
আলী আহসান রবি : “গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের জন্য মুক্ত আলোচনা” শীর্ষক ধারাবাহিক আয়োজনে ‘শ্রম অধিকার’ বিষয়ক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে। সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস)-এর উদ্যোগে আয়োজিত এ আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম. সাখাওয়াত হোসেন।
আলোচনায় তিনি বলেন,
“শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এখন আগের তুলনায় অনেক দূর এগিয়েছে। আমরা বাস্তবভিত্তিক ও সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছি যাতে শ্রমিকদের অধিকার ও কল্যাণ আরও সুসংহত হয়।”
ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বাংলাদেশ একটি দাবিদাওয়ার সমাজ। “যে-ই সুযোগ পায়, সে-ই দাবি করে; কিন্তু শ্রমিক নেতাদের মূল দায়িত্ব হওয়া উচিত শ্রমিকের পক্ষে কাজ করা, ব্যক্তিস্বার্থে নয়।”
তিনি জানান, পূর্বের শ্রম আইন থেকে বর্তমান শ্রম আইনে অনেক ইতিবাচক সংস্কার আনা হয়েছে। ইতোমধ্যে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, কর্মক্ষেত্রে হয়রানি প্রতিরোধ এবং নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ– এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি অনুমোদন করা হয়েছে। এসব বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (EU) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (ILO)-এর সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
উপদেষ্টা আরও বলেন,
“ইউনিয়নগুলোতে গণতান্ত্রিক অনুশীলন জোরদার করতে হবে। কোনো মালিক শ্রমিককে ব্ল্যাকলিস্ট করতে পারবেন না। কেউ করলে মন্ত্রণালয়ে জবাবদিহি করতে হবে।”
মাতৃত্বকালীন ছুটি বৃদ্ধির প্রসঙ্গে তিনি জানান, “আমরা মাতৃত্বকালীন ছুটি বাড়িয়েছি, তবে দেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে তা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।”
অপ্রাতিষ্ঠানিক (ইনফরমাল) খাতের শ্রমিকদের বিষয়ে ড. সাখাওয়াত বলেন, নির্মাণ খাতসহ ইনফরমাল সেক্টরের শ্রমিকদের রেজিস্ট্রেশনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। “বড় নির্মাণ কোম্পানিগুলো রেজিস্টার্ড না থাকলে তাদেরকে সরকারি টেন্ডার না দেওয়ার নীতিমালা প্রণয়নে কাজ চলছে।”
তিনি আরও জানান,
“আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হলো ইনফরমাল সেক্টরের শ্রমিকদের নীতিমালার আওতায় আনা। কিছু অসাধু মালিকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে—তাদের পাসপোর্ট জব্দ ও সম্পত্তি আটক করা হয়েছে। অতীতে মন্ত্রীরাই ছিলেন কারখানার মালিক, তাই সেসব সময় এসব ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হয়নি।”
উপদেষ্টা বলেন, আগে ৪৮ হাজার শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা ছিল, এখন সেগুলো আর নেই। “এই পরিবর্তনই প্রমাণ করে—শ্রমবান্ধব সরকারই প্রকৃত অর্থে শ্রমিকের পক্ষে কাজ করতে পারে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের সভাপতি জিল্লুর রহমান।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)-এর নির্বাহী পরিচালক, শ্রম ও সংস্কার কমিশনের প্রতিনিধি, শ্রমিক ও মালিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
নিজস্ব সংবাদ : 




















