
পুলিশ দেশের জনগণের পয়সায় তাদেরই নিরাপত্তা ও স্বার্থ রক্ষার মহান দায়িত্বে নিয়োজিত হলেও তার পরিবর্তে আজ তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষার সর্বাত্মক ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।
রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সমগ্র এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজি, খুন, মাদকসহ নানাবিধ অপরাধের সয়লাব বয়ে গেলেও পুলিশদের সে দিকে ভ্রূক্ষেপ করার অবসর নেই।
কারণ আইনশৃঙ্খলা পরিসি’তির ওপর ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেলেও নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার জন্য এবং নিজেদের নিরাপত্তাই তাদের কাছে যথেষ্ট।
যখন যে সরকার ক্ষমতায় আসে তখন সে সরকার তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার কাজে ব্যবহার করে পুলিশকে। এবং পুলিশও খুশি হয়ে ঘায়েল করার কাজে ব্যস্ত থাকে।আমি কবির নেওয়াজ রাজ – পুলিশের কাছে আমার প্রশ্ন হলো, পুলিশ কি সারা জীবন সরকারের কেনা গোলাম হয়েই থাকবে? ব্যবহৃত হবে ক্ষমতায় টিকে থাকার হাতিয়ার হিসেবে? অথবা সরকার পরিবর্তনের সূত্র ধরে শরীর ব্যবসায়ীদের মতো তারাও বদল হতে থাকবে এ হাত থেকে ও হাতে? পুলিশ তাহলে কার- সরকারের না জনগণের? সরকার জনগণের ভোটের ক্ষমতার অধীন। পুলিশও জনগণের অর্থের অধীন, সরকারের নয়। অতএব, পুলিশ যে সরকার বাহাদুরের নির্দেশে এ অন্যায় অ্যাসাইনমেন্ট বাস্তবায়ন করছে তাদের সে অন্যায় অধীনতা থেকে মুক্ত হওয়ার সময় এসেছে। জনগণের স্বার্থ রক্ষাকেই একমাত্র ও আসল অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে গ্রহণ করতে হবে।
রাষ্ট্র্র্রের অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব পুলিশের। বাংলাদেশ পুলিশ তাদের শুরু থেকে অদ্যাবধি অনেক সুনাম-বদনাম কুড়িয়েছে এবং আলোচনা-সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছে। ৫৫ বছরের পথচলায় বিভিন্ন ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের জন্য যেমনি তাদের মর্যাদা বেড়েছে, ভাবমূর্তি উন্নত হয়েছে তেমনি অগণিত নেতিবাচক অপেশাদারসুলভ কর্মকাণ্ডের জন্য ভূলুণ্ঠিত ও কলঙ্কিত হয়েছে নিজেদের ইতিহাস-ঐতিহ্য। তবে পুলিশ বাহিনীর এ যাবৎকালের সব রেকর্ড ছাপিয়ে নতুন এক অপ্রত্যাশিত কালো অধ্যায়ের সৃষ্টি হয়েছে ।
এটি মনে রাখতে হবে, যারা বিভিন্ন দলের গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে তারাও এ দেশের জনগণ। সুতরাং পুলিশ বাহিনী বাধ্য সরকার, বিরোধী দল নির্বিশেষে জনগণের স্বার্থে কাজ করতে, কোনো ব্যক্তি, দল বা আদর্শের স্বার্থে নয়।
বিগত দেড় যুগে সাধারণ মানুষের সাথে পুলিশের অন্যায় আচরণ নিয়ে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন মহলে এত বেশি প্রশ্ন উঠেছে, যা অতীতে তাদের অর্জিত সুনাম-সুখ্যাতিকে ম্লান করে দিয়েছে।আমি কবির নেওয়াজ রাজ মনে করি দলবাজ পুলিশদের কখনও কোথাও সুবিধা দেওয়া ঠিক হবে না। আশা করি, সরকারের নীতিনির্ধারকরা বিষয়গুলো ভেবে দেখবেন।
যারা দলনিরপেক্ষ ও মেধাবী পুলিশ অফিসার , তাদেরকে মূল্যায়ন করা উচিত। আর যারা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতেই হবে। এজন্য প্রয়োজনে বিদ্যমান আইন প্রয়োগ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা জরুরি, যাতে কোনো পুলিশ সদস্য যেন অন্যায়ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।
বিশ্লেষকদের মতে, দীর্ঘসময় ধরে নির্বাচিত রাজনৈতিক সরকার না থাকার বিষয়টিকে সুকৌশলে স্বার্থ হাসিলের সুযোগ হিসেবেও কাজে লাগাচ্ছেন পুলিশ বাহিনীর অনেক সদস্যরা।
পুলিশের উদ্দেশ্যে শেষ চারটি লাইন…
পুলিশ তুমি যদি আমজনতার হও
থাকবে জনগনের হৃদয় মাঝে
পুলিশ তুমি যদি বিবেকবান হও
তখন মানুষ তোমাদের খুঁজবে….
লেখক : কবির নেওয়াজ রাজ
এমএসএস” রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সিসি” জার্নালিজম, এলএলবি।
কোষাধ্যক্ষ
বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন