
স্টাফ রিপোর্টার: মহিলা ও শিশু বিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তৃতায় বেগম রোকেয়ার রাষ্ট্র ও সমাজ গড়ার ভাবনার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, বাঙালি নারী জাগরণের বিশেষকরে মুসলিম নারী জাগরণের অগ্রদূত শুধু নয়, বেগম রোকেয়া নারীদের অগ্রজ ও সাহসী সৈনিক এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে স্বপ্ন তরুণ প্রজন্ম তোমরা ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে দেখিয়েছো, সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে তোমাদের প্রজন্মের সাহস ও ত্যাগ অনস্বীকার্য। তোমরা প্রতিকূলতার সামনেও মাথা নত করোনি, শোষণ ও বৈষম্য মুক্ত একটি দেশের জন্য তোমরা মেয়েরা ছিলে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ এর বিপ্লবে মেয়েদের যে নারী জাগরণ আমরা দেখতে পেয়েছি, তোমাদের আমরা হারিয়ে যেতে দেবো না, তোমাদের যারা স্নাতকোত্তর অর্জন করেছো, তোমাদের জন্য নারী ও শিশু মন্ত্রণালয়ে ইন্টারনি খোলার ব্যবস্থা করা হবে যাতে তোমরা এই মন্ত্রণালয়ের ইন্টারনির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন , সমাজে মানুষের কল্যাণমূলক কাজ সম্পর্কে গবেষণা করতে পারবে।
তিনি আজ রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তৃতায় এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডক্টর চৌধুরী রফিকুল আবরার, বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান। সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড.পারভীন হাসান। অনুষ্ঠানে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান , সদস্যবৃন্দ, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ বিশিষ্টজনেরা অংশ নেন।
উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন অনুমোদিত শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য দেশের এই অনন্য বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তনে উপস্থিত হতে পেরে আমি আনন্দিত। আজকের এই বিশেষ দিনে স্নাতক হওয়া শিক্ষার্থীদের সবাইকে জানাই প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। এই দিনটি শুধুমাত্র একটি আনুষ্ঠানিকতা নয় বরং এটি একটি অর্জনের মুহূর্ত এবং একইসঙ্গে একটি নতুন যাত্রার সূচনা। যারা আজ শিক্ষাজীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় শেষ করেছো, তাদের প্রতি রইল আমার আন্তরিক শুভকামনা।
তিনি বলেন, তোমাদের মনে রাখতে হবে শিক্ষা মানুষের শুধু ডিগ্রি দেয় না, মানুষকে সচেতন ও দায়িত্ববান করে তোলে। শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো সত্যের সন্ধান, ন্যায়ের প্রতি অঙ্গীকার এবং সমাজ ও পরিবেশের প্রতি দায়বদ্ধতা সৃষ্টি করা । সমাবর্তনের মুহূর্তে শুধু নিজের জন্য নয়, গোটা সমাজ ও পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশেকে নতুনভাবে পরিচয় করে তুলতে আমি তোমাদের আহ্বান জানাই। আমি বিশ্বাস করি প্রতিটি শিক্ষার্থীই একজন সম্ভাব্য পরিবর্তনের দূত। সমাজে, রাষ্ট্রে , বিশ্বে তোমরা ন্যায় ও অন্যায়ের পক্ষে অবস্থান নেবে। প্রশ্ন করবে, প্রতিবাদ করবে, প্রয়োজনে নেতৃত্ব দেবে। একসাথে আমরা বাংলাদেশকে সকল শোষণ ও বৈষম্য থেকে মুক্ত করবো। এমন একটি দেশ গড়ে তুলবো যা ন্যায়বিচার, আইনের শাসন নিশ্চিত করে এবং বিশ্বে অনুকরণীয় উদাহরণ সৃষ্টি করে। এই দেশ আমাদের সবার, সবাই মিলে কাজ করি নতুন বাংলাদেশের জন্য এ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।