রের রয়েছে ৫ শতাংশ জমি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কার্যক্রম না থাকায় সব গণমিলনায়তন কেন্দ্রই বেদখল হয়ে গেছে। এর মধ্যে কালাইয়া বাজারের গণমিলনায়তন কেন্দ্রের টিনশেড ঘরটি আওয়ামী লীগ দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের ভাতিজা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক ও চন্দ্রদ্বীপ ইউনিযন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলকাচ মোলা তাঁর কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করতেন। বর্তমানে স্থানীয় যুবকেরা ওই কেন্দ্রের মধ্যে কেরাম খেলে এবং সামনের অংশ তাঁরা দুই দোকানির কাছে ভাড়া দিয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মুসফিকুর রহমান বলেন,‘তিনি এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহে যোগদান করেছেন। এসব বিষয়ে তাঁর জানা নাই। তবে খোঁজ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’