
আলী আহসান রবি : মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে (Higher Education Acceleration and Transformation প্রকল্প) বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে পারস্পরিক কর্মসম্পর্ক জোরদারকরণের লক্ষ্যে একটি স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ রাজধানীর শাহবাগে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের রূপসী বাংলা গ্র্যান্ড বলরুম-২ এ আয়োজিত এ কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ। কর্মশালার ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব শারমিনা নাসরীন। এই কর্মশালায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয়ের মঞ্জুরী কমিশনের সদস্যবৃন্দ, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস – চ্যান্সেলর, রেজিস্ট্রারবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
কর্মশালার উদ্দেশ্য ছিল ইউজিসি ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে পারস্পরিক কর্মসম্পাদনের ক্ষেত্র চিহ্নিতকরণ, একাডেমিক উৎকর্ষতা, শিক্ষার মানোন্নয়ন, বিধি-বিধান সংস্কার ও পরিমার্জনের কৌশল নির্ধারণ, বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় বিদ্যমান বাধা শনাক্ত এবং বাস্তবসম্মত সুপারিশ প্রণয়ন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কারিকুলাম, মূল্যায়ন পদ্ধতি ও কোর্স ক্রেডিট আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করার বিষয়েও আলোচনা হয়।
আলোচনায় অংশীজনরা বিভিন্ন অনুমোদন ও নিশপত্তিতে দীর্ঘসূত্রতা হ্রাস, গবেষণা ও অবকাঠামো উন্নয়নে বাজেট বৃদ্ধি, ইউজিসির সক্ষমতা জোরদার, শিক্ষক নিয়োগে স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ এবং শিক্ষাঙ্গনে লেজুড়বৃত্তিক শিক্ষক রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া সমন্বিত ভর্তি প্রক্রিয়া ও প্রকল্প বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ সহজীকরণের প্রয়োজনীয়তার কথাও উঠে আসে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান ড. এস এম এ ফায়েজ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিক সংকটের বিষয়টি তুলে ধরেন এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারি বিনিয়োগ ও বিশ্ব র্যাংকিংয়ে অগ্রগতির উদাহরণ উল্লেখ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. সি আর আবরার বলেন, বর্তমান সময়ে শিক্ষা প্রশাসনের দায়িত্ব অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা বেড়েছে, যা প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনাকে আরও জটিল করে তুলেছে। তিনি সংশ্লিষ্ট সকলের দায়িত্বশীলতা ও ধৈর্যের প্রশংসা করেন।
তিনি জানান, কর্মশালায় প্রাপ্ত সুপারিশসমূহ গুরুত্বসহকারে নথিবদ্ধ করা হয়েছে। তাৎক্ষণিক বাস্তবায়নযোগ্য বিষয়গুলো সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মাধ্যমে কার্যকর করা হবে এবং দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ করা হবে। কর্মশালায় সরকারি অনুদানের ওপর নির্ভরতা কমাতে বিকল্প অর্থায়ন উৎস অনুসন্ধান, প্রবাসী বাংলাদেশি ও অ্যালামনাইগণের সম্পৃক্ততা এবং সে লক্ষ্যে সহায়ক নীতিগত পরিবেশ তৈরির প্রয়োজনীয়তার কথাও আলোচিত হয়। এছাড়াও শিক্ষা উপদেষ্টা ইন্ডাস্ট্রি একাডেমির প্রতি জোর দেন, যেখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান গবেষণা কাজে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করবে; বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্নির সুযোগ ও যৌথ গবেষণার সুযোগ তৈরী হবে। শেষে শিক্ষা উপদেষ্টা ভবিষ্যতেও শিক্ষা খাতের উন্নয়নে এ ধরনের নিয়মিত সংলাপ অব্যাহত রাখার আশাবাদ ব্যক্ত করে সকল অংশগ্রহণকারীকে ধন্যবাদ জানান এবং কর্মশালার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।
নিজস্ব সংবাদ : 




















