
লেফটেন্যান্ট (পরবর্তীতে লেফটেন্যান্ট কর্নেল) মোঃ আখতারুজ্জামান, বীর প্রতীক, ২৬ ইস্ট বেঙ্গল
লেফটেন্যান্ট মোঃ আখতারুজ্জামান, বীর প্রতীক, ২২ ডিসেম্বর ১৯৮৯ তারিখে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি থেকে ২১তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সের সাথে কমিশন লাভ করেন। ১৯৯৩ সালে তিনি তৎকালীন ২৬ ইস্ট বেঙ্গল-এর সঙ্গে খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি জোনে কর্মরত ছিলেন।
৩০ মার্চ ১৯৯৩ তারিখে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সন্ত্রাসীদের একটি ক্যাম্পের অবস্থান শনাক্ত হলে তিনি দ্রুততার সঙ্গে তিনটি বি-টাইপ পেট্রোল দল নিয়ে ইন্দ্রসিংপাড়া আর্মি ক্যাম্প থেকে সকাল ছয়টায় অভিযানে রওনা হন। লক্ষ্যস্থলের নিকটবর্তী হলে তিনি সম্পূর্ণ অভিযান দলকে সুপরিকল্পিতভাবে তিনটি উপদলে বিভক্ত করেন। নিজে মূল দল নিয়ে তিনি ক্যাম্পের দিকে অগ্রসর হন।
যাত্রাপথে তারা ছেঁড়া কাগজ, পায়ের ছাপ এবং রৌদ্রে শুকানো পোশাক লক্ষ্য করেন, যা সন্ত্রাসীদের অবস্থানকে আরো নিশ্চিত করে। প্রায় ২০০ গজের মধ্যে পৌঁছালে একজন অস্ত্রধারী পলায়নরত সন্ত্রাসী তাদের নজরে আসে। লেফটেন্যান্ট আখতারুজ্জামান দ্রুত সকলকে অবস্থান নিতে নির্দেশ দেন। এর মধ্যেই উক্ত সন্ত্রাসী গুলিবর্ষণ শুরু করে। তিনি এলএমজি দিয়ে পাল্টা গুলি চালিয়ে সন্ত্রাসীকে ধরাশায়ী করেন।
পরিকল্পনা মোতাবেক, তিনি এবং নায়েব সুবেদার কামাল তাদের উপদল নিয়ে উভয় দিক থেকে সন্ত্রাসী ক্যাম্পে চড়াও হন এবং পুরো ক্যাম্প ধ্বংস করেন। এই অভিযানে সন্ত্রাসীদের কমান্ড পোস্ট এবং কথিত জোন সদর ধ্বংস করা হয়। উদ্ধার করা হয় একটি জি-৩ রাইফেল, একটি ৭.৬২ মিমি চাইনিজ রাইফেল, দুটি হ্যান্ড গ্রেনেড, ২০৯ রাউন্ড গুলি, সন্ত্রাসীদের ইউনিফর্ম ও গুরুত্বপূর্ণ দলিলপত্র।
তাঁর এই অনন্য সাহসিকতা এবং বীরত্বপূর্ণ কাজের জন্য মহামান্য রাষ্ট্রপতি কর্তৃক তাঁকে ‘বীর প্রতীক’ খেতাবে ভূষিত করা হয়।