
আলী আহসান রবি: ২৮ এপ্রিল , ২০২৫ প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাপরিস্থিতি দেখে এখনো মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনো তাদের জন্য ভালো সমাধান। কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আল–জাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেছেন তিনি।
রোববার ‘মুহাম্মদ ইউনূস: রিয়েল রিফর্ম অর জাস্ট আ নিউ রুলিং ক্লাস ইন বাংলাদেশ?’ শিরোনামে এই সাক্ষাৎকার আল–জাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
উপস্থাপক বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টাকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে শেখ হাসিনার পতনের পরের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অন্যরা রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে। যেমন লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী রয়েছে। এর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারে?
সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে আছেন। সেখানে বসে বিভিন্ন উসকানিমূলক কথা বলছেন। সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সংবাদমাধ্যম আলজাজিরার সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার (২৭ এপ্রিল) আলজাজিরায় প্রধান উপদেষ্টার এই ভিডিও সাক্ষাৎকার প্রকাশ করা হয়েছে।
সাক্ষাৎকারে আল জাজিরার সাংবাদিক নিয়েভ বার্কার শেখ হাসিনাকে নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। তখন তার বিভিন্ন বক্তব্য ও বিবৃতি দেওয়ার বিষয়টি উঠে আসে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। কিন্তু জবাবে মোদি বলেছিলেন তিনি এটি পারবেন না। কারণ ভারতে সবাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে। এটি সবার জন্য উন্মুক্ত। অর্থাৎ শেখ হাসিনা সামাজিকমাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।
আল জাজিরার সাংবাদিক বলেন, ‘শেখ হাসিনা দাবি করেন তিনি এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তিনি ভারত থেকে এসব বিবৃতি দিচ্ছেন। অন্তর্বর্তী সরকার ভারতে তার অবস্থানকে কীভাবে দেখে?’
জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলন হয়েছিল। যেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ বিমসটেকভুক্ত দেশের সব সরকারপ্রধান এসেছিলেন। তার সঙ্গে আমার কথা হয় এবং আমি তাকে স্পষ্ট করি, ঠিক আছে, যদি শেখ হাসিনাকে আপনি রাখতে চান। তাহলে এ বিষয়ে আপনার সঙ্গে আমি কিছু করতে পারব না। কিন্তু অবশ্যই তিনি যখন সেখানে থাকবেন, তার কথা বলা উচিত হবে না। কারণ তার বক্তব্য আমাদের জন্য সমস্যার সৃষ্টি করে। তিনি বক্তব্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষকে উত্তেজিত করেন। আর এজন্য আমাদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।”
আল জাজিরার সাংবাদিক নিয়েভ বার্কার তখন জিজ্ঞেস করেন মোদি কী বলেছিলেন?
জবাবে ড. ইউনূস বলেন, ‘তিনি বলেছিলেন- ভারত হলো এমন দেশ যেখানে সামাজিকমাধ্যম সবার জন্য উন্মুক্ত। আমি এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না।’