ঢাকা ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
Logo সাংবাদিক সাইদুর রহমান রিমনের মৃত্যুতে কবির নেওয়াজ রাজ গভীর শোকাহত Logo কৃষি উপদেষ্টার সাথে চীনা রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ Logo বেপজা অর্থনৈতিক অঞ্চলে ৪১.৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের জন্য বেপজার সাথে একটি জমি ইজারা চুক্তি স্বাক্ষর করেছে Logo নদী দূষণের দায়ে গাজীপুরে ৯টি অবৈধ কারখানার বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন। Logo প্রত্যাহার করা হলো ১০২ জন ভূমি কমিশনার কে Logo অ্যামেচার রেডিও কার্যক্রমকে আরো সংগঠিত করার আহ্বান Logo এলডিসি থেকে উত্তরণ বিষয়ক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত Logo পার্বত্য তিন জেলায় ‘জুলাই পুনর্জাগরণ, জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও তারুণ্যের উৎসব-২০২৫’ উদযাপিত Logo গণপূর্ত অধিদপ্তরের ০৫ জন প্রকৌশলী ও স্হাপত্য অধিদপ্তরের ০১ জন স্থপতিকে বিনা অনুমতিতে কর্মস্হলে অনুপস্হিত থাকায় ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগে চাকুরী থেকে বরখাস্ত হয়েছে Logo ০৫ আগস্ট ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা শঙ্কা নেই- স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

জনমুখী ও কার্যকর সেবা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে আন্ত:ক্যাডার বৈষম্য দূর করতে হবে

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:০৯:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫
  • ৬০২ বার পড়া হয়েছে

জনবান্ধব ও কার্যকর সেবা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সকল ক্যাডারের মধ্যে সমতা আনতে হবে, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, সুসম্পর্ক ও ন্যায্যতা নিশ্চিতে আন্ত:ক্যাডার বৈষম্য দূর করতে হবে। পাশাপাশি, মন্ত্রণালয়গুলোতে উপসচিব পুলে যাওয়া সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন করতে হবে। পদ ছাড়া পদোন্নতি হয় বন্ধ করতে হবে, নতুবা সকল ক্যাডারের জন্য একই নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।

আজ আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের উদ্যোগে রাজধানীর খামারবাড়িস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রত্যাশিত সিভিল সার্ভিস’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সভায় সিভিল সার্ভিস সংস্কারের মাধ্যমে জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, কার্যকর জনসেবা নিশ্চিত করতে কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে অর্থাৎ প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে স্ব-স্ব ক্যাডারের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মকর্তারা পদায়িত হবেন। তারা বলেন, স্ব স্ব মন্ত্রণালয়/বিভাগে পদায়িত না করে বর্তমানে কৃষি ক্যাডার থেকে উপসচিব পুলে যাওয়া কর্মকর্তাকে নৌপরিবহনে, শিক্ষা থেকে যাওয়া কর্মকর্তাকে পানিসম্পদে, স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তাকে তথ্য মন্ত্রণালয়ে পদায়িত করে দুর্নাম করা হচ্ছে যে তারা কর্মদক্ষ নন। এর ফলে পুলের মূল উদ্দেশ্য ব্যর্থ হচ্ছে, জাতি অভিজ্ঞ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা আরও বলেন, সকল সেক্টরে একটি ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণ থাকায় সার্ভিসে পেশাদারিত্ব মারাত্বকভাবে ব্যহত হচ্ছে এবং সৃষ্ট আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অব্যবস্থাপনার ফলে সেক্টরগুলো কাঙ্ক্ষিত জনসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না। বৈষম্যহীন জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তার দ্বারা পরিচালনা এবং কোটামুক্ত মেধাভিত্তিক উপসচিব পুল অত্যন্ত জরুরি বলে বক্তারা মত ব্যক্ত করেন।

আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট জনাব ফিরোজ আহমেদ, প্রফেসর নাসরিন বেগম, কৃষিবিদ আহমেদ আলী চৌধুরী ইকবাল, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ড. শাহজাহান সাজু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এসসিবিএ সংবিধান সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মামুন মাহবুব, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহবুবুর রহমান,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদেকুর রহমান সানি।

বক্তারা আরও বলেন, বিরাজমান প্রশাসনিক অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে ২৫ ক্যাডারের প্রায় সকল শীর্ষ পদে সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রদায়ন নেই। এতে, সংশ্লিষ্ট ক্যাডার কর্মকর্তারা কাজের স্পৃহা হারিয়ে ফেলছেন। ফলে জনগণ তাদের কাঙ্খিত সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। তারা বলেন, দক্ষ, পেশাদার ও গতিশীল সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যথাসময়ে পদোন্নতিসহ সকল ক্যাডারের মধ্যে সমতার প্রয়োজন রয়েছে। একই দেশে একটি ক্যাডারের কর্মকর্তা পদ না থাকা সত্ত্বেও প্রমোশন পাবে, আর অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদ থাকা সত্ত্বেও প্রমোশন পাবে না, এটা কোন আধুনিক প্রশাসন ব্যবস্থা হতে পারে না। এটা প্রশাসন ক্যাডারের ইচ্ছাকৃত সৃষ্ট জটিলতা ও উপনিবেশিক মনোভাব বলে মনে করেন ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা। সেজন্য এ অনিয়ম দূর করতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান হয়।

বক্তারা আরও বলেন, ২৫ ক্যাডার সরকারকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ সকল ক্ষেত্রের উন্নয়নে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নে ব্যাপক অবদানের পরেও এ সকল ক্যাডারের কর্মকর্তারা বঞ্চিত। এই বঞ্চনা দূর করতে বৈষম্য বিরোধী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনসমূহের মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই, রাষ্ট্র ও জনকল্যাণে কমিশন একটি আধুনিক সেবামূলক সিভিল সার্ভিস গঠনে প্রয়োজনীয় প্রস্তাব পেশ করবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, সিনিয়র সার্ভিস পুল (উপসচিব পুল) এর পদসমূহ কোনো নির্দিষ্ট ক্যাডারের নয়। Senior Services Pool (SSP) Order, 1979 অনুযায়ী মেধার ভিত্তিতে এ সকল পদে নিয়োগের কথা থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে কোটা পদ্ধতি চালু রেখেছে প্রশাসন ক্যাডার, যা মেধাভিত্তিক জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রগঠনে মারাত্মক অন্তরায়। প্রশাসন ক্যাডারের কিছু কর্মকর্তা গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ভুল/আংশিক/রঞ্জিত তথ্য সম্বলিত প্রবন্ধ/ নিবন্ধ লিখে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলেও কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন। তারা বলেন, একটা ক্যাডারের বিরুদ্ধে যখন অবশিষ্ট সকল ক্যাডারের কর্মকর্তারা এক হয়ে অভিযোগ করেন, বঞ্চনা ও অধিকার হরণের কথা বলেন, তখন তা যে গুরুতর, সেটা সরকারকে অনুধাবন করতে হবে।

সভায় বক্তারা বলেন, প্রশাসনের সকল স্তরে অনিয়ম, কোটাবৈষম্য, অসমতা দূর করে একটি গতিশীল জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়তে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। কোটা বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় করে গঠিত হয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাই সকল ধরনের কোটা বিলোপের মাধ্যমে মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন গড়তে তুলতে হবে।

সেমিনার আয়োজন কমিটির আহবায়ক ড. মুহাম্মদ আহসান হাবিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন । আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সহ-সমন্বয়ক ডা. মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন ও তাহসীন তাবাসসুম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫ টি ক্যাডার এসোসিয়েশনের সভাপতি, সেক্রেটারি, সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

সাংবাদিক সাইদুর রহমান রিমনের মৃত্যুতে কবির নেওয়াজ রাজ গভীর শোকাহত

জনমুখী ও কার্যকর সেবা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে আন্ত:ক্যাডার বৈষম্য দূর করতে হবে

আপডেট সময় ০২:০৯:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫

জনবান্ধব ও কার্যকর সেবা ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে সকল ক্যাডারের মধ্যে সমতা আনতে হবে, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ, সুসম্পর্ক ও ন্যায্যতা নিশ্চিতে আন্ত:ক্যাডার বৈষম্য দূর করতে হবে। পাশাপাশি, মন্ত্রণালয়গুলোতে উপসচিব পুলে যাওয়া সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের পদায়ন করতে হবে। পদ ছাড়া পদোন্নতি হয় বন্ধ করতে হবে, নতুবা সকল ক্যাডারের জন্য একই নীতি বাস্তবায়ন করতে হবে।

আজ আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের উদ্যোগে রাজধানীর খামারবাড়িস্থ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) মিলনায়তনে ‘জন-আকাঙ্ক্ষা পূরণে প্রত্যাশিত সিভিল সার্ভিস’ শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। সভায় সিভিল সার্ভিস সংস্কারের মাধ্যমে জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে করণীয় বিষয়ে আলোচনা করা হয়।

সেমিনারে বক্তারা বলেন, কার্যকর জনসেবা নিশ্চিত করতে কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে অর্থাৎ প্রতিটি মন্ত্রণালয়ে স্ব-স্ব ক্যাডারের অভিজ্ঞ ও দক্ষ কর্মকর্তারা পদায়িত হবেন। তারা বলেন, স্ব স্ব মন্ত্রণালয়/বিভাগে পদায়িত না করে বর্তমানে কৃষি ক্যাডার থেকে উপসচিব পুলে যাওয়া কর্মকর্তাকে নৌপরিবহনে, শিক্ষা থেকে যাওয়া কর্মকর্তাকে পানিসম্পদে, স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তাকে তথ্য মন্ত্রণালয়ে পদায়িত করে দুর্নাম করা হচ্ছে যে তারা কর্মদক্ষ নন। এর ফলে পুলের মূল উদ্দেশ্য ব্যর্থ হচ্ছে, জাতি অভিজ্ঞ সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তারা আরও বলেন, সকল সেক্টরে একটি ক্যাডারের নিয়ন্ত্রণ থাকায় সার্ভিসে পেশাদারিত্ব মারাত্বকভাবে ব্যহত হচ্ছে এবং সৃষ্ট আমলাতান্ত্রিক জটিলতা ও অব্যবস্থাপনার ফলে সেক্টরগুলো কাঙ্ক্ষিত জনসেবা নিশ্চিত করতে পারছে না। বৈষম্যহীন জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্র গঠনে প্রত্যেকটি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তার দ্বারা পরিচালনা এবং কোটামুক্ত মেধাভিত্তিক উপসচিব পুল অত্যন্ত জরুরি বলে বক্তারা মত ব্যক্ত করেন।

আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, বিশিষ্ট লেখক ও কলামিস্ট জনাব ফিরোজ আহমেদ, প্রফেসর নাসরিন বেগম, কৃষিবিদ আহমেদ আলী চৌধুরী ইকবাল, অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র জেলা জজ ড. শাহজাহান সাজু, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, এসসিবিএ সংবিধান সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মামুন মাহবুব, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক কাজী মাহবুবুর রহমান,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদেকুর রহমান সানি।

বক্তারা আরও বলেন, বিরাজমান প্রশাসনিক অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে ২৫ ক্যাডারের প্রায় সকল শীর্ষ পদে সংশ্লিষ্ট ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রদায়ন নেই। এতে, সংশ্লিষ্ট ক্যাডার কর্মকর্তারা কাজের স্পৃহা হারিয়ে ফেলছেন। ফলে জনগণ তাদের কাঙ্খিত সেবা হতে বঞ্চিত হচ্ছেন। তারা বলেন, দক্ষ, পেশাদার ও গতিশীল সিভিল সার্ভিস ব্যবস্থা গড়ে তুলতে যথাসময়ে পদোন্নতিসহ সকল ক্যাডারের মধ্যে সমতার প্রয়োজন রয়েছে। একই দেশে একটি ক্যাডারের কর্মকর্তা পদ না থাকা সত্ত্বেও প্রমোশন পাবে, আর অন্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা পদ থাকা সত্ত্বেও প্রমোশন পাবে না, এটা কোন আধুনিক প্রশাসন ব্যবস্থা হতে পারে না। এটা প্রশাসন ক্যাডারের ইচ্ছাকৃত সৃষ্ট জটিলতা ও উপনিবেশিক মনোভাব বলে মনে করেন ২৫ ক্যাডারের কর্মকর্তারা। সেজন্য এ অনিয়ম দূর করতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানান হয়।

বক্তারা আরও বলেন, ২৫ ক্যাডার সরকারকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষিসহ সকল ক্ষেত্রের উন্নয়নে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করে যাচ্ছে। দেশের উন্নয়নে ব্যাপক অবদানের পরেও এ সকল ক্যাডারের কর্মকর্তারা বঞ্চিত। এই বঞ্চনা দূর করতে বৈষম্য বিরোধী অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে গঠিত সংস্কার কমিশনসমূহের মধ্যে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই, রাষ্ট্র ও জনকল্যাণে কমিশন একটি আধুনিক সেবামূলক সিভিল সার্ভিস গঠনে প্রয়োজনীয় প্রস্তাব পেশ করবে বলে বক্তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, সিনিয়র সার্ভিস পুল (উপসচিব পুল) এর পদসমূহ কোনো নির্দিষ্ট ক্যাডারের নয়। Senior Services Pool (SSP) Order, 1979 অনুযায়ী মেধার ভিত্তিতে এ সকল পদে নিয়োগের কথা থাকলেও বিভিন্ন অজুহাতে কোটা পদ্ধতি চালু রেখেছে প্রশাসন ক্যাডার, যা মেধাভিত্তিক জনকল্যাণমূলক রাষ্ট্রগঠনে মারাত্মক অন্তরায়। প্রশাসন ক্যাডারের কিছু কর্মকর্তা গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে ভুল/আংশিক/রঞ্জিত তথ্য সম্বলিত প্রবন্ধ/ নিবন্ধ লিখে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে বলেও কর্মকর্তারা অভিযোগ করেন। তারা বলেন, একটা ক্যাডারের বিরুদ্ধে যখন অবশিষ্ট সকল ক্যাডারের কর্মকর্তারা এক হয়ে অভিযোগ করেন, বঞ্চনা ও অধিকার হরণের কথা বলেন, তখন তা যে গুরুতর, সেটা সরকারকে অনুধাবন করতে হবে।

সভায় বক্তারা বলেন, প্রশাসনের সকল স্তরে অনিয়ম, কোটাবৈষম্য, অসমতা দূর করে একটি গতিশীল জনপ্রশাসন ব্যবস্থা গড়তে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। কোটা বিরোধী আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারকে বিদায় করে গঠিত হয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাই সকল ধরনের কোটা বিলোপের মাধ্যমে মেধাভিত্তিক জনপ্রশাসন গড়তে তুলতে হবে।

সেমিনার আয়োজন কমিটির আহবায়ক ড. মুহাম্মদ আহসান হাবিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন । আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সহ-সমন্বয়ক ডা. মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন ও তাহসীন তাবাসসুম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে পরিষদের অন্তর্ভুক্ত ২৫ টি ক্যাডার এসোসিয়েশনের সভাপতি, সেক্রেটারি, সিনিয়র নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।