ঢাকা ০৩:৫৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo আইসেসকোকে বাংলাদেশে ইসলামিক কালচার অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টার প্রতিষ্ঠার আহ্বান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার Logo ৩২টি চলচ্চিত্রকে মোট ৯ কোটি টাকা অনুদান প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় Logo যাত্রাবাড়ীতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুই আসামীকে গ্রেফতার করেছে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ Logo বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন , হাসিনার আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছিল ডাকাতদের গ্রাম Logo জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল বাংলাদেশের ঐতিহাসিক পটপরিবর্তন Logo কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের কার্যালয় থেকে আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার আবেদনের প্রেক্ষিতে অস্ত্রের লাইসেন্সে দেওয়া হয় Logo পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সাথে টেলিফোনে কথা বলেছেন Logo জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী কর্মসূচির উদ্বোধনী ঘোষণা Logo “জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি” চালু করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় Logo জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী উপলক্ষে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী উপলক্ষে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৫:৩৮:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫
  • ৫৩১ বার পড়া হয়েছে

আলী আহসান রবি: ০১ জুলাই, ২০২৫, আজ ইতিহাসের এক গৌরবময় ক্ষণ। এক বছর আগে, এই জুলাই মাসে আমাদের শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন শুরু করেছিল তা এক অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থান রচনা করে আমাদের মুক্তির স্বাদ দিয়েছিল। জুলাই ছিল দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে এক অমোঘ ডাক, এক জনতার জাগরণ। সেই আন্দোলনের মর্মবাণী ছিল— “ফ‍্যাসিবাদের বিলোপ করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ, রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া।”

আজকে আমরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে স্মরণ করার অনুষ্ঠানমালা নিয়েছি। এটা শুধু ভাবাবেগের বিষয় নয়, ক্ষোভ প্রকাশের বিষয় নয়। আমরা ১৬ বছর পরে বিরাট বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলাম যে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এবং যে কারণে অভ্যুত্থান হয়েছিল তাৎক্ষণিক যেটা টার্গেট ছিল সেটা আমরা পূরণ করতে পেরেছি। কিন্তু তার পেছনে ছিল একটা বিরাট স্বপ্ন- নতুনভাবে রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণ, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ।

আমরা প্রতি বছর এই সময়কালটা উদযাপন করব যাতে পরবর্তীতে ১৬ বছর আমাদের অপেক্ষা করতে না হয় আবার এই অভ্যুত্থান করার জন্য। আমরা প্রতি বছর এটা করব যাতে কোনো স্বৈরাচারের কোনো চিহ্ন দেখা গেলে সেটা তাৎক্ষণিকভাবে আমরা বিনাশ করতে পারি সেটার জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বৈরাচারের প্রথম পাতা মেলার আগেই যেন আমরা তাকে ধরে ফেলতে পারি। ১৬ বছর যেন আমাদের অপেক্ষা করতে না হয়।

আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সেই সব তরুণ-তরুণী, নারী-পুরুষ, শিশু- বৃদ্ধ, কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক, রিকশাচালকদের—যারা রাস্তায় নেমে গণতন্ত্রের পতাকা উঁচিয়ে ধরেছিলেন; সাহস, ত্যাগ আর দৃঢ়তার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন।
আমরা আজ মাসব্যাপী যে কর্মসূচির সূচনা করছি, তা শুধুই স্মরণ নয়, বরং একটি নতুন শপথ। গত বছরের জুলাইয়ে এ দেশের সকল শ্রেণি-পেশা-বয়সের মানুষের মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছিল আমরা চাই এই জুলাইয়ে সেই ঐক্য আবার সুসংহত হোক।

আমাদের এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য— জনগণকে গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা, রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার দাবি জানানো এবং রক্তের বিনিময়ে পাওয়া সংস্কারের এই সুযোগকে হারিয়ে না ফেলা।
আমাদের সামনের পথ অনেক কঠিন, কিন্তু মস্ত বড় সম্ভাবনাও আছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, জনগণ যখন জেগে ওঠে, তখন কোনো শক্তিই তাদের রুখে দিতে পারে না।

সেই বিশ্বাস নিয়েই আমি আপনাদের আহ্বান জানাই— আসুন, এই জুলাই মাসকে পরিণত করি গণজাগরণের মাসে; ঐক্যের মাসে।
এই অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে জুলাই-আগস্ট মাসজুড়ে আমরা গত বছরের প্রতিটি দিনকে আবার পুনরুজ্জীবিত করব যে লক্ষ্যে আমাদের তরুণ ছাত্ররা, জনতা, রিকশাচালক, শ্রমিকরা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে আবার নতুন করে শপথ নেব- এই অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে। এবং এটা আমরা প্রতি বছর করব, যাতে স্বৈরাচার আবার কোনোরকমে মাথাচাড়া দিতে না পারে।

জুলাই-আগস্টের পুনরুত্থান কর্মসূচি সফল হোক। এর মাধ্যমে আমাদের স্বপ্ন আবার নতুন করে জেগে উঠুক। আমাদের ঐক্য আমাদের সর্বমুখী হোক, অটুট হোক এই হোক আমাদের এই অনুষ্ঠানমালার লক্ষ্য।

এই লক্ষ্য সামনে রেখে আমি জাতির পক্ষ থেকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পুনরুত্থান কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করছি।
মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

আইসেসকোকে বাংলাদেশে ইসলামিক কালচার অ্যান্ড ল্যাঙ্গুয়েজ সেন্টার প্রতিষ্ঠার আহ্বান যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাসব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধনী উপলক্ষে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার ভাষণ

আপডেট সময় ০৫:৩৮:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ জুলাই ২০২৫

আলী আহসান রবি: ০১ জুলাই, ২০২৫, আজ ইতিহাসের এক গৌরবময় ক্ষণ। এক বছর আগে, এই জুলাই মাসে আমাদের শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন শুরু করেছিল তা এক অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থান রচনা করে আমাদের মুক্তির স্বাদ দিয়েছিল। জুলাই ছিল দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে এক অমোঘ ডাক, এক জনতার জাগরণ। সেই আন্দোলনের মর্মবাণী ছিল— “ফ‍্যাসিবাদের বিলোপ করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ, রাষ্ট্রকে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া।”

আজকে আমরা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে স্মরণ করার অনুষ্ঠানমালা নিয়েছি। এটা শুধু ভাবাবেগের বিষয় নয়, ক্ষোভ প্রকাশের বিষয় নয়। আমরা ১৬ বছর পরে বিরাট বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলাম যে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এবং যে কারণে অভ্যুত্থান হয়েছিল তাৎক্ষণিক যেটা টার্গেট ছিল সেটা আমরা পূরণ করতে পেরেছি। কিন্তু তার পেছনে ছিল একটা বিরাট স্বপ্ন- নতুনভাবে রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণ, নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ।

আমরা প্রতি বছর এই সময়কালটা উদযাপন করব যাতে পরবর্তীতে ১৬ বছর আমাদের অপেক্ষা করতে না হয় আবার এই অভ্যুত্থান করার জন্য। আমরা প্রতি বছর এটা করব যাতে কোনো স্বৈরাচারের কোনো চিহ্ন দেখা গেলে সেটা তাৎক্ষণিকভাবে আমরা বিনাশ করতে পারি সেটার জন্য এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্বৈরাচারের প্রথম পাতা মেলার আগেই যেন আমরা তাকে ধরে ফেলতে পারি। ১৬ বছর যেন আমাদের অপেক্ষা করতে না হয়।

আজকের এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি সেই সব তরুণ-তরুণী, নারী-পুরুষ, শিশু- বৃদ্ধ, কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক, রিকশাচালকদের—যারা রাস্তায় নেমে গণতন্ত্রের পতাকা উঁচিয়ে ধরেছিলেন; সাহস, ত্যাগ আর দৃঢ়তার প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন।
আমরা আজ মাসব্যাপী যে কর্মসূচির সূচনা করছি, তা শুধুই স্মরণ নয়, বরং একটি নতুন শপথ। গত বছরের জুলাইয়ে এ দেশের সকল শ্রেণি-পেশা-বয়সের মানুষের মধ্যে যে ঐক্য তৈরি হয়েছিল আমরা চাই এই জুলাইয়ে সেই ঐক্য আবার সুসংহত হোক।

আমাদের এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য— জনগণকে গণতান্ত্রিক অধিকার সম্পর্কে সচেতন করা, রাজনৈতিক দায়বদ্ধতার দাবি জানানো এবং রক্তের বিনিময়ে পাওয়া সংস্কারের এই সুযোগকে হারিয়ে না ফেলা।
আমাদের সামনের পথ অনেক কঠিন, কিন্তু মস্ত বড় সম্ভাবনাও আছে। ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, জনগণ যখন জেগে ওঠে, তখন কোনো শক্তিই তাদের রুখে দিতে পারে না।

সেই বিশ্বাস নিয়েই আমি আপনাদের আহ্বান জানাই— আসুন, এই জুলাই মাসকে পরিণত করি গণজাগরণের মাসে; ঐক্যের মাসে।
এই অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে জুলাই-আগস্ট মাসজুড়ে আমরা গত বছরের প্রতিটি দিনকে আবার পুনরুজ্জীবিত করব যে লক্ষ্যে আমাদের তরুণ ছাত্ররা, জনতা, রিকশাচালক, শ্রমিকরা শহীদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন, সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে আবার নতুন করে শপথ নেব- এই অনুষ্ঠানমালার মাধ্যমে। এবং এটা আমরা প্রতি বছর করব, যাতে স্বৈরাচার আবার কোনোরকমে মাথাচাড়া দিতে না পারে।

জুলাই-আগস্টের পুনরুত্থান কর্মসূচি সফল হোক। এর মাধ্যমে আমাদের স্বপ্ন আবার নতুন করে জেগে উঠুক। আমাদের ঐক্য আমাদের সর্বমুখী হোক, অটুট হোক এই হোক আমাদের এই অনুষ্ঠানমালার লক্ষ্য।

এই লক্ষ্য সামনে রেখে আমি জাতির পক্ষ থেকে জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পুনরুত্থান কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষণা করছি।
মহান আল্লাহ আমাদের সহায় হোন।