ঢাকা ০২:৫৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ২২ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo ফ্যাসিবাদের পক্ষে সম্মতি উৎপাদন না করতে গণমাধ্যমের প্রতি তথ্য উপদেষ্টার আহ্বান Logo ফ্যাসিবাদের পক্ষে সম্মতি উৎপাদন না করতে গণমাধ্যমের প্রতি তথ্য উপদেষ্টার আহ্বান Logo ইআইবি বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্প বাস্তবায়নে ৩৫০ মিলিয়ন ইউরো ফ্রেমওয়ার্ক ঋণ অনুমোদন করেছে Logo খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে খাদ্য সম্পর্কিত জাতীয় নীতি বাস্তবায়ন জরুরি : বাণিজ্য উপদেষ্টা Logo আমাদের সরকার কর্মক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনে সর্বক্ষেত্রে মেয়েদের সমান সুযোগ দিতে চায়——উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ Logo কসবা সীমান্ত দিয়ে গুলিবিদ্ধ ভারতীয় চোরাকারবারীর অনুপ্রবেশ; বিজিবির তৎপরতায় ঢাকা থেকে আটক Logo বাংলাদেশ থেকে বৈধ পথে আরও কর্মী নিতে আগ্রহী ইতালি- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo ২৪ ঘন্টায় ডিবির অভিযানে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের আরও চারজন গ্রেফতার Logo স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার Logo ভোক্তার খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি কৃষকের স্বার্থও দেখতে হবে– মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

ফ্যাসিবাদের পক্ষে সম্মতি উৎপাদন না করতে গণমাধ্যমের প্রতি তথ্য উপদেষ্টার আহ্বান

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:৫৩:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫
  • ৫২৫ বার পড়া হয়েছে

আলী আহসান রবি, ঢাকা, ৫ই মে ২০২৫ : ফ্যাসিবাদের পক্ষে সম্মতি উৎপাদন না করতে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোঃ মাহফুজ আলম। সোমবার (৫ই মে) তথ্য ভবনে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে ‘ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সাংবাদিক হত্যা-নিপীড়ন’ শীর্ষক সেমিনারে উপদেষ্টা এই আহ্বান জানান।

বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, গুম, অপহরণ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপকর্মের সম্মতি উৎপাদনের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার গণমাধ্যমকে ব্যবহার করেছে। এসব অসৎ উদ্দেশ্যেই আওয়ামী লীগ সরকার গণমাধ্যম তৈরি করেছে। বিগত সরকারের আমলে যেসব গণমাধ্যমকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর অনুমোদন প্রক্রিয়া তদন্ত করা হবে।

সম্প্রতি চাকরিচ্যুত তিন জন সাংবাদিক প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, সরকার চায় না বিনা নোটিশে কোনো সাংবাদিক চাকরিচ্যুত হোক। কোনো সাংবাদিক অপরাধ করলে তাকে প্রক্রিয়া মেনেই চাকরিচ্যুত করতে হবে। বিনা নোটিশে সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতি সরকার সমর্থন করে না।

মাহফুজ আলম বলেন, কিছু গণমাধ্যম ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-কে আন্দোলন হিসাবে অভিহিত করছে। এর পাশাপাশি বর্তমান সরকারকে পটপরিবর্তনের পরবর্তী সরকার বলা হচ্ছে। বিষয়টি দুঃখজনক। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো গণমাধ্যমকে কিছু বলা হয়নি। আমরা মনে করি, জনগণ বিষয়টি মূল্যায়ন করবে।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা চাই না কোনো গণমাধ্যম সরকারের পক্ষে লিখুক। সরকারকে প্রশ্ন করুন। সরকারকে প্রশ্ন করলে সরকার আরও বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।”

উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের ১৯শে জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে যে পরিমাণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, এত স্বল্প সময়ে ফিলিস্তিনেও এই পরিমাণ মানুষ হত্যা করা হয়নি। জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অন্য কোনো হত্যাকাণ্ড তুলনীয় নয়।

পতিত সরকারের দুঃশাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনের সম্মতি উৎপাদনের যন্ত্র ছিল গণমাধ্যম। গণমাধ্যমের রাজনীতিকীকরণের ফলে সাংবাদিকরা তাঁদের অধিকার বঞ্চিত হচ্ছেন। বিষয়টি সাংবাদিকদের বোঝা উচিত।

উপদেষ্টা বলেন, যেসব সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন এবং পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আহত হয়েছেন, সরকার তাঁদের পরিবারকে সহযোগিতা করবে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের ৪৪ ধাপ অবনতি হয়েছে। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের শাসনামলে গণমাধ্যমের চিত্র উপলব্ধি করা যায়। বিগত সরকারের আমলে সাংবাদিক নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশেই তাঁর ওপর হামলা করা হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলের সঙ্গে অন্য কোনো শাসনামলের তুলনা চলে না। এ বিষয়ে কোনো দ্বিধা থাকা উচিত নয়। তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদ ও স্বাধীন গণমাধ্যম একসঙ্গে চলতে পারে না। তিনি ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবি জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেন, যেসব সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা ছাড়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্ভব নয়। তিনি গণমাধ্যমের টেকসই ব্যবসায়িক মডেল প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সেমিনারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে সাংবাদিকদের বিভাজিত করা হয়েছিল। সরকারের আনুগত্যে নিয়ে আসার জন্য বিগত সরকার সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছে। গণমাধ্যম সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কীভাবে গণমাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা যায়, সে লক্ষ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কাজ করছে। তিনি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ। মূল প্রবন্ধে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সাংবাদিক হত্যা-নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরের শাসনামলে ৬১ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি নিপীড়নের শিকার হয়েছেন ৩ হাজার ৫৮৮ জন সাংবাদিক।

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন দৈনিক যায়যায়দিনের সম্পাদক শফিক রেহমান, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদ, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, বিএফইউজের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার, দৈনিক প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ, দৈনিক নয়াদিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলি, শীর্ষ নিউজের সম্পাদক একরামুল হক ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য শাহীন হাসনাত।

সেমিনারে সাংবাদিক হত্যা-নিপীড়ন বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন নিহত সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ সাংবাদিক হাসান মেহেদীর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম ববি, শহিদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র মা সামসি আরা জামান, নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক আক্তারুজ্জামান ও সাংবাদিক রাশেদুল ইসলাম।

সেমিনারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, হত্যা-নিপীড়নের শিকার সাংবাদিক-পরিবারের সদস্য এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

ফ্যাসিবাদের পক্ষে সম্মতি উৎপাদন না করতে গণমাধ্যমের প্রতি তথ্য উপদেষ্টার আহ্বান

ফ্যাসিবাদের পক্ষে সম্মতি উৎপাদন না করতে গণমাধ্যমের প্রতি তথ্য উপদেষ্টার আহ্বান

আপডেট সময় ০৮:৫৩:৩০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

আলী আহসান রবি, ঢাকা, ৫ই মে ২০২৫ : ফ্যাসিবাদের পক্ষে সম্মতি উৎপাদন না করতে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মোঃ মাহফুজ আলম। সোমবার (৫ই মে) তথ্য ভবনে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস ২০২৫ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে ‘ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সাংবাদিক হত্যা-নিপীড়ন’ শীর্ষক সেমিনারে উপদেষ্টা এই আহ্বান জানান।

বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলের সমালোচনা করে তিনি বলেন, গুম, অপহরণ বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপকর্মের সম্মতি উৎপাদনের জন্য আওয়ামী লীগ সরকার গণমাধ্যমকে ব্যবহার করেছে। এসব অসৎ উদ্দেশ্যেই আওয়ামী লীগ সরকার গণমাধ্যম তৈরি করেছে। বিগত সরকারের আমলে যেসব গণমাধ্যমকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল, সেগুলোর অনুমোদন প্রক্রিয়া তদন্ত করা হবে।

সম্প্রতি চাকরিচ্যুত তিন জন সাংবাদিক প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, সরকার চায় না বিনা নোটিশে কোনো সাংবাদিক চাকরিচ্যুত হোক। কোনো সাংবাদিক অপরাধ করলে তাকে প্রক্রিয়া মেনেই চাকরিচ্যুত করতে হবে। বিনা নোটিশে সাংবাদিকদের চাকরিচ্যুতি সরকার সমর্থন করে না।

মাহফুজ আলম বলেন, কিছু গণমাধ্যম ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’-কে আন্দোলন হিসাবে অভিহিত করছে। এর পাশাপাশি বর্তমান সরকারকে পটপরিবর্তনের পরবর্তী সরকার বলা হচ্ছে। বিষয়টি দুঃখজনক। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো গণমাধ্যমকে কিছু বলা হয়নি। আমরা মনে করি, জনগণ বিষয়টি মূল্যায়ন করবে।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “আমরা চাই না কোনো গণমাধ্যম সরকারের পক্ষে লিখুক। সরকারকে প্রশ্ন করুন। সরকারকে প্রশ্ন করলে সরকার আরও বেশি দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।”

উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের ১৯শে জুলাই থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশে যে পরিমাণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, এত স্বল্প সময়ে ফিলিস্তিনেও এই পরিমাণ মানুষ হত্যা করা হয়নি। জুলাই-আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে অন্য কোনো হত্যাকাণ্ড তুলনীয় নয়।

পতিত সরকারের দুঃশাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসনের সম্মতি উৎপাদনের যন্ত্র ছিল গণমাধ্যম। গণমাধ্যমের রাজনীতিকীকরণের ফলে সাংবাদিকরা তাঁদের অধিকার বঞ্চিত হচ্ছেন। বিষয়টি সাংবাদিকদের বোঝা উচিত।

উপদেষ্টা বলেন, যেসব সাংবাদিক হত্যার শিকার হয়েছেন এবং পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আহত হয়েছেন, সরকার তাঁদের পরিবারকে সহযোগিতা করবে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচকে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের ৪৪ ধাপ অবনতি হয়েছে। এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের শাসনামলে গণমাধ্যমের চিত্র উপলব্ধি করা যায়। বিগত সরকারের আমলে সাংবাদিক নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশেই তাঁর ওপর হামলা করা হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসনামলের সঙ্গে অন্য কোনো শাসনামলের তুলনা চলে না। এ বিষয়ে কোনো দ্বিধা থাকা উচিত নয়। তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদ ও স্বাধীন গণমাধ্যম একসঙ্গে চলতে পারে না। তিনি ফ্যাসিবাদের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত বিচারের দাবি জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেন, যেসব সাংবাদিক হত্যা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, তাঁদের পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, সাংবাদিকদের আর্থিক নিরাপত্তা ছাড়া গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্ভব নয়। তিনি গণমাধ্যমের টেকসই ব্যবসায়িক মডেল প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

সেমিনারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনামলে সাংবাদিকদের বিভাজিত করা হয়েছিল। সরকারের আনুগত্যে নিয়ে আসার জন্য বিগত সরকার সাংবাদিকদের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছে। গণমাধ্যম সংস্কার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কীভাবে গণমাধ্যমে সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা যায়, সে লক্ষ্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় কাজ করছে। তিনি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাংবাদিকদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আবদুল্লাহ। মূল প্রবন্ধে তিনি আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে সাংবাদিক হত্যা-নিপীড়নের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের গত ১৫ বছরের শাসনামলে ৬১ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। এর পাশাপাশি নিপীড়নের শিকার হয়েছেন ৩ হাজার ৫৮৮ জন সাংবাদিক।

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন দৈনিক যায়যায়দিনের সম্পাদক শফিক রেহমান, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদ, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, বিএফইউজের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার, দৈনিক প্রথম আলোর নির্বাহী সম্পাদক সাজ্জাদ শরীফ, দৈনিক নয়াদিগন্তের নির্বাহী সম্পাদক মাসুমুর রহমান খলিলি, শীর্ষ নিউজের সম্পাদক একরামুল হক ও সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য শাহীন হাসনাত।

সেমিনারে সাংবাদিক হত্যা-নিপীড়ন বিষয়ে স্মৃতিচারণ করেন নিহত সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের স্ত্রী মনিরা বেগম, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ সাংবাদিক হাসান মেহেদীর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম ববি, শহিদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র মা সামসি আরা জামান, নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক আক্তারুজ্জামান ও সাংবাদিক রাশেদুল ইসলাম।

সেমিনারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, হত্যা-নিপীড়নের শিকার সাংবাদিক-পরিবারের সদস্য এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।