ঢাকা ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo পটুয়াখালী জেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি সেহাংশু সরকার কুট্টি ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাড.মুজিবর রহমান টোটন Logo জলাশয় নয়, জমি নয়—টার্গেট আমি: মোশাহিদ তালুকদারের প্রতিবাদ Logo সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার Logo জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক প্রধানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা Logo পার্বত্য চট্টগ্রামের একশ স্কুলে এবছরই ই-লার্নিং চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার Logo হলি আর্টিজানের ঘটনা সম্পর্কে ডিএমপি কমিশনারের বক্তব্য ভিন্নভাবে উপস্থাপন প্রসঙ্গে Logo ৪৬ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদক কারবারিকে গ্রেফতার করেছে ডিবি Logo ডাইফের শ্রমিক হেল্পলাইন (১৬৩৫৭)-এর আপগ্রেডেড ভার্সন উদ্বোধন Logo প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘকে মিথ্যা তথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য গণমাধ্যমে স্ব-নিয়ন্ত্রণ প্রচারের আহ্বান জানিয়েছেন Logo আফতাবনগরে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে বায়ুদূষণ: মোবাইল কোর্টে ৩ প্রতিষ্ঠানের জরিমানা

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বীর সেনানিদের বীরত্বগাঁথা-৩৪

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৫:৫০:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫
  • ৫৪৮ বার পড়া হয়েছে

সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট (পরবর্তীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল) এ টি এম আনিসুজ্জামান, বীর প্রতীক, ইস্ট বেংগল (তৎকালীন ইউনিট ৫ ইস্ট বেংগল)।
সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট এ টি এম আনিসুজ্জামান, বীর প্রতীক, ইস্ট বেংগল ২৩ ডিসেম্বর ১৯৮৮ তারিখে বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমি হতে ১৯তম বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের সাথে কমিশন লাভ করেন। তিনি ৫ ইস্ট বেংগল ইউনিটে কর্মরত থাকাকালীন গত ২১ অক্টোবর ১৯৮৯ তারিখে ডিভিশন পর্যায়ে যৌথ অভিযানে একটি টহল নিয়ে ঘাগড়া আর্মি ক্যাম্প থেকে রওয়ানা হন। পরদিন বেলা আনুমানিক ১৫৩০ ঘটিকায় দুর্গম পথ অতিক্রম করে সম্পূর্ণ দলটি কালাকাজী পাড়ার প্রবেশ মুখে উপস্থিত হয়। গোয়েন্দা সূত্র অনুযায়ী সেখানে শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীদের উপস্থিতির তথ্য ছিল। বিকল্প কোন পথ না পেয়ে টহল দলটির একটি ছড়া অনুসরন করে অগ্রসর হতে হচ্ছিল। টহল দল থেকে ১০/১৫ গজ দূরে ছড়ার পাশে একটি ছোট ঘর থেকে হঠাৎ অস্ত্রধারী একজন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। মূহুর্তে সেকেন্ড লেঃ আনিস সবাইকে অবস্থান গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন এবং সাথে সাথে চারদিক থেকে টহল দলটির উপর বৃষ্টির ন্যায় গোলাবর্ষন শুরু হয়। টহল দলের প্রতিটি সদস্য ছড়ার মধ্যে বাঁকে বাঁকে লুটিয়ে পড়ে অবস্থান নেন এবং পাল্টা ফায়ার শুরু করে।
এদিকে, সেকেন্ড লেঃ আনিস লক্ষ্য করলেন যে, ৪/৫ গজ দুরে একজন শান্তিবাহিনীর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সেনাবাহিনীর টহল দলের অবস্থানের দিকে এগিয়ে আসছে। সাথে সাথেই তিনি তাকে লক্ষ্য করে ফায়ার করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তার হ্যাভারস্যাক ছুঁড়ে ফেলে ছড়ায় লাফিয়ে পড়ে পালানোর চেষ্টা করে। সময় নষ্ট না করে তিনি উক্ত সন্ত্রাসীর উপর ঝাপিয়ে পড়েন। উভয় পক্ষের গুলিবর্ষণ এর মধ্যে ছড়ার ভিতর দুজনের ধস্তাধস্তি শুরু হয় এবং এক পর্যায়ে সেকেন্ড লেঃ আনিস সন্ত্রাসীটিকে কাবু করতে সক্ষম হম। এরইমধ্যে, টহল দলটি দুভাগ হয়ে শান্তিবাহিনীর পিছন দিয়ে ঘিরে ফেলার উদ্দেশ্যে অগ্রসর হয়। সন্ত্রাসীদের ঘিরে ফেলা হলে, সেনা টহল দল এবং সন্ত্রাসীদের মধ্যে তুমুল গোলাগুলি শুরু হয়। একপর্যায়ে, সেনাবাহিনীর টহল দলটির চাপের মুখে ৬ জন শান্তিবাহিনীর সদস্য নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় এবং আত্মসমর্পন করে।
উক্ত অভিযানে সন্ত্রাসীদের আস্তানা হতে ১টি ৩০৩ রাইফেল, ১টি পিস্তল (সিগন্যাল পিস্তলের ন্যায়), ১টি ৩০৩ রাইফেলের ম্যাগাজিন, ৮ রাউন্ড ৩০৩ রাইফেলের তাজা এ্যামুনেশন, ৪ রাউন্ড ১২ বোর কার্তুজ, ২টি ডামি রাইফেল এবং মূল্যবান দলিল পত্র উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে, ১৬ জুলাই ১৯৯০ তারিখে তৎকালীন মহামান্য রাষ্ট্রপতি এই বীর সেনা কর্মকর্তাকে “বীর প্রতীক” খেতাবে ভূষিত করেন।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পটুয়াখালী জেলা বিএনপির নবনির্বাচিত সভাপতি সেহাংশু সরকার কুট্টি ও সাধারণ সম্পাদক এ্যাড.মুজিবর রহমান টোটন

স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে বীর সেনানিদের বীরত্বগাঁথা-৩৪

আপডেট সময় ০৫:৫০:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট (পরবর্তীতে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল) এ টি এম আনিসুজ্জামান, বীর প্রতীক, ইস্ট বেংগল (তৎকালীন ইউনিট ৫ ইস্ট বেংগল)।
সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট এ টি এম আনিসুজ্জামান, বীর প্রতীক, ইস্ট বেংগল ২৩ ডিসেম্বর ১৯৮৮ তারিখে বাংলাদেশ মিলিটারী একাডেমি হতে ১৯তম বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সের সাথে কমিশন লাভ করেন। তিনি ৫ ইস্ট বেংগল ইউনিটে কর্মরত থাকাকালীন গত ২১ অক্টোবর ১৯৮৯ তারিখে ডিভিশন পর্যায়ে যৌথ অভিযানে একটি টহল নিয়ে ঘাগড়া আর্মি ক্যাম্প থেকে রওয়ানা হন। পরদিন বেলা আনুমানিক ১৫৩০ ঘটিকায় দুর্গম পথ অতিক্রম করে সম্পূর্ণ দলটি কালাকাজী পাড়ার প্রবেশ মুখে উপস্থিত হয়। গোয়েন্দা সূত্র অনুযায়ী সেখানে শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসীদের উপস্থিতির তথ্য ছিল। বিকল্প কোন পথ না পেয়ে টহল দলটির একটি ছড়া অনুসরন করে অগ্রসর হতে হচ্ছিল। টহল দল থেকে ১০/১৫ গজ দূরে ছড়ার পাশে একটি ছোট ঘর থেকে হঠাৎ অস্ত্রধারী একজন দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করে। মূহুর্তে সেকেন্ড লেঃ আনিস সবাইকে অবস্থান গ্রহণ করতে নির্দেশ দেন এবং সাথে সাথে চারদিক থেকে টহল দলটির উপর বৃষ্টির ন্যায় গোলাবর্ষন শুরু হয়। টহল দলের প্রতিটি সদস্য ছড়ার মধ্যে বাঁকে বাঁকে লুটিয়ে পড়ে অবস্থান নেন এবং পাল্টা ফায়ার শুরু করে।
এদিকে, সেকেন্ড লেঃ আনিস লক্ষ্য করলেন যে, ৪/৫ গজ দুরে একজন শান্তিবাহিনীর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী সেনাবাহিনীর টহল দলের অবস্থানের দিকে এগিয়ে আসছে। সাথে সাথেই তিনি তাকে লক্ষ্য করে ফায়ার করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী তার হ্যাভারস্যাক ছুঁড়ে ফেলে ছড়ায় লাফিয়ে পড়ে পালানোর চেষ্টা করে। সময় নষ্ট না করে তিনি উক্ত সন্ত্রাসীর উপর ঝাপিয়ে পড়েন। উভয় পক্ষের গুলিবর্ষণ এর মধ্যে ছড়ার ভিতর দুজনের ধস্তাধস্তি শুরু হয় এবং এক পর্যায়ে সেকেন্ড লেঃ আনিস সন্ত্রাসীটিকে কাবু করতে সক্ষম হম। এরইমধ্যে, টহল দলটি দুভাগ হয়ে শান্তিবাহিনীর পিছন দিয়ে ঘিরে ফেলার উদ্দেশ্যে অগ্রসর হয়। সন্ত্রাসীদের ঘিরে ফেলা হলে, সেনা টহল দল এবং সন্ত্রাসীদের মধ্যে তুমুল গোলাগুলি শুরু হয়। একপর্যায়ে, সেনাবাহিনীর টহল দলটির চাপের মুখে ৬ জন শান্তিবাহিনীর সদস্য নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয় এবং আত্মসমর্পন করে।
উক্ত অভিযানে সন্ত্রাসীদের আস্তানা হতে ১টি ৩০৩ রাইফেল, ১টি পিস্তল (সিগন্যাল পিস্তলের ন্যায়), ১টি ৩০৩ রাইফেলের ম্যাগাজিন, ৮ রাউন্ড ৩০৩ রাইফেলের তাজা এ্যামুনেশন, ৪ রাউন্ড ১২ বোর কার্তুজ, ২টি ডামি রাইফেল এবং মূল্যবান দলিল পত্র উদ্ধার করা হয়।
পরবর্তীতে, ১৬ জুলাই ১৯৯০ তারিখে তৎকালীন মহামান্য রাষ্ট্রপতি এই বীর সেনা কর্মকর্তাকে “বীর প্রতীক” খেতাবে ভূষিত করেন।