
হাফিজুর রহমান শিমুলঃ সাতক্ষীরা-৪ সংসদীয় আসনে কালিগঞ্জ ও শ্যামনগর উপজেলার রাখার দাবীতে উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ও জেলা প্রশাসক বরাবর পৃথক দুটি স্মারকলিপি বৃহস্পতিবার (২১ আগষ্ট-২৫) বেলা ১২টায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অনুজা মন্ডল এর মাধ্যমে প্রদান করা হয়। কালিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক ও জেলা বিএনপির সদস্য শেখ এবাদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব শেখ শফিকুল ইসলাম বাবু, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ লুৎফর রহমান, সাবেক তথ্য বিষয়ক সম্পাদক এম হাফিজুর রহমান শিমুল, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহবায়ক শেখ শাহীন কবীর, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম রেদাওয়ান ফেরদাউস রনি, বিএনপি নেতা শেখ আজাদ, বিএনপি নেতা হাসানুর রহমান, ইসমাঈল হোসেন ও রোকেয়া মনসুর মহিলা কলেজ ছাত্রদলের সম্পাদিকা তোহা প্রমুখ।
স্মারকলিপির মাধ্যমে তাদের দাবী নিন্মে তুলে ধরা হলোঃ-বাংলাদেশের সর্ব বৃহৎ এবং উপকূল বেষ্টিত সুন্দরবন সংলগ্ন উপজেলা শ্যামনগর। এই উপজেলাটি ১৯৭০ সালের নির্বাচন হইতে একটি পৃথক নির্বাচনী এলাকা হিসাবে চিহ্নিত। ১৯৭৩, ১৯৭৯, ১৯৮৬, ১৯৯১, ১৯৯৬ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারী, ১৯৯৬ সালের ১২ই জুন এবং ২০০১ সালের ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত শ্যামনগর উপজেলাটি নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ১০৯, সাতক্ষীরা ৫, নির্বাচনী এলাকা হিসাবে বিদ্যমান ছিল। পরবর্তীকালে ৯ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনাব এটিএম সামছুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন সারাদেশে যে সংসদীয় এলাকার পুনঃবিন্যাস করেন, তাহাতে সাতক্ষীরা জেলায় বিগত ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত যে ০৫টি আসন ছিল উক্ত আসন থেকে একটি আসন কর্তন করিয়া ০৪টি সংসদীয় আসন পুনঃবিন্যাস করা হয়।
সেখানে শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন এবং কালিগঞ্জ উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত কাঁকশিয়ালী নদী দ্বারা বিভক্ত দক্ষিণ পার্শ্বের ৮টি ইউনিয়ন সহ মোট ২০টি ইউনিয়ন নিয়ে সংসদীয় আসনের যে চুড়ান্ত গেজেটে ১০৮, সাতক্ষীরা ৪ (শ্যামনগর কালিগঞ্জের আংশিক) নির্বাচনী এলাকা গঠিত হয়। সে মোতাবেক ২০০৮ সালের ৯ম জাতীয় সংসদ এবং ২০১৪ সালের ১০ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। যাহার ফলে শ্যামনগরের মত বৃহৎ উপজেলা উন্নতি ও অগ্রগতির দিক দিয়ে স্থানীয় জনসাধারণ অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে চরম ভাবে বঞ্চিত হয়। প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও জনগণ চরম ভোগান্তির শিকার হয়। বর্তমানে নির্বাচন কমিশন ১০৭, সাতক্ষীরা ৪, শ্যামনগর ও আশাশুনীকে একত্রিত করে সীমানা নির্ধারণের জন্য প্রাথমিক খসড়া সিদ্ধান্ত গ্রহন করিয়াছেন। যাহাতে এই এলাকার মানুষের মারাত্নক ক্ষতির সম্ভাবনা বিদ্যমান। শ্যামনগর ও আশাশুনীর সাথে সরাসরি কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা নেই কেননা একাধিক নদী দ্বারা বিভক্ত।
যদি শ্যামনগর আশাশুনি আসন বহাল থাকে তাহলে শ্যামনগর নির্বাচনী এলাকা থেকে কালিগঞ্জ উপজেলা অথবা কাশিমাড়ী ইউনিয়ননের ঘোলা ত্রিমোহনী নদী অতিক্রম করে আশাশুনীতে যেতে হবে। ভৌগলিক দিক দিয়ে আশাশুনী একদিকে খুলনা জেলার কয়রা, পাইকগাছা অপর দিকে সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা পাশ্ববর্তী পর্যন্ত অবস্থিত। অপর দিকে শ্যামনগরের এক দিকে ভারত, আরেকদিকে বঙ্গোপসাগর অবস্থিত। আশাশুনী এবং শ্যামনগরের মধ্যে নদী বেষ্টিত থাকায় সাধারণ মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে খুবই অসুবিধা। এই দুই উপজেলা উপকূলবর্তী হওয়ায় প্রাকৃতিক দূর্যোগের সময় মারাত্নক ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং মারাত্নকভাবে জনপদ গুলি অবহেলিত। যাতায়াত ব্যবস্থা ভাল না থাকায় অনেক অনেক এলাকায় এখনও পর্যন্ত উন্নয়নের আঁচ পড়েনি। এমতাবস্থায় যদি আশাশুনি ও শ্যামনগর একিভূত করা হয় তাহলে সাধারণ জনগণের যাতায়াত ও প্রাশনিক দিক থেকে মারাত্নক ক্ষতি হবে। সে কারণে জনসাধারণের জনদূর্ভোগ ও প্রশাসনিক ঝামেলা এড়াতে পূর্বের ন্যায় সংসদীয় আসন ১০৮, সাতক্ষীরা-৪ শ্যামনগর ও কালিগঞ্জ হিসাবে বলবৎ রাখা আশু প্রয়োজন। এই প্রয়োজনবোধে প্রশাসনিক ঝামেলা এড়াতে শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের সাথে কালিগঞ্জ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন একিভূত করা যায় সে ব্যাপারে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক সংসদীয় আসন বিন্যাসে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার লক্ষ্যে আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করিতেছি।