গণমাধ্যমের অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে মতবিনিময় সভা আয়োজনসহ কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২১শে নভেম্বর) ঢাকার সার্কিটহাউজ রোডস্থ তথ্য ভবনে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় কমিশনপ্রধান কামাল আহমেদ সভাপতিত্ব করেন। কমিশন সভায় গণমাধ্যমকে স্বাধীন ও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে গণমাধ্যমের অংশীজনের সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে মতবিনিময় সভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এছাড়া ঢাকার বাইরে বিভিন্ন জেলা নিয়ে আঞ্চলিক ভিত্তিতে মতবিনিময় সভা আয়োজন করা হবে, যেখানে স্থানীয় পর্যায়ের সংবাদপত্রের প্রকাশক, সম্পাদক ও সাংবাদিকগণের মতামত প্রদানের সুযোগ থাকবে। জনগণের আস্থা অর্জনে গণমাধ্যমের প্রয়োজনীয় সংস্কারের লক্ষ্যে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মতামত গ্রহণের বিষয়েও সভায় সিদ্ধান্ত হয়।
কমিশনের সভায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বিষয়ে বিদ্যমান অবস্থা সম্পর্কে সামগ্রিক পর্যালোচনার ভিত্তিতে একটি জনমত জরিপের বিষয় আলোচিত হয়। বিগত আন্দোলনে সংবাদমাধ্যমের ব্যর্থতা ও বির্তকিত ভূমিকার কারণে যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে, তার পটভূমিতে গণমাধ্যম-সংশ্লিষ্ট সবার আত্ম-অনুসন্ধানের ওপর সভায় গুরুত্বারোপ করা হয়।
সভায় সংবাদমাধ্যমকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করা এবং সংবাদমাধ্যমে কর্মরত সবার অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার বিষয়ও আলোচনা করা হয়। অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা ছাড়া সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে বলে অভিমত দেওয়া হয়। কমিশন সভায় প্রথম প্রেস কমিশন রিপোর্ট এবং বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের স্বায়ত্তশাসন নীতিমালা প্রণয়ন কমিশনের সুপারিশমালাও পর্যালোচনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভার শুরুতে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। কমিশন সভায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে শহিদ পাঁচ সাংবাদিককে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করা হয়।
গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রথম সভায় কমিশনের সদস্য অধ্যাপক গীতিআরা নাসরীন, শামসুল হক জাহিদ, আখতার হোসেন খান, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ফাহিম আহমেদ, জিমি আমির, মোস্তফা সবুজ, টিটু দত্ত গুপ্ত ও আব্দুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গণমাধ্যমকে স্বাধীন, শক্তিশালী ও বস্তুনিষ্ঠ করার লক্ষ্যে গত ১৮ই নভেম্বর সরকার ১১ সদস্যের গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করে। তথ্য ভবনের ১৬ তলায় কমিশনের কার্যালয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সংস্কার কমিশন ৯০ দিনের মধ্যে প্রধান উপদেষ্টার নিকট প্রতিবেদন হস্তান্তর করবে।