ঢাকা ০৪:৫৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫, ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ১০০তম জন্মদিন উপলক্ষে মাহাথিরের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা Logo কালিগঞ্জ থানা বিএনপিকে শক্তিশালী করতে আজিজুর রহমান কে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দেখতে চাই Logo “একটি অশান্ত বিশ্বে এশিয়ার চ্যালেঞ্জ” Logo সমাজে নিপীড়িত মানুষের কল্যাণে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় একটি নিবেদিত প্রাণ—- উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ Logo গোলাপনগরে শিশুকে চাপা, চালক আটক Logo বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত Logo আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস Logo কালিগঞ্জে শহীদ জিয়ার শাহাদৎ বার্ষিকী পালনে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে Logo নিপ্পন ফাউন্ডেশনের প্রধান প্রধান উপদেষ্টার সাথে সাক্ষাৎ করেন Logo বোরো মৌসুমে ধান চাল সংগ্রহ সন্তোষজনক ময়মনসিংহ বিভাগে – খাদ্য উপদেষ্টা

কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলা হবে- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১২:২৭:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
  • ৫৩৪ বার পড়া হয়েছে

আলী আহসান রবি: রাজশাহী (২৭ মে, ২০২৫ খ্রি.): কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। উপদেষ্টা আজ সকালে রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কারা অধিদপ্তরের ১৪তম ব্যাচের ডেপুটি জেলার এবং ৬২তম ব্যাচের কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান।

উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি সংস্কারমুখী সরকার। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে আমরা এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এরই অংশ হিসেবে আমরা কারাগারকে একটি সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তিনি বলেন, বন্দিকে অপরাধী নয়, সংশোধনযোগ্য মানুষ হিসেবে দেখা- এই দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠার জন্যই সরকার ‘Correctional Industrial Park’ তৈরি সহ নানাবিধ উদ্ভাবনী পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যেখানে বন্দিরা প্রশিক্ষিত হয়ে দক্ষ জনবল হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার পাশাপাশি জেলে বসেই আয় রোজগারের সুবিধা পাবে এবং পরিবারকেও আর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারবে।

কারারক্ষীদের মাঠ পর্যায়ের চালিকাশক্তি হিসেবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, কারারক্ষীরাই সরাসরি বন্দিদের সঙ্গে কাজ করেন, শৃঙ্খলা বজায় রাখেন, মানবিক আচরণ প্রদর্শন করেন। তিনি বলেন, এ দায়িত্ব পালন করতে হয় ধৈর্য, সাহস ও পেশাগত নিষ্ঠার সাথে। তিনি আরও বলেন, বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কেবল পেশাগত দক্ষতা অর্জনের মাধ্যম নয়, এটি সততা, দেশপ্রেম ও নৈতিক গুণাবলী অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া। তিনি এসময় নবীন ডেপুটি জেলার ও কারারক্ষীদের ছাত্র জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, ডেপুটি জেলারগণ কারাগারের নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। একটি বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক কারা প্রশাসন গঠনে তারাই প্রধান বাহক। উপদেষ্টা এসময় নবীন ডেপুটি জেলার ও কারারক্ষীদের ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে দুর্নীতিমুক্তভাবে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কারা বিভাগের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করার নির্দেশ দেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক মানের কারা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সেজন্য বন্দিদের নিরাপদ আটক নিশ্চিত করতে মোবাইল জ্যামার, পৃথক ইন্টারনেট সিস্টেম, বডিস্ক্যানার, লাগেজ স্ক্যানার, সারকিট ডিটেক্টর সহ নানা ধরনের আধুনিক নিরাপত্তা সরমঞ্জামাদির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার কারারক্ষীদের সাহসিকতা এবং কর্মদক্ষতার স্বীকৃতিস্বরুপ বাংলাদেশ জেল মেডেল প্রবর্তনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যা অতি শীঘ্রই বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন অন্যান্য সংস্থার ন্যায় অবসরগামী কারা সদস্যদের আজীবন রেশন প্রদানের বিষয়েও নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। পরে তিনি কৃতি নবীন প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে নবীন ডেপুটি জেলার, কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষীদের শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়।

এসময় কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোঃ মোতাহের হোসেন, বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান, আরএমপি পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম, রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কমান্ড্যান্ট মোঃ কামাল হোসেন সহ রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১৪তম ব্যাচের ডেপুটি জেলারদের মধ্যে সর্ব বিষয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন মোছাঃ খাদিজা খাতুন লিমা ও বেস্ট ফায়ারার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন ডিএম নুসরাত আল ইসলাম এবং ৬২তম ব্যাচ কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষীদের মধ্যে সর্ববিষয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন সুব্রত চন্দ্র সরকার ও বেস্ট ফায়ারার খ্যাতি অর্জন করেন রায়হান মিয়া। পরে উপদেষ্টা রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন করেন।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

১০০তম জন্মদিন উপলক্ষে মাহাথিরের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা

কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলা হবে- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

আপডেট সময় ১২:২৭:১৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫

আলী আহসান রবি: রাজশাহী (২৭ মে, ২০২৫ খ্রি.): কারাগারকে সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)। উপদেষ্টা আজ সকালে রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে কারা অধিদপ্তরের ১৪তম ব্যাচের ডেপুটি জেলার এবং ৬২তম ব্যাচের কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা জানান।

উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি সংস্কারমুখী সরকার। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে আমরা এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। এরই অংশ হিসেবে আমরা কারাগারকে একটি সংশোধনাগার হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। তিনি বলেন, বন্দিকে অপরাধী নয়, সংশোধনযোগ্য মানুষ হিসেবে দেখা- এই দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিষ্ঠার জন্যই সরকার ‘Correctional Industrial Park’ তৈরি সহ নানাবিধ উদ্ভাবনী পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যেখানে বন্দিরা প্রশিক্ষিত হয়ে দক্ষ জনবল হিসেবে নিজেকে গড়ে তোলার পাশাপাশি জেলে বসেই আয় রোজগারের সুবিধা পাবে এবং পরিবারকেও আর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারবে।

কারারক্ষীদের মাঠ পর্যায়ের চালিকাশক্তি হিসেবে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, কারারক্ষীরাই সরাসরি বন্দিদের সঙ্গে কাজ করেন, শৃঙ্খলা বজায় রাখেন, মানবিক আচরণ প্রদর্শন করেন। তিনি বলেন, এ দায়িত্ব পালন করতে হয় ধৈর্য, সাহস ও পেশাগত নিষ্ঠার সাথে। তিনি আরও বলেন, বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কেবল পেশাগত দক্ষতা অর্জনের মাধ্যম নয়, এটি সততা, দেশপ্রেম ও নৈতিক গুণাবলী অর্জনের মাধ্যমে নিজেকে একজন আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়া। তিনি এসময় নবীন ডেপুটি জেলার ও কারারক্ষীদের ছাত্র জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনাকে হৃদয়ে ধারণ করে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোঃ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) বলেন, ডেপুটি জেলারগণ কারাগারের নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। একটি বৈষম্যহীন, ন্যায়ভিত্তিক, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক কারা প্রশাসন গঠনে তারাই প্রধান বাহক। উপদেষ্টা এসময় নবীন ডেপুটি জেলার ও কারারক্ষীদের ব্যক্তি স্বার্থের ঊর্ধ্বে থেকে দুর্নীতিমুক্তভাবে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে কারা বিভাগের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করার নির্দেশ দেন।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আন্তর্জাতিক মানের কারা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সেজন্য বন্দিদের নিরাপদ আটক নিশ্চিত করতে মোবাইল জ্যামার, পৃথক ইন্টারনেট সিস্টেম, বডিস্ক্যানার, লাগেজ স্ক্যানার, সারকিট ডিটেক্টর সহ নানা ধরনের আধুনিক নিরাপত্তা সরমঞ্জামাদির ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার কারারক্ষীদের সাহসিকতা এবং কর্মদক্ষতার স্বীকৃতিস্বরুপ বাংলাদেশ জেল মেডেল প্রবর্তনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যা অতি শীঘ্রই বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন অন্যান্য সংস্থার ন্যায় অবসরগামী কারা সদস্যদের আজীবন রেশন প্রদানের বিষয়েও নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন ও অভিবাদন গ্রহণ করেন। পরে তিনি কৃতি নবীন প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। অনুষ্ঠানে নবীন ডেপুটি জেলার, কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষীদের শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়।

এসময় কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ মোঃ মোতাহের হোসেন, বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান, আরএমপি পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান, জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার, পুলিশ সুপার ফারজানা ইসলাম, রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কমান্ড্যান্ট মোঃ কামাল হোসেন সহ রাজশাহী বিভাগের বিভিন্ন দপ্তর-সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, ১৪তম ব্যাচের ডেপুটি জেলারদের মধ্যে সর্ব বিষয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন মোছাঃ খাদিজা খাতুন লিমা ও বেস্ট ফায়ারার হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছেন ডিএম নুসরাত আল ইসলাম এবং ৬২তম ব্যাচ কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষীদের মধ্যে সর্ববিষয়ে প্রথম স্থান অধিকার করেন সুব্রত চন্দ্র সরকার ও বেস্ট ফায়ারার খ্যাতি অর্জন করেন রায়হান মিয়া। পরে উপদেষ্টা রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন করেন।