ঢাকা ১১:১৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo মধ্যনগরে মাটিয়ারবন্দ সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ভারতীয় এন্ড্রয়েড ফোন জব্দ, সংখ্যায় গরমিল Logo অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্নে মোবাইল কোর্ট অভিযান Logo পিরোজপুরে নানা আয়োজনে স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত Logo পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগ, জুন-২০২৫ এর ৩য় দিন সম্পন্ন ভোলা জেলা পুলিশের Logo মেধাবৃত্তির ক্রেস্ট, সম্মানী ও সার্টিফিকেট প্রদান করেন পুলিশ সুপার, টাঙ্গাইল Logo কুড়িগ্রামের ৪ কেজি গাঁজা ও ১টি অটোরিক্সা জব্দসহ মাদক কারবারি গ্রেফতার Logo গোপালগঞ্জ পুলিশ লাইন্স মাঠে পুলিশের ট্রেইনি কনস্টেবল পদে নিয়োগ,জুন – ২০২৫ তৃতীয় দিন সম্পন্ন Logo মেধা, যোগ্যতা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বিশেষ ব্রিফিং Logo মানবতা ও সাহসিকতার জন্য মাইলস্টোনের তিন শিক্ষক জাতির কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন: প্রধান উপদেষ্টা Logo বদলিজনিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান

গোবিন্দগঞ্জে জমি দখলকে কেন্দ্র করে সাঁওতালদের ওপর হামলার অভিযোগ, ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০১:০২:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫
  • ৫৩১ বার পড়া হয়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাহার ইউনিয়নের বিরাট ভট্ট গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধ আবারও উত্তেজনার রূপ নিয়েছে। শুক্রবারের ঘটনায় সাঁওতাল নারী শ্যামবালা হেমব্রম (৪৫) থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা তাদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালিয়েছে।

শ্যামবালা বলেন, “আমরা আমাদের জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে গেলে হঠাৎ চেয়ারম্যান ও তার ভাই, মেজবাউল ইসলাম উপস্থিত হয়ে আমাদের মারধর করে। এতে আমি, আমার ছেলে বিশ্বনাথ সরেন (২৫) ও নাতি জয়ন্ত হাসদা (১৯) আহত হই। বিশ্বনাথ বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, আর আমরা দুজনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছি।”

তিনি আরও জানিয়েছেন, “আমাদের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে এই জমি নিয়ে লড়াই চালাচ্ছে। চেয়ারম্যানের বাবা হাকিম মণ্ডল ও ছেলে জাল দলিল ব্যবহার করে আমাদের ৩ একর জমি দখল করেছিলেন। ২০২৩ সালের আদালতের রায়ে জাল দলিল প্রমাণিত হলেও চলতি বছরের ধান চাষের সময় আমাদের বাধা দেওয়া হয়।”

চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম দাবি করেছেন, “আমাদের কাছে জমির বৈধ কাগজপত্র আছে। বাবা থেকে আমরা প্রায় ৩৫ বছর ধরে জমি চাষাবাদ করে আসছি। শুক্রবার সাঁওতালরা আমাদের জমিতে ঢুকলে বাধা দিয়েছি। এতে আমার ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম আহত হয়েছেন।”

গোবিন্দগঞ্জ বাগদা-ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে বলেন, “রাজাবিরাট আদিবাসী গ্রামের সাঁওতালদের প্রায় ২৫০ বিঘা জমি স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময়ে দখল হয়েছে। এসব এখনও উদ্ধার হয়নি। এ ধরনের ঘটনা শুধু এক পরিবারের নয়, বরং আদিবাসী সম্প্রদায়ের জমি অধিকারকে নস্যাৎ করার অংশ।”

উল্লেখ্য, চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি সাঁওতাল ফিলিমোনা হাসদাকে মারধর ও বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছিল। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলেও তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

ওসি বুলবুল ইসলাম জানান, “সাঁওতালদের ওপর হামলার অভিযোগ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঘটনাটি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ঝগড়া নয়; এটি আদিবাসী সম্প্রদায়ের জমি অধিকার রক্ষার লড়াই এবং স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবের ছায়ার প্রতিফলন।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

মধ্যনগরে মাটিয়ারবন্দ সীমান্তে বিজিবির অভিযানে ভারতীয় এন্ড্রয়েড ফোন জব্দ, সংখ্যায় গরমিল

গোবিন্দগঞ্জে জমি দখলকে কেন্দ্র করে সাঁওতালদের ওপর হামলার অভিযোগ, ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

আপডেট সময় ০১:০২:৪৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ অগাস্ট ২০২৫

ডেস্ক রিপোর্ট : গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার রাজাহার ইউনিয়নের বিরাট ভট্ট গ্রামে জমি সংক্রান্ত বিরোধ আবারও উত্তেজনার রূপ নিয়েছে। শুক্রবারের ঘটনায় সাঁওতাল নারী শ্যামবালা হেমব্রম (৪৫) থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগে বলা হয়েছে, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা তাদের ওপর লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালিয়েছে।

শ্যামবালা বলেন, “আমরা আমাদের জমিতে ধানের চারা রোপণ করতে গেলে হঠাৎ চেয়ারম্যান ও তার ভাই, মেজবাউল ইসলাম উপস্থিত হয়ে আমাদের মারধর করে। এতে আমি, আমার ছেলে বিশ্বনাথ সরেন (২৫) ও নাতি জয়ন্ত হাসদা (১৯) আহত হই। বিশ্বনাথ বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, আর আমরা দুজনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রয়েছি।”

তিনি আরও জানিয়েছেন, “আমাদের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে এই জমি নিয়ে লড়াই চালাচ্ছে। চেয়ারম্যানের বাবা হাকিম মণ্ডল ও ছেলে জাল দলিল ব্যবহার করে আমাদের ৩ একর জমি দখল করেছিলেন। ২০২৩ সালের আদালতের রায়ে জাল দলিল প্রমাণিত হলেও চলতি বছরের ধান চাষের সময় আমাদের বাধা দেওয়া হয়।”

চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম দাবি করেছেন, “আমাদের কাছে জমির বৈধ কাগজপত্র আছে। বাবা থেকে আমরা প্রায় ৩৫ বছর ধরে জমি চাষাবাদ করে আসছি। শুক্রবার সাঁওতালরা আমাদের জমিতে ঢুকলে বাধা দিয়েছি। এতে আমার ছোট ভাই শফিকুল ইসলাম আহত হয়েছেন।”

গোবিন্দগঞ্জ বাগদা-ফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে বলেন, “রাজাবিরাট আদিবাসী গ্রামের সাঁওতালদের প্রায় ২৫০ বিঘা জমি স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময়ে দখল হয়েছে। এসব এখনও উদ্ধার হয়নি। এ ধরনের ঘটনা শুধু এক পরিবারের নয়, বরং আদিবাসী সম্প্রদায়ের জমি অধিকারকে নস্যাৎ করার অংশ।”

উল্লেখ্য, চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি সাঁওতাল ফিলিমোনা হাসদাকে মারধর ও বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছিল। পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলেও তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছেন।

ওসি বুলবুল ইসলাম জানান, “সাঁওতালদের ওপর হামলার অভিযোগ তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঘটনাটি শুধুমাত্র ব্যক্তিগত ঝগড়া নয়; এটি আদিবাসী সম্প্রদায়ের জমি অধিকার রক্ষার লড়াই এবং স্থানীয় রাজনৈতিক প্রভাবের ছায়ার প্রতিফলন।