ঢাকা ০২:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo উচ্চাভিলাষী জলবায়ু পদক্ষেপে বাংলাদেশ-ব্রাজিল ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে – পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান Logo উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা’র সঙ্গে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান রাষ্ট্রদূতদের সৌজন্য সাক্ষাৎ Logo নির্বাচনের সময় সাংবাদিকদের সতর্ক, সচেতন ও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে – তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা Logo আসন্ন শারদীয় দূর্গাপূজা ২০২৫ উপলক্ষে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত Logo ঢাকা মহানগর উত্তর ৩১ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শফিকুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে সিটিটিসি Logo অবহেলিত সাতক্ষীরা জেলার উন্নয়নের জন্য বিশেষ সরকারি বরাদ্দের জোর দাবি এলাকাবাসীর Logo পুলিশকে নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে হবে – স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo লেখক-গবেষক,রাজনীতিক ও জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সভাপতি বদরুদ্দীন উমর এর মৃত্যুতে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদের শোক Logo মধ্যনগরে বংশীকুন্ডা উত্তর ইউনিয়নে ইউনিয়ন কাউন্সিল বাতিলের দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল Logo শেরপুর সদর থানা বার্ষিক পরিদর্শন করলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার

বাংলাদেশ কারো দয়া নয়, ন্যায্য হিস্যা চায়- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:২৪:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
  • ৫৭০ বার পড়া হয়েছে

আলী আহসান রবি: রাজশাহী , ২ জ্যৈষ্ঠ (১৬মে) ২০২৫ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “ফারাক্কা পানি চুক্তি শেষ হয়ে গেলে বাংলাদেশ নতুন করে পানির হিস্যা চাইবে। বাংলাদেশ কারো দয়া নয়, ন্যায্য হিস্যা চায়। সে ন্যায্য অধিকার ভারতকে দিতে হবে।”

উপদেষ্টা আজ বিকালে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের ৪৯তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাজশাহী কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন,পরিসংখ্যান অনুযায়ী ফারাক্কা বাঁধের কারণে চার কোটিরও বেশি মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভারত এত বছর ধরে আমাদের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে আর এর ফলে আমাদের প্রাণীকে – আমাদের মানুষকে তিলে তিলে কষ্ট দিচ্ছে তারা।

ফারাক্কা বাঁধকে মরণ ফাঁদ উল্লেখ করে ফরিদা আখতার বলেন, এ মরণ বাঁধের কারণে আমাদের কী ক্ষতি হচ্ছে তা চিহ্নিত করতে হবে। ফারাক্কা বাঁধের কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গড়াই নদীর মাধ্যমে লবণাক্ততার অনুপ্রবেশ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে মাছের বৈচিত্র কমে যাচ্ছে, এমনকি মাছ বিলুপ্তও হয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, গড়াই নদীর অববাহিকার বড় অংশ শুকিয়ে গেছে। একসময় নবগঙ্গা নদীতে ৪১টি মাছের প্রজাতি পাওয়া যেত কিন্তু বর্তমানে সেখানে ৩৫টি প্রজাতি আছে। ১৬টি প্রজাতির মাছ সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে এবং কিছু কিছু সেখানে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এ সকল অঞ্চলে মাছের আহরণ কমে যাচ্ছে এবং মাছের সাথে জড়িত জেলেরাও পেশা হারাচ্ছেন। এর সাথে কৃষিও সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে কেননা কৃষি খাতে বেশি পানির প্রয়োজন।

পদ্মার ইলিশ আমাদের বড় সম্পদ ছিল উল্লেখ করে মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, ইলিশের কথা যখন বলি তখন সবাই পদ্মার ইলিশের কথাই বলি। ভারতের অনেক মানুষই বলে থাকেন, পদ্মার ইলিশ গঙ্গার ইলিশের চেয়ে সুস্বাদু। কিন্তু ফারাক্কা বাঁধের কারণে বর্তমানে পদ্মার ইলিশ আর নেই।

মাওলানা ভাসানীর কথার প্রতিধ্বনি করে তিনি বলেন, “গঙ্গার পানিতে আমাদের ন্যায্য অধিকার, এটা আমাদের প্রাকৃতিক অধিকার। এ অধিকার পশু-পাখি, গাছপালা, কীট-পতঙ্গ, প্রাণী, মানুষ সব কিছুর জন্মগত অধিকার। এ অধিকার হরণ করার ক্ষমতা কারো নেই। যে হরণ করেছে সে প্রাণীর বিরুদ্ধে জুলুম করেছে। বাংলাদেশের মানুষ তা কোনো দিন মেনে নেবে না। আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাদের বাঁচার পথ খুলে দেবেন।” এসময় প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পদ্মার উজানে ভারতের দেওয়া ফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশে কারবালা তৈরি করেছে। পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ার কারণে এ দেশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ন্যায্য হিস্যা আদায়ে সরকার তৎপর রয়েছে।

ফারাক্কা লং মার্চের ৪৯ বছর উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মাহবুব সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে সভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নাকিব, প্রেস ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহর আলী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইফতেখারুল আলম মাসউদ, লেখক ও গবেষক বেনজিন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

উচ্চাভিলাষী জলবায়ু পদক্ষেপে বাংলাদেশ-ব্রাজিল ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে – পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

বাংলাদেশ কারো দয়া নয়, ন্যায্য হিস্যা চায়- মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

আপডেট সময় ০৮:২৪:৫৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

আলী আহসান রবি: রাজশাহী , ২ জ্যৈষ্ঠ (১৬মে) ২০২৫ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “ফারাক্কা পানি চুক্তি শেষ হয়ে গেলে বাংলাদেশ নতুন করে পানির হিস্যা চাইবে। বাংলাদেশ কারো দয়া নয়, ন্যায্য হিস্যা চায়। সে ন্যায্য অধিকার ভারতকে দিতে হবে।”

উপদেষ্টা আজ বিকালে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লংমার্চের ৪৯তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে রাজশাহী কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন,পরিসংখ্যান অনুযায়ী ফারাক্কা বাঁধের কারণে চার কোটিরও বেশি মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ভারত এত বছর ধরে আমাদের অধিকার ছিনিয়ে নিয়েছে আর এর ফলে আমাদের প্রাণীকে – আমাদের মানুষকে তিলে তিলে কষ্ট দিচ্ছে তারা।

ফারাক্কা বাঁধকে মরণ ফাঁদ উল্লেখ করে ফরিদা আখতার বলেন, এ মরণ বাঁধের কারণে আমাদের কী ক্ষতি হচ্ছে তা চিহ্নিত করতে হবে। ফারাক্কা বাঁধের কারণে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে গড়াই নদীর মাধ্যমে লবণাক্ততার অনুপ্রবেশ বেড়ে যাচ্ছে। ফলে মাছের বৈচিত্র কমে যাচ্ছে, এমনকি মাছ বিলুপ্তও হয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, গড়াই নদীর অববাহিকার বড় অংশ শুকিয়ে গেছে। একসময় নবগঙ্গা নদীতে ৪১টি মাছের প্রজাতি পাওয়া যেত কিন্তু বর্তমানে সেখানে ৩৫টি প্রজাতি আছে। ১৬টি প্রজাতির মাছ সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে এবং কিছু কিছু সেখানে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এ সকল অঞ্চলে মাছের আহরণ কমে যাচ্ছে এবং মাছের সাথে জড়িত জেলেরাও পেশা হারাচ্ছেন। এর সাথে কৃষিও সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে কেননা কৃষি খাতে বেশি পানির প্রয়োজন।

পদ্মার ইলিশ আমাদের বড় সম্পদ ছিল উল্লেখ করে মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, ইলিশের কথা যখন বলি তখন সবাই পদ্মার ইলিশের কথাই বলি। ভারতের অনেক মানুষই বলে থাকেন, পদ্মার ইলিশ গঙ্গার ইলিশের চেয়ে সুস্বাদু। কিন্তু ফারাক্কা বাঁধের কারণে বর্তমানে পদ্মার ইলিশ আর নেই।

মাওলানা ভাসানীর কথার প্রতিধ্বনি করে তিনি বলেন, “গঙ্গার পানিতে আমাদের ন্যায্য অধিকার, এটা আমাদের প্রাকৃতিক অধিকার। এ অধিকার পশু-পাখি, গাছপালা, কীট-পতঙ্গ, প্রাণী, মানুষ সব কিছুর জন্মগত অধিকার। এ অধিকার হরণ করার ক্ষমতা কারো নেই। যে হরণ করেছে সে প্রাণীর বিরুদ্ধে জুলুম করেছে। বাংলাদেশের মানুষ তা কোনো দিন মেনে নেবে না। আল্লাহ নিশ্চয়ই আমাদের বাঁচার পথ খুলে দেবেন।” এসময় প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পদ্মার উজানে ভারতের দেওয়া ফারাক্কা বাঁধ বাংলাদেশে কারবালা তৈরি করেছে। পানির ন্যায্য হিস্যা না পাওয়ার কারণে এ দেশ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ন্যায্য হিস্যা আদায়ে সরকার তৎপর রয়েছে।

ফারাক্কা লং মার্চের ৪৯ বছর উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মাহবুব সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে সভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সালেহ হাসান নাকিব, প্রেস ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশের মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মু. যহর আলী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. ইফতেখারুল আলম মাসউদ, লেখক ও গবেষক বেনজিন খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।