ঢাকা ০৮:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫, ২৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo কমলগঞ্জে ছোট ভাইয়ের দা’এর কোপে বড় ভাই রাফি খুন Logo রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে থেকে পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতার সাথে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে Logo সিএমপি’তে সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo গাজীপুরে যৌথ অভিযান: ১২০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, ১.৯৫ একর বনভূমি পুনরুদ্ধার Logo সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে জেলা প্রেসক্লাব পিরোজপুরের মানববন্ধন Logo মধ্যনগর থানা পুলিশের বিশেষ অভিযানে অবৈধ বালু উত্তোলনের নৌকাসহ ৮ জন আটক Logo মধ্যনগরে জিয়া সৈনিক দলের নতুন কমিটি গঠনের আনুষ্ঠানিক অনুমোদন Logo নিরাপদে রাস্তা ব্যবহারের নিয়ম কানুন সম্পর্কে ছাত্রছাত্রীদেরকে অবহিতকরণ কর্মসূচি Logo খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে হবে -মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা Logo কাফরুলে নারী খুন, অভিযুক্ত সাবেক স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ

কমলগঞ্জে ছোট ভাইয়ের দা’এর কোপে বড় ভাই রাফি খুন

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:১৪:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫২৫ বার পড়া হয়েছে
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নৃশংসতার চূড়ান্ত উদাহরণ দেখা গেল। মাত্র ৫০০ টাকা না দেওয়া ও দীর্ঘদিনের পারিবারিক টানাপোড়েনের জেরে বড় ভাইকে ঘুমের মধ্যে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে আপন ছোট ভাই। পুলিশ ইতোমধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটন করে ১৬ বছরের কিশোর খুনিকে গ্রেফতার করেছে এবং হত্যার আলামত উদ্ধার করেছে।
শনিবার ৯ আগষ্ট সকালে কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের সিদ্ধেশ্বরপুর গ্রামে আব্দুর রহিম রাফি (২৬)-এর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) নোবেল চাকমা, শ্রীমঙ্গল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান এবং কমলগঞ্জ থানার ওসি আবু আফর মোঃ মাহফুজুল কবির ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। গোপন তথ্য, প্রযুক্তি এবং স্থানীয়দের বক্তব্যের ভিত্তিতে সেদিনই নিহতের ছোট ভাইকে আটক করা হয়।
প্রথমে অপরাধ অস্বীকার করলেও পরে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার নৃশংস বর্ণনা দেয় সে। স্বীকারোক্তিতে জানায়, ঘটনার আগের দিন বড় ভাইয়ের কাছে ৫০০ টাকা চাইলে না দিয়ে উল্টো গালিগালাজ করে রাফি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পরদিন সকালে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে খাটের নিচে রাখা ধারালো দা বের করে ঘুমন্ত বড় ভাইয়ের ঘাড়ে উপর্যুপরি কোপ মেরে হত্যা করে। হত্যার পর দা ধুয়ে আবার খাটের নিচে রেখে দেয় এবং নিজের রক্তমাখা লুঙ্গিও সেখানে লুকিয়ে রাখে। এরপর যেন কিছুই হয়নি এমনভাবে স্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে।
তদন্তে আরও জানা যায়, এই হত্যার নেপথ্যে শুধু টাকা নয়, বহু দিনের ক্ষোভ জমে ছিল। বাবা মারা যাওয়ার পর বড় ভাই অভিভাবকের ভূমিকা পালন করত এবং ছোট ভাইকে মাদ্রাসায় রেখে পড়াশোনা করাতে চাইত। কিন্তু সে পড়াশোনায় অনীহা দেখিয়ে বাড়িতেই বেশি থাকত। এ নিয়ে নিয়মিত শাসন করত বড় ভাই, যা ছোট ভাই মেনে নিতে পারত না। এছাড়া পারিবারিক অমতে রাফির বিয়ে এবং তার পরবর্তী সময়ে মা, ভাই ও ভাবীর মধ্যে চলমান টানাপোড়েন পরিস্থিতিকে আরও বিষাক্ত করে তোলে। সব মিলিয়ে ক্ষোভের আগুন শেষ পর্যন্ত হত্যার মাধ্যমে বিস্ফোরিত হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী খাটের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যার দা ও রক্তমাখা লুঙ্গি। এ ঘটনায় নিহতের মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং-০৫, তারিখ-১০/০৮/২০২৫, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড)।
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ

কমলগঞ্জে ছোট ভাইয়ের দা’এর কোপে বড় ভাই রাফি খুন

কমলগঞ্জে ছোট ভাইয়ের দা’এর কোপে বড় ভাই রাফি খুন

আপডেট সময় ০২:১৪:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে নৃশংসতার চূড়ান্ত উদাহরণ দেখা গেল। মাত্র ৫০০ টাকা না দেওয়া ও দীর্ঘদিনের পারিবারিক টানাপোড়েনের জেরে বড় ভাইকে ঘুমের মধ্যে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে আপন ছোট ভাই। পুলিশ ইতোমধ্যে হত্যার রহস্য উদঘাটন করে ১৬ বছরের কিশোর খুনিকে গ্রেফতার করেছে এবং হত্যার আলামত উদ্ধার করেছে।
শনিবার ৯ আগষ্ট সকালে কমলগঞ্জ উপজেলার রহিমপুর ইউনিয়নের সিদ্ধেশ্বরপুর গ্রামে আব্দুর রহিম রাফি (২৬)-এর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) নোবেল চাকমা, শ্রীমঙ্গল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান এবং কমলগঞ্জ থানার ওসি আবু আফর মোঃ মাহফুজুল কবির ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত শুরু করেন। গোপন তথ্য, প্রযুক্তি এবং স্থানীয়দের বক্তব্যের ভিত্তিতে সেদিনই নিহতের ছোট ভাইকে আটক করা হয়।
প্রথমে অপরাধ অস্বীকার করলেও পরে জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার নৃশংস বর্ণনা দেয় সে। স্বীকারোক্তিতে জানায়, ঘটনার আগের দিন বড় ভাইয়ের কাছে ৫০০ টাকা চাইলে না দিয়ে উল্টো গালিগালাজ করে রাফি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পরদিন সকালে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে খাটের নিচে রাখা ধারালো দা বের করে ঘুমন্ত বড় ভাইয়ের ঘাড়ে উপর্যুপরি কোপ মেরে হত্যা করে। হত্যার পর দা ধুয়ে আবার খাটের নিচে রেখে দেয় এবং নিজের রক্তমাখা লুঙ্গিও সেখানে লুকিয়ে রাখে। এরপর যেন কিছুই হয়নি এমনভাবে স্বাভাবিক আচরণ করতে থাকে।
তদন্তে আরও জানা যায়, এই হত্যার নেপথ্যে শুধু টাকা নয়, বহু দিনের ক্ষোভ জমে ছিল। বাবা মারা যাওয়ার পর বড় ভাই অভিভাবকের ভূমিকা পালন করত এবং ছোট ভাইকে মাদ্রাসায় রেখে পড়াশোনা করাতে চাইত। কিন্তু সে পড়াশোনায় অনীহা দেখিয়ে বাড়িতেই বেশি থাকত। এ নিয়ে নিয়মিত শাসন করত বড় ভাই, যা ছোট ভাই মেনে নিতে পারত না। এছাড়া পারিবারিক অমতে রাফির বিয়ে এবং তার পরবর্তী সময়ে মা, ভাই ও ভাবীর মধ্যে চলমান টানাপোড়েন পরিস্থিতিকে আরও বিষাক্ত করে তোলে। সব মিলিয়ে ক্ষোভের আগুন শেষ পর্যন্ত হত্যার মাধ্যমে বিস্ফোরিত হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী খাটের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হত্যার দা ও রক্তমাখা লুঙ্গি। এ ঘটনায় নিহতের মা মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে কমলগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন (মামলা নং-০৫, তারিখ-১০/০৮/২০২৫, ধারা ৩০২/৩৪ পেনাল কোড)।