ঢাকা ০২:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ২৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo মালয়েশিয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্নাতকোত্তর ভিসা প্রদানের সম্ভাবনা রয়েছে Logo হালাল শিল্প পার্ক প্রতিষ্ঠায় মালয়েশিয়ার সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ Logo আয়কর স্ল্যাব পরিবর্তন: সাধারণ মানুষের জন্য কতটা ন্যায়সঙ্গত? Logo সিএমপি’র চান্দগাঁও থানার অভিযানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের সময় ০৫ জন গ্রেফতার এবং বিভিন্ন আলামত উদ্ধার Logo দায়িত্ববোধ ও সাহসিকতার পরিচয় দিলেন পুলিশ কর্মকর্তা সুমন রেজা Logo রাঙামাটির ভূষণছড়ায় বিজিবির উদ্যোগে জেনারেটর, টিন, সিমেন্ট, সোলার প্যানেল বিতরণ এবং আর্থিক অনুদান প্রদান Logo কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গ্রেফতার করেছে সিটিটিসি Logo আগামী নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে কাজ করছে সরকার Logo বাংলাদেশ পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল পদে নিয়োগ ২০২৫ তৃতীয় দিন সম্পন্ন Logo খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে সমুদ্রসম্পদ বড় অবদান রাখতে পারে – মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার

খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:২৭:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫৩১ বার পড়া হয়েছে

আলী আহসান রবি
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন,শুধু খাদ্য নিরাপত্তা নয়, খাদ্য নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত করাও জরুরি। প্রাণিসম্পদ খাতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, খামারিদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি নিরাপদ আমিষ উৎপাদনে গুরুত্ব দিতে হবে।

আজ সকালে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রাণিসম্পদ ও দুগ্ধ উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি) এর উদ্যোগে বরিশালের হোটেল গ্র্যান্ড পার্কের কনফারেন্স হলে ‘বিভাগীয় অগ্রগতি পর্যালোচনা কর্মশালা’-তে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

রোগ প্রতিরোধের ওপর জোর দিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, “হাসপাতাল বাড়িয়ে কোনো লাভ নেই, যদি আমরা খাদ্য নিরাপদ রাখতে না পারি।” নিরাপদ খাদ্যের মাধ্যমে শুধু খাদ্য সমস্যা নয়, স্বাস্থ্য সমস্যাও সমাধান সম্ভব। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও ক্যান্সারের মতো অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে নিরাপদ খাদ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

দুধ উৎপাদন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে সামগ্রিকভাবে দুধ উৎপাদনে ঘাটতি রয়েছে এবং এখনো আমদানি করতে হয়। এলডিডিপি প্রকল্পের মাধ্যমে দুধের উৎপাদন বাড়ালে আমিষ ও প্রাণিজ খাদ্যের ঘাটতি পূরণ হবে। প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের মাধ্যমে দুধের আমদানি বন্ধ করা সম্ভব হবে এবং এতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

প্রাণিসম্পদ খাতে বরিশাল বিভাগের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি ও বিশেষ করে মহিষ পালনের বড় সুযোগ রয়েছে। ভোলা জেলায় মহিষের বাথান দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তিনি আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির জন্য মহিষের দুধ উৎপাদন ও লালন-পালন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি আরো বলেন, প্রাণিজ আমিষ বিশেষ করে দুধ, ডিম শিশুদের জন্য অপরিহার্য। এই প্রকল্পের আওতায় স্কুল শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ২০০ মি.লি. দুধ সরবরাহ করা হচ্ছে, যা তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শারীরিক বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

পশু খাদ্যের উৎপাদন খরচ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে বিদ্যুৎ বিল কৃষি খাতের মত প্রদানের জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। দানাদার খাদ্যের বিকল্প হিসেবে ঘাস উৎপাদন বাড়াতে পারলে উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।

নারী খামারিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, পশু পালনে নারীদের আরো সমৃদ্ধ হতে হবে এবং প্রকল্পের সুযোগ কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তরুণদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, শুধু চাকুরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে যেমন তরুণরা দেশের চরিত্র বদলে দিয়েছে, তেমনি তারা অর্থনীতিতেও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, অধিদপ্তরের পরিচালক (সম্প্রসারণ) ডা. বেগম শামছুননাহার আহম্মদ, পরিচালক (উৎপাদন) ড. এ. বি. এম. খালেদুজ্জামান, বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান। এসময় এলডিডিপি প্রকল্পের কর্মকর্তাবৃন্দ, জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রকল্পের প্রডিউসার গ্রুপ (পিজি) সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন। বরিশাল বিভাগে এলডিডিপি’র কার্যক্রম, সাফল্য, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন চীফ টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর ড. মো. গোলাম রব্বানী।

কর্মশালায় প্রকল্পের আওতায় চলমান কার্যক্রম, মাঠপর্যায়ের চ্যালেঞ্জ, দুগ্ধ ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের সুযোগ এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। অংশগ্রহণকারীরা সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন বৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

কর্মশালা শেষে উপদেষ্টা জেলা দুগ্ধ উন্নয়ন ও সহায়তা কেন্দ্র, ডেমো শেড ও দুধের মূল্য সংযোজন ফার্ম এবং বাবুগঞ্জের রহমতপুর বাজারের ওয়েট মার্কেট পরিদর্শন করেন।

ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

মালয়েশিয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্নাতকোত্তর ভিসা প্রদানের সম্ভাবনা রয়েছে

খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

আপডেট সময় ০৪:২৭:২৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫

আলী আহসান রবি
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন,শুধু খাদ্য নিরাপত্তা নয়, খাদ্য নিরাপদ কিনা তা নিশ্চিত করাও জরুরি। প্রাণিসম্পদ খাতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, খামারিদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি নিরাপদ আমিষ উৎপাদনে গুরুত্ব দিতে হবে।

আজ সকালে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আওতাধীন প্রাণিসম্পদ ও দুগ্ধ উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি) এর উদ্যোগে বরিশালের হোটেল গ্র্যান্ড পার্কের কনফারেন্স হলে ‘বিভাগীয় অগ্রগতি পর্যালোচনা কর্মশালা’-তে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

রোগ প্রতিরোধের ওপর জোর দিয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, “হাসপাতাল বাড়িয়ে কোনো লাভ নেই, যদি আমরা খাদ্য নিরাপদ রাখতে না পারি।” নিরাপদ খাদ্যের মাধ্যমে শুধু খাদ্য সমস্যা নয়, স্বাস্থ্য সমস্যাও সমাধান সম্ভব। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও ক্যান্সারের মতো অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে নিরাপদ খাদ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

দুধ উৎপাদন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে সামগ্রিকভাবে দুধ উৎপাদনে ঘাটতি রয়েছে এবং এখনো আমদানি করতে হয়। এলডিডিপি প্রকল্পের মাধ্যমে দুধের উৎপাদন বাড়ালে আমিষ ও প্রাণিজ খাদ্যের ঘাটতি পূরণ হবে। প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের মাধ্যমে দুধের আমদানি বন্ধ করা সম্ভব হবে এবং এতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

প্রাণিসম্পদ খাতে বরিশাল বিভাগের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখানে গরু, ছাগল, হাঁস-মুরগি ও বিশেষ করে মহিষ পালনের বড় সুযোগ রয়েছে। ভোলা জেলায় মহিষের বাথান দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। তিনি আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানির জন্য মহিষের দুধ উৎপাদন ও লালন-পালন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি আরো বলেন, প্রাণিজ আমিষ বিশেষ করে দুধ, ডিম শিশুদের জন্য অপরিহার্য। এই প্রকল্পের আওতায় স্কুল শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ২০০ মি.লি. দুধ সরবরাহ করা হচ্ছে, যা তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও শারীরিক বিকাশে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

পশু খাদ্যের উৎপাদন খরচ প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতে বিদ্যুৎ বিল কৃষি খাতের মত প্রদানের জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। দানাদার খাদ্যের বিকল্প হিসেবে ঘাস উৎপাদন বাড়াতে পারলে উৎপাদন খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।

নারী খামারিদের উদ্দেশে তিনি বলেন, পশু পালনে নারীদের আরো সমৃদ্ধ হতে হবে এবং প্রকল্পের সুযোগ কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তরুণদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, শুধু চাকুরির পেছনে না ছুটে উদ্যোক্তা হতে হবে। আন্দোলনের মাধ্যমে যেমন তরুণরা দেশের চরিত্র বদলে দিয়েছে, তেমনি তারা অর্থনীতিতেও ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে পারবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন, অধিদপ্তরের পরিচালক (সম্প্রসারণ) ডা. বেগম শামছুননাহার আহম্মদ, পরিচালক (উৎপাদন) ড. এ. বি. এম. খালেদুজ্জামান, বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান। এসময় এলডিডিপি প্রকল্পের কর্মকর্তাবৃন্দ, জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রকল্পের প্রডিউসার গ্রুপ (পিজি) সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রকল্প পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন। বরিশাল বিভাগে এলডিডিপি’র কার্যক্রম, সাফল্য, চ্যালেঞ্জ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন চীফ টেকনিক্যাল কো-অর্ডিনেটর ড. মো. গোলাম রব্বানী।

কর্মশালায় প্রকল্পের আওতায় চলমান কার্যক্রম, মাঠপর্যায়ের চ্যালেঞ্জ, দুগ্ধ ও প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের সুযোগ এবং ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। অংশগ্রহণকারীরা সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদন বৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

কর্মশালা শেষে উপদেষ্টা জেলা দুগ্ধ উন্নয়ন ও সহায়তা কেন্দ্র, ডেমো শেড ও দুধের মূল্য সংযোজন ফার্ম এবং বাবুগঞ্জের রহমতপুর বাজারের ওয়েট মার্কেট পরিদর্শন করেন।