
স্টাফ রিপোর্টার: লিসানুল আলম পারিবারিক রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে ছাত্রদলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে। বিএনপির দুঃসময়ে পাশে থাকা, ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের সময় বাবার কারাবাস এবং নিজ বাড়ি ছাড়া অবস্থান, ২৮ অক্টোবরের সমাবেশ পরবর্তী আন্দোলনসহ সাম্প্রতিক জুলাই আন্দোলনেও তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। তবে পাঁচ আগস্ট পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও নানা ঘটনায় তিনি হতাশ। হয়েছে তার বিশ্বাসভঙ্গের অভিজ্ঞতাও। শুধু বিএনপিকে নয়, লিসান তার বিশ্বাসভঙ্গের জন্য দায়ী করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি, এই পার্টির নেতা আব্দুল হান্নান মাসউদ ও জামায়াতকেও। লিসান বলেন, “দেশটাকে নতুনভাবে বিনির্মাণের পরিবর্তে সবাই যার যার মতো করে নিজের স্বার্থে ও ভোগের রাজনীতিতে নেমেছে। বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি—কেউই এ দায় থেকে মুক্ত নয়।” এসব কারণে তিনি আহসানুল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। ফেসবুক পোস্টে তিনি জানান, আমার একটাই স্বপ্ন ছিল—নতুন বাংলাদেশের বিনির্মাণ এবং একটি সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলা।” কিন্তু ৫ আগস্টের গণআন্দোলনের পর রাজনৈতিক দলগুলোর ভূমিকা তাকে হতাশ করেছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তিনি অভিযোগ করেন, আন্দোলনের চেতনা ভুলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল চাঁদাবাজি ও আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনে লিপ্ত হয়েছে। নিজ উপজেলা হাতিয়ার উদাহরণ টেনে তিনি দাবি করেন, সেখানে ৫ আগস্টের পর ভয়াবহ চাঁদাবাজি এবং ক্ষমতাসীনদের পুনর্বাসনের ঘটনা ঘটেছে, যার পেছনে বিএনপি ও এনসিপির নেতাদের হাত রয়েছে। তিনি এনসিপির হান্নান মাসুদের নাম উল্লেখ করে বলেন, “এই তরুণ নেতা চাইলে রাজনীতির পটভূমিই বদলে দিতে পারতেন। কিন্তু তিনিও চাঁদাবাজি ও সুবিধাবাদী রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন।” তবে তিনি এও স্বীকার করেন যে, সকল রাজনৈতিক দলেই কিছু সৎ ও নিষ্ঠাবান মানুষের দেখা তিনি পেয়েছেন এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। তার ভাষায়, “আমরা যারা দীর্ঘদিন ধরে এদেশে গঠনতান্ত্রিক রাজনীতির স্বপ্ন দেখেছি, প্রকৃত দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছি, এটা আমাদের ব্যর্থতা।” রাজনীতিতে কখনো সচেতনভাবে কারও ক্ষতি করেননি বলেও দাবি করেন তিনি। যদি কখনো কোনো ভুল করে থাকেন, সে জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন। শেষে তিনি বলেন, “যেদিন প্রকৃত স্বচ্ছ বাংলাদেশ বিনির্মাণের ডাক আসবে, সেদিন আমি আপনাদের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থাকবো মিছিলের অগ্রভাগে—প্রথম বুলেটের শিকার হতে প্রস্তুত। এদেশের মাটির ঊর্ধ্বে আমার কাছে কিছুই মূল্যবান নয়। বাংলাদেশ জিন্দাবাদ।