ঢাকা ০৯:৩৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo নিষিদ্ধ পলিথিন, শব্দ ও বায়ুদূষণ রোধে সারাদেশে অভিযান: জরিমানা, কারাদণ্ড ও কারখানা সিলগালা Logo বর্তমান পুলিশ মানবিক ও আগের থেকে সক্রিয়- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা Logo ঈদ-পরবর্তী সৌজন্য সভায় যাত্রী ও পর্যটকদের জন্য অর্থবহ সংস্কারের উপর জোর দেওয়া হয়েছে Logo মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদ-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা Logo মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সংঙ্গে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের ঈদুল আজহা পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় Logo পরিবেশবান্ধব বাঁশের আসবাবপত্রের ব্যবহার বাড়াতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান Logo জাতীয় পতাকা পরিবর্তন হবে না, এটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং Logo কলমাকান্দায় তক্ষক পাচারের সময় ৯ চোরাকারবারি আটক Logo কালিগঞ্জে আইন লঙ্ঘন করে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে ইট পোড়ানোর অভিযোগ Logo সরকারি অর্থে হজে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মালি, চালক গানম্যান ও পিয়ন; নির্দেশনা না মেনে সফরসঙ্গী উপদেষ্টার স্ত্রী ও দুই বোন” এ সংবাদের বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:২৭:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
  • ৫৪৫ বার পড়া হয়েছে

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস প্রতিবছর ২৯ মে তারিখে উদযাপিত হয়। এদিনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সব পুরুষ-নারীকে শান্তি রক্ষার লক্ষ্যে সর্বোৎকৃষ্ট পেশাদারী মনোভাব বজায়, কর্তব্যপরায়ণতা, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাদের আত্মত্যাগের ঘটনাকে গভীর কৃতজ্ঞতা ও যথোচিত সম্মানপূর্বক স্মরণ করা হয়। ২০০৩ সাল থেকে এ দিনটি পালন করা হয়। ২০০৯ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় নারীদের অবদান ও ভূমিকার ওপর সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে। শান্তিরক্ষায় নারীর ভূমিকা ও লিঙ্গ-বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যেই এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রধান কাজ হলো সংঘাত পীড়িত অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা করা। তারা যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ, নিরস্ত্রীকরণ, মানবিক সহায়তা প্রদান, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন তত্ত্বাবধান এবং বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পালন করে। এই বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন দেশের সেনা, পুলিশ ও বেসামরিক ব্যক্তি নিয়ে গঠিত।

বর্তমানে ১১টি সক্রিয় শান্তিরক্ষা মিশনে প্রায় ৬০ হাজার শান্তিরক্ষী কাজ করছেন, যার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম প্রধান অবদানকারী দেশ। কঙ্গো, দক্ষিণ সুদান, লেবাননসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষীরা নিয়োজিত রয়েছেন। চলমান বিশ্ব সংকট, রাজনৈতিক জটিলতা ও নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে শান্তিরক্ষীদের কাজ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। শান্তি প্রতিষ্ঠায় এ বাহিনীর পেশাদারিত্ব, মানবিকতা ও আত্মত্যাগ আজও বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত।বাংলাদেশ ১৯৮৮ সালে প্রথমবার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে। এরপর থেকে দেশটি ধারাবাহিকভাবে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয় রয়েছে। ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত, বাংলাদেশ থেকে মোট ৬ হাজার ৫৯ জন শান্তিরক্ষী বিভিন্ন মিশনে নিযুক্ত ছিলেন, যার মধ্যে ৫ হাজার ৫৮০ জন পুরুষ এবং ৪৭৯ জন নারী সদস্য। বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা দায়িত্ব পালনকালে অসাধারণ সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের নজির স্থাপন করেছেন। আন্তর্জাতিক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ১৩০ থেকে ১৬৫ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী জীবন উৎসর্গ করেছেন। এ ছাড়া, ২৫৭ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের এই আত্মত্যাগ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অঙ্গীকারের প্রতিফলন। শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিতদের কাজ আজ আগের চেয়ে অনেক বেশি জটিল। রাজনৈতিক অস্থিরতা, সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলা, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সীমিত সম্পদের কারণে অনেক সময় শান্তিরক্ষীদের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়।২৯ মে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস কেবল একটি আনুষ্ঠানিক দিন নয়; এটি এক আত্মজিজ্ঞাসার সময়- আমরা শান্তির জন্য কী করছি? বাংলাদেশ এই প্রশ্নে একটি গর্বজনক উত্তর দেয়: আমরা কেবল শান্তির বার্তা দিচ্ছি না, বরং রক্ত, ঘাম ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখছি। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে আমাদের একটাই অঙ্গীকার হওয়া উচিত-শান্তির পথে বাংলাদেশের এই গৌরবময় যাত্রা আরো সুদৃঢ় করা।

লেখকঃ কবির নেওয়াজ রাজ
এমএসএস” রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সিসি” জার্নালিজম, এলএলবি।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

নিষিদ্ধ পলিথিন, শব্দ ও বায়ুদূষণ রোধে সারাদেশে অভিযান: জরিমানা, কারাদণ্ড ও কারখানা সিলগালা

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস

আপডেট সময় ০৪:২৭:১১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫

আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস প্রতিবছর ২৯ মে তারিখে উদযাপিত হয়। এদিনে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী সব পুরুষ-নারীকে শান্তি রক্ষার লক্ষ্যে সর্বোৎকৃষ্ট পেশাদারী মনোভাব বজায়, কর্তব্যপরায়ণতা, নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে তাদের আত্মত্যাগের ঘটনাকে গভীর কৃতজ্ঞতা ও যথোচিত সম্মানপূর্বক স্মরণ করা হয়। ২০০৩ সাল থেকে এ দিনটি পালন করা হয়। ২০০৯ সালে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় নারীদের অবদান ও ভূমিকার ওপর সবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে। শান্তিরক্ষায় নারীর ভূমিকা ও লিঙ্গ-বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যেই এ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রধান কাজ হলো সংঘাত পীড়িত অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও রক্ষা করা। তারা যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ, নিরস্ত্রীকরণ, মানবিক সহায়তা প্রদান, শান্তিপূর্ণ নির্বাচন তত্ত্বাবধান এবং বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব পালন করে। এই বাহিনীর সদস্যরা বিভিন্ন দেশের সেনা, পুলিশ ও বেসামরিক ব্যক্তি নিয়ে গঠিত।

বর্তমানে ১১টি সক্রিয় শান্তিরক্ষা মিশনে প্রায় ৬০ হাজার শান্তিরক্ষী কাজ করছেন, যার মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম প্রধান অবদানকারী দেশ। কঙ্গো, দক্ষিণ সুদান, লেবাননসহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে শান্তিরক্ষীরা নিয়োজিত রয়েছেন। চলমান বিশ্ব সংকট, রাজনৈতিক জটিলতা ও নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে শান্তিরক্ষীদের কাজ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং। শান্তি প্রতিষ্ঠায় এ বাহিনীর পেশাদারিত্ব, মানবিকতা ও আত্মত্যাগ আজও বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত।বাংলাদেশ ১৯৮৮ সালে প্রথমবার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে অংশগ্রহণ করে। এরপর থেকে দেশটি ধারাবাহিকভাবে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সক্রিয় রয়েছে। ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত, বাংলাদেশ থেকে মোট ৬ হাজার ৫৯ জন শান্তিরক্ষী বিভিন্ন মিশনে নিযুক্ত ছিলেন, যার মধ্যে ৫ হাজার ৫৮০ জন পুরুষ এবং ৪৭৯ জন নারী সদস্য। বর্তমানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীর সদস্যরা আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন শান্তিরক্ষা মিশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।

বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীরা দায়িত্ব পালনকালে অসাধারণ সাহসিকতা ও আত্মত্যাগের নজির স্থাপন করেছেন। আন্তর্জাতিক ও জাতিসংঘের বিভিন্ন সূত্র অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ১৩০ থেকে ১৬৫ জন বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী জীবন উৎসর্গ করেছেন। এ ছাড়া, ২৫৭ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাদের এই আত্মত্যাগ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের অঙ্গীকারের প্রতিফলন। শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিতদের কাজ আজ আগের চেয়ে অনেক বেশি জটিল। রাজনৈতিক অস্থিরতা, সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলা, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও সীমিত সম্পদের কারণে অনেক সময় শান্তিরক্ষীদের কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়।২৯ মে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস কেবল একটি আনুষ্ঠানিক দিন নয়; এটি এক আত্মজিজ্ঞাসার সময়- আমরা শান্তির জন্য কী করছি? বাংলাদেশ এই প্রশ্নে একটি গর্বজনক উত্তর দেয়: আমরা কেবল শান্তির বার্তা দিচ্ছি না, বরং রক্ত, ঘাম ও আত্মত্যাগের মাধ্যমে বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠায় সক্রিয়ভাবে ভূমিকা রাখছি। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে আমাদের একটাই অঙ্গীকার হওয়া উচিত-শান্তির পথে বাংলাদেশের এই গৌরবময় যাত্রা আরো সুদৃঢ় করা।

লেখকঃ কবির নেওয়াজ রাজ
এমএসএস” রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সিসি” জার্নালিজম, এলএলবি।