
রাণীনগর (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর রাণীনগরে ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা মকলেছুর রহমান বাবুর বিরুদ্ধে ডিগ্রি পাশের ভুয়া সনদ দিয়ে ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি তার সনদটি যাচাইয়ে ভুয়া বলে তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়।
তার বিরুদ্ধে অভিযোগ- বিদ্যালয়ের এ্যাডহক (ম্যানেজিং) কমিটির সভাপতি পদের লোভে জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন মকলেছুর রহমান বাবু। বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্বিবিদ্যালয়ের ডিগ্রি পাশের (বিএসএস) প্রোগ্রামের ভুয়া সনদ তৈরি করে দাখিল করেছেন। ইউপি চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা মকলেছুর রহমান বাবুর ভুয়া সনদ কান্ড নিয়ে সর্বমহলে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। মখলেছুর রহমান বাবু উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।
জানা গেছে, উপজেলার ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয়ের (ম্যানেজিং) কমিটি গঠনের জন্য শিক্ষা বোর্ড থেকে প্রতিষ্ঠান প্রধানের কাছে নিদের্শনা দেওয়া হয়। এরপর প্রতিষ্ঠান প্রধান বিদ্যালয়ের শিক্ষক, অভিভাবক ও স্থানীয়দের বিষয়টি অবহিত করলে তারা আলোচনা সাপেক্ষে সভাপতি পদে তিনজনের নাম প্রস্তাব করেন। যথাযথ নিয়মে বিদ্যালয়টির কমিটি গঠনের জন্য তিনজন সভাপতি প্রার্থীর কাছ থেকে ডিগ্রি (স্নাতক) পাশের সনদসহ প্রয়োজনীয় কাজগপত্র সংগ্রহ করে সভাপতি পদে তিনজনের নাম জানুয়ারি মাসে সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে শিক্ষা বোর্ডে পাঠান প্রতিষ্ঠান প্রধান। নাম পাঠানো তিনজন সভাপতি প্রার্থীর মধ্যে চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান বাবু একজন প্রার্থী। তিনি ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হওয়ার জন্য বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি পাশের (বিএসএস) প্রোগ্রামের সনদ জমা দেন। এরপর অন্য প্রার্থীর মধ্যে বাবুর ডিগ্রি পাসের সনদ নিয়ে শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। একপর্যায়ে অপর দুই সভাপতি প্রার্থীর মধ্যে একজন প্রার্থী তার সনদের বৈধতা যাচাইয়ের জন্য জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তার জমাকৃত সনদটি যাচাইয়ের জন্য উন্মুক্ত বিশ্বিবিদ্যালয়ে প্রেরণ করে। তদন্তে বেরিয়ে আসে চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান বাবুর দাখিলকৃত সনদটি ভুয়া।
ডিগ্রি পাশের সনদ সম্পর্কে জানতে চাইলে মকলেছুর রহমান বাবু বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কাছে কোন সনদ জমা দিইনি। তিনি কোথায় সনদ পেয়েছেন তা আমি জানিনা। এই বিষয়ে তিনিই বলতে পারবেন। আর আমার সনদ ঠিক আছে।
উপজেলার ত্রিমোহনী উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল মোত্তালিব বলেন, আমার কাছে চেয়ারম্যান তার প্রতিনিধির মাধ্যমে উন্মুক্তের ডিগ্রি পাশের সনদসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়েছিলেন। তিনজন সভাপতি প্রার্থীর নাম ও কাগজপত্র সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে শিক্ষা বোর্ডে পাঠিয়েছি। তার সনদ সঠিক না ভুয়া তা আমি জানিনা।
জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) শাহাদাৎ হোসেন বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে তার সনদটি যাচাইয়ের জন্য উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রেরণ করা হয়। সেখান থেকে তার সনদটি জাল বলে প্রতিবেদন দিয়েছে।