
অনলাইন ডেক্স : দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিট হতে আজ ৪টি অভিযোগের বিষয়ে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়
👉 অভিযান ০১:
পল্লবী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুসের বিনিময়ে জমির শ্রেণি পরিবর্তনপূর্বক দলিল রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে সরকারের রাজস্ব ক্ষতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয় হতে একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। টিম অভিযোগে বর্ণিত বাউনিয়া মৌজায় ১০ শতাংশ জমির রেজিস্ট্রেশন দলিল, খতিয়ান, দাখিলা ও সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র সংগ্রহ করে। পর্যালোচনায় দেখা যায়, জমিটি ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর তারিখে রেজিস্ট্রেশন করা হয়, যা খতিয়ান অনুযায়ী পুকুর শ্রেণিভুক্ত হলেও খাজনা রশিদে বাণিজ্যিক শ্রেণিভুক্ত দেখানো হয়েছে। একই জমি ২০১২ সালে পুকুর (বাণিজ্যিক) শ্রেণিতে রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল। হঠাৎ শ্রেণি পরিবর্তনের বিষয়টি অস্বাভাবিক মর্মে টিমের নিকট প্রতীয়মান হয়েছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস থেকে প্রয়োজনীয় রেকর্ডপত্র সংগ্রহ ও যাচাইপূর্বক কমিশনের নিকট বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
👉 অভিযান ০২:
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে ওয়াকিটকি ক্রয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয় হতে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালিত হয়। অভিযোগ পর্যালোচনায় প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী পর্যাপ্ত অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও একটি দেশীয় কোম্পানিকে কাজ দেওয়া হয়েছে, যেখানে ওই কোম্পানি একটি চীনা প্রতিষ্ঠানের সনদ ব্যবহার করেছে। এনফোর্সমেন্ট টিম এ প্রসঙ্গে প্রধান প্রকৌশলী, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও নির্বাহী প্রকৌশলীদের সাথে কথা বলে এবং গুরুত্বপূর্ণ রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। প্রাথমিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএনসিসির ক্রয়কৃত ওয়াকিটকির দাম অন্যান্য সরকারি সংস্থার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। বিস্তারিত যাচাইয়ের উদ্দেশ্যে প্রকিউরমেন্ট সংক্রান্ত সকল রেকর্ডপত্র চাওয়া হয়েছে। রেকর্ডপত্রসমূহ পর্যালোচনা শেষে টিম কর্তৃক কমিশন বরাবর বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।
👉অভিযান ০৩:
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লোন শাখার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লোনের কিস্তির টাকা ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাতের অভিযোগের প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, পটুয়াখালী হতে অপর একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনাকালে এনফোর্সমেন্ট টিম সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভুক্তভোগী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে কথা বলে এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট হতে কিছু রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করে। প্রাপ্ত তথ্য ও নথিপত্র বিশ্লেষণে অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ সরকারি অর্থ আত্মসাত করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। অভিযানকালে এনফোর্সমেন্ট টিম কর্তৃক কিছু ভুয়া পেমেন্ট স্লিপ সংগ্রহ করা হয় এবং বাকি ভুয়া স্লিপসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য রেকর্ডপত্র প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়। সকল নথিপত্র প্রাপ্তিসাপেক্ষে অভিযোগ সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন কমিশন বরাবর দাখিল করা হবে।
*👉 অভিযান ০৪:*
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতাল, হবিগঞ্জ -এ চিকিৎসাসেবা প্রদানে হয়রানি ও অনিয়মের অভিযোগের প্রেক্ষিতে অদ্য দুর্নীতি দমন কমিশন, সমন্বিত জেলা কার্যালয়, হবিগঞ্জ কর্তৃক একটি এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান পরিচালনাকালে হাসপাতালের বহি:বিভাগ, জরুরি বিভাগ, সার্জারি বিভাগসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড এবং রোগীদের খাবারের মান পরিদর্শন করা হয়। রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা ও রোগীদের সাথে আলাপচারিতায় প্রতীয়মান হয় যে, বর্ণিত হাসপাতালে অব্যবস্থাপনা প্রকট। ২৫০ শয্যার বিপরীতে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে ৫৭৬ জন রোগী; ফলে বহু রোগীকে মেঝে ও বারান্দায় ভর্তি থাকতে হচ্ছে। রোগীর তুলনায় চিকিৎসকের সংকটও অত্যন্ত দৃশ্যমান। এছাড়া, হাসপাতালের ওয়াশরুমগুলো অপরিচ্ছন্ন এবং ভর্তি রোগীদের সকলকে নিয়মিত খাবার সরবরাহ করা হয় না মর্মে টিম পরিলক্ষিত করে। প্রতিদিন গড়ে ৫০০ -এর অধিক রোগী ভর্তি থাকলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ ২৫০ জন রোগীকে খাবার সরবরাহ করে মর্মে তথ্য পাওয়া যায়। অভিযানকালে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে জরুরি বিভাগে ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসক কর্তব্যরত রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা, হাসপাতালের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও খাবারের মান উন্নত করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ প্রদান করে এনফোর্সমেন্ট টিম। অভিযানকালে প্রাপ্ত তথ্যাবলির প্রেক্ষিতে টিম কমিশন বরাবর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে।