
নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর মুগদা এলাকা থেকে এক আইনজীবীকে অপহরণ করার পর খুন-জখমের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায়ের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে ডিএমপির যাত্রাবাড়ী থানা।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- ১। রবিন দাশ (৩৮) ২। মোঃ জনি মুস্তাকিম (২৩) ও ৩। মোঃ শাহজালাল।
শুক্রবার (৯ মে ২০২৫খ্রি.) রাত আনুমানিক ০৯:৩০ ঘটিকায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও ডেমরা এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
মুগদা থানা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী আইনজীবী দীলিপ কুমার মল্লিক তার ছেলের ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রায় নয় মাস ধরে যাত্রাবাড়ী এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকছেন। গত ৭ মে ২০২৫ তারিখ রাত আনুমানিক ১:৩০ ঘটিকায় কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে পায়ে হেঁটে বাসায় ফেরার পথে মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মোড়ে অজ্ঞাতপরিচয় ৪-৫ জন তাকে জোরপূর্বক একটি সাদা প্রাইভেটকারে তুলে নিয়ে চোখ ও মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে অজ্ঞাত একটি ভবনের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে যায়। সেখানে অপহরণকারীরা তাকে মারধর করে এবং খুন-জখমের ভয় দেখিয়ে ৩০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা দিতে অস্বীকার করায় তারা তাকে আরও মারধর করে এবং আটক রাখে। এ সময় তারা তার মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং তার স্ত্রী হাসি রানী মৈত্র্যকে ফোন করে চাঁদা দাবি করে। ভুক্তভোগীর স্ত্রী বিভিন্ন উৎস থেকে ১ লাখ টাকা সংগ্রহ করে ৮ মে ২০২৫ তারিখ রাত ৮:০০ ঘটিকা থেকে ৮:৩০ ঘটিকার মধ্যে বাগেরহাটের কচুয়া বাজারের একটি বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে অপহরণকারীদের বিকাশ নম্বরে পাঠান। টাকা পাওয়ার পর অপহরণকারীরা দীলিপের কাছ থেকে দুটি সাদা স্ট্যাম্পে টিপসই ও স্বাক্ষর নিয়ে ৯ মে ২০২৫ তারিখ রাত ৯:৩০ ঘটিকার দিকে একটি সিএনজিচালিত ট্যাক্সিতে তুলে দেয়। ট্যাক্সিচালক তাকে মুগদা বিশ্বরোডে নামিয়ে দেয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর ছেলে দীপ্ত মল্লিক তার পিতা নিখোঁজের ঘটনায় ৭ মে ২০২৫ তারিখ যাত্রাবাড়ী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
থানা সূত্রে আরও জানা যায়, জিডি তদন্তকালে যাত্রাবাড়ী থানার একটি চৌকস দল যাত্রাবাড়ীর কোনাপাড়া এলাকা থেকে মোঃ শাহজালালকে এবং ডেমরা থানা পুলিশের সহযোগিতায় রবিন দাশ ও মোঃ জনি মুস্তাকিমকে ডেমরা এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের সময় ধস্তাধস্তিতে গ্রেফতারকৃরা আহত হলে তাদের মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। অপহরণের ঘটনাস্থল মুগদা এলাকায় হওয়ায় যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশ তাদের মুগদা থানায় হস্তান্তর করে। পরবর্তীতে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দীলিপ কুমার মল্লিকের অভিযোগের প্রেক্ষিতে মুগদা থানায় একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।
মুগদা থানা সূত্রে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা একটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা ভুক্তভোগীকে অপহরণ করার পর খুন-জখমের ভয় দেখিয়ে চাঁদা আদায় করেছে মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে। পলাতক অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।